মোঃ নজরুল ইসলাম মিয়া, গোয়ালন্দ, থেকে ফিরে : ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য ইউরোপে যেতে চেয়েছিলেন জাহাঙ্গীর হোসেন। কিন্তু প্রতারণার শিকার হয়ে তিনি ছিলেন ভারতে; চেন্নাই শহরে কয়েক মাস মুরগির খামারে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। দেশের ফেরার সময় সেখাকার খামারি তাঁকে দুই জোড়া বিদেশি জাতের মোরগ–মুরগি উপহার দেন।

জাহাঙ্গীর হোসেন প্রথমে শখের বশে বাড়িতে মুরগি পালন শুরু করেন। পরে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তোলেন খামার, যেখানে বেশির ভাগই বিদেশি জাতের মুরগি। এর নাম দিয়েছেন ‘কালুখালী ফ্যান্সি মুরগির খামার’। খামারে নতুন করে যোগ হয়েছে ময়ূর, বিদেশি দামি হাঁস ও পাখি। খামার থেকে মাসে তাঁর আয় ৫০–৬০ হাজার টাকা।

রাজবাড়ী কালুখালী উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের বড় বাংলাট গ্রামে জাহাঙ্গীর হোসেনের (৩৮) বাড়ি। তিনি ওই গ্রামের আমির হোসেন ও জাহিদা বেগম দম্পতির ছেলে। দুই ভাইবোনের মধ্যে জাহাঙ্গীর ছোট। তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে আছে।

আর্থিক অনাটনে কলেজের পড়ালেখা শেষ করতে পারেননি জাহাঙ্গীর হোসেন। ২০০৮ সালে তিনি মালদ্বীপে যান। তবে সেখানে তিনি তেমন সুবিধা করতে পারেননি। ২০১১ সালের জুনের দিকে দেশে ফেরেন জাহাঙ্গীর। ইউরোপের কোনো একটি দেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি; দালাল চক্রকে দেন প্রায় ছয় লাখ টাকা। কিন্তু দালাল চক্র তাঁকে ভারতের চেন্নাই শহরে নিয়ে ছেড়ে দেয়।

জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘২০১১ সালের জুলাই মাসে চেন্নাই শহরে গিয়ে পৌঁছাই। উপায় না পেয়ে সেখানে মুরগির খামারে কাজ শুরু করি। বিভিন্ন জাতের বিদেশি মুরগি দেখে ভালো লেগে যায়। প্রায় এক বছর পর সেখান থেকে দেশে ফিরে আসি। সেখান থেকে উপহার হিসেবে দুই জোড়া বিদেশি চায়নার সিল্কি ও কলম্বিয়ার ব্রাহামা জাতের মুরগি পেয়েছিলাম। দেশে ফিরে কিছুদিন সেগুলো লালন–পালন করি। এরপর সিদ্ধান্ত নিই আর বিদেশে যাব না; দেশেই বিদেশি মুরগির খামার গড়ে তুলব।’

জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ছোটবেলা থেকে পশু-পাখির প্রতি আলাদা ভালো লাগা কাজ করে। ২০০৬ সালের শেষের দিকে যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে মুরগি পালনের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। বিদেশি মুরগি পালনের ক্ষেত্রে সেই প্রশিক্ষণ অনেক কাজে লেগেছে।