বাংলাদেশ পুলিশের চার ডিআইজিকে বাধ্যতামূলক অবসর
নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ধারা অনুযায়ী পুলিশের চার উপ-মহাপরিদর্শককে (ডিআইজি) বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি স্বাক্ষরিত পৃথক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়।
অবসরে পাঠানো কর্মকর্তারা হলেন—অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের ডিআইজি মো. নিশারুল আরিফ, নৌ পুলিশের ডিআইজি মো. আব্দুল কুদ্দুছ আমিন, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি মো. আজাদ মিয়া এবং আমেনা বেগম।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪৫ ধারার বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে এই চার কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে, তারা বিধি অনুযায়ী অবসরজনিত সব সুবিধা পাবেন। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, জনস্বার্থে জারি করা এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে প্রায় ৪০ জন কর্মকর্তাকে এভাবে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অবসরে পাঠানো কর্মকর্তাদের মধ্যে আমেনা বেগম ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় নরসিংদীর পুলিশ সুপার (এসপি) ছিলেন। নিশারুল আরিফ রাজশাহীর ডিআইজি ও সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় আজাদ মিয়া কক্সবাজারে এবং আব্দুল কুদ্দুছ আমিন গোপালগঞ্জের এসপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তর আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে। অবসরে পাঠানো কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো গুরুতর অভিযোগ আছে কি না, তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিক সংস্কারের অংশ হিসেবে দেখা যেতে পারে। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মতবিরোধও রয়েছে। কিছু মহল মনে করছেন, সরকারের নীতিগত অবস্থানের কারণে এসব কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ বাহিনীতে শূন্য পদগুলো পূরণে নতুন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। তবে সূত্রমতে, শিগগিরই নতুন ডিআইজি নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।
সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এটি স্পষ্ট যে, জনস্বার্থে নেওয়া এমন সিদ্ধান্তগুলো দীর্ঘমেয়াদে প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনাকে প্রভাবিত করতে পারে।