আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রুশ বাহিনী ইউক্রেনের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন বিদ্যুৎ অবকাঠামো লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির জ্বালানি মন্ত্রী জার্মান ভ্যালেরিওভিচ গালুশচেঙ্কো। এতে ১০ লাখের বেশি ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরুর পর ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে এটিই রাশিয়ার সবচেয়ে বড় হামলা।

২২ মার্চ, শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বার্তা সংস্থা এপি এ খবর জানিয়েছে।

গালুশচেঙ্কো জানিয়েছেন, রাতব্যাপী ড্রোন ও রকেট হামলা করেছে রুশ বাহিনী। সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের জ্বালানি খাতে এটিই বড় হামলা। তিনি আরও বলেন, শুধু ক্ষতি করা নয়, দেশের জ্বালানি ব্যবস্থায় বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটানোই রাশিয়ার লক্ষ। তারা গত বছরের মতো আবার হামলা শুরু করেছে।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছে, শুক্রবার (২২ মার্চ) সকালের হামলায় ৬০টিরও বেশি ড্রোন এবং ৯০টি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়া। এ হামলায় লক্ষ্য করা হয় বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা, হাইড্রোইলেকট্রিক বাঁধ এবং আবাসিক ভবন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিপার জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। তবে বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি নেই।

রুশ বাহিনীর এই হামলার কারণে ডিনিপ্রো হাইড্রোইলেকট্রিক স্টেশনে আগুন লেগেছে। এটি ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তি ইনস্টলেশন জাপোরিজ্জিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রসি শুক্রবার ভোরে বলেন, ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৭৫০ কিলোভোল্টের প্রধান পাওয়ার লাইনটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শুধু একটি কম-পাওয়ার ব্যাকআপ লাইন কাজ করছে।

ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় হাইড্রোপাওয়ার সংস্থা জানায়, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে দেশের সবচেয়ে বড় ড্যামে। যা জারোরিজ্জিয়াতে অবস্থিত। তবে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানলেও ড্যামটিতে কোনো ফাটলের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে সংকারি প্রতিষ্ঠানটি।

রাশিয়ার হামলায় পূর্ব খারকিভ অঞ্চলের প্রায় সাত লাখ, দক্ষিণ ওডেসা ও দক্ষিণ-পূর্ব ডিনিপ্রো-পেট্রোভস্ক অঞ্চলে কমপক্ষে দুই লাখ বাসিন্দা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন। বিদ্যুৎহীন আছেন পোলতাভা অঞ্চলে আরও এক লাখ ১০ হাজার মানুষ। হামলায় অন্তত দুইজন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছে ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ।

এরআগে রাতে রাশিয়ার ১৫১টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনের মধ্যে ৯২টি ভূ-পাতিত করে ইউক্রেন সেনারা। ইউক্রেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, রাশিয়ার এসব হামলা প্রতিহত করতে আরও উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন।

সূত্র: আল জাজিরা