খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, যশোর | তারিখঃ অক্টোবর ৩১, ২০২৩ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 1580 বার
আশিকুল ইসলাম, ঝিকরগাছা প্রতিনিধি : সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত সাধারণ স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সরকারি অনুদানের টাকা পেল ঝিকরগাছা উপজেলা দুই নামসর্বস্ব ভুঁইফোড় সংগঠন। এছাড়াও উপজেলায় একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কার্যক্রম চলমান থাকা সত্ত্বেও প্রতি বছর কয়েকটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে টাকা দেয়ার অভিযোগও আছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ঝিকরগাছা উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উন্নয়নে আর্থিক অনুদানের জন্য আবেদন করে ১৪টি সংগঠন। এর মধ্যে আটটি সংগঠনের জন্য বিশ হাজার টাকা করে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। বরাদ্দ প্রাপ্ত আটটি সংগঠনের মধ্যে অন্তত দুটি সংগঠনের বিগত কয়েক বছর কোন কার্যক্রম নেই। সংগঠন দুটি হলো গ্রাম বাংলা উন্নয়ন সংস্থা এবং রুরাল পোর্ভাটিং রিমুভ অর্গানাইজেশন। নিবন্ধনের সময় নিবন্ধন কর্তৃপক্ষকে দেওয়া ঠিকানায় এদের কোন অফিসও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
যশোর জেলা সমাজসেবা কার্যালয় হতে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২৫ নং সিরিয়ালে বেনেয়ালি, গদখালি, ঝিকরগাছার ঠিকানায় ১৫৬৮ নং নিবন্ধনে গ্রাম বাংলা উন্নয়ন সংস্থার নামে ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তালিকায় প্রাপ্ত ফোন নম্বরে ফোন দিলে নিজেকে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে রায়হান নামের এক ব্যক্তি জানান, তার ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়নের ছুটিপুর বাজারে সেবা পণ্য নামে একটি দোকানে সংগঠনের অফিস আছে।
সরজমিন সেখানে গিয়ে উক্ত দোকানে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। রায়হান বলেন, বেনেয়ালি একজনের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকায় এই নিবন্ধন সনদটি তিনি কিনেছেন এজন্যই যে, এই সনদ দেখিয়ে বাইরে থেকে অনুদান এনে দেশে কাজ করবেন। দীর্ঘদিন ধরে এই সংগঠনের কোনো কার্যক্রম বা কার্যালয় নেই বলেও তিনি স্বীকার করেন।
২৬ নং সিরিয়ালে ছুটিপুর, ঝিকরগাছা ঠিকানায় ৪৭০ নং নিবন্ধনে রুরাল পোর্ভাটিং রিমুভ অর্গানাইজেশনের নামে ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ছুটিপুর বাজারে এই নামে কোনো সংগঠনের কার্যক্রম বা কার্যালয় পাওয়া যায়নি। তালিকায় প্রাপ্ত ফোন নম্বরে ফোন দিলে অপরপ্রান্তে ব্যক্তি বলেন তার নাম সুব্রত সুন্দর দাস। তিনি এই সংগঠনের পরিচালক হিসেবে নিজেকে দাবি করেন। কার্যালয় কোথায় এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন সংগঠনের কোনো কার্যক্রম নেই। বাড়ির স্টোররুমে কাগজপত্র আছে। তার বাড়ির ঠিকানা জিজ্ঞেস করলে ব্যস্ততার কথা বলে ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।
ভুঁইফোঁড় সংগঠনের অনুদান প্রাপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিকরগাছা উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দীন বলেন, গতবছর ১৪টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অনুদান প্রাপ্তির জন্য আবেদন করেছিলো। আমরা সবগুলো আবেদন যশোরে পাঠিয়েছিলাম। সেখান থেকে যাদের মনোনীত করা হয়েছে তারাই টাকা পেয়েছেন। লোক বলের অভাবে সব প্রতিষ্ঠান যাচাই করা সম্ভব হয়নি এবং পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই করে জেলায় আবেদন পাঠানো হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে যশোর জেলা সমাজ সেবা অফিসের উপ-পরিচালক অসিত কুমার সাহার ব্যক্তিগত মোবাইল নং-এ একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি সেটা রিসিভ করেননি এবং মেসেজ দেয়া হলেও তার উত্তর না দেওয়ায় এই বিষয়ে তার বক্তব্য জানা যায় নি।