০৯:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ পোড়ার ঘটনায় দায়িত্বরতদের অবহেলা পেলে ব্যবস্থা: র‍্যাব ডিজি

নিউজ ডেস্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় চারুকলায় নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি ছিল কিনা তা অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান। যদি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকাদের কোনো অবহেলা পাওয়া যায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

রবিবার সকালে রমনা বটমূলে ‘বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনে র‌্যাবের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।

চারুকলায় ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ পুড়ে যাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব ডিজি বলেন, “যে ঘটনাটি ঘটেছে তার তদন্ত হবে। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আমরা এও খতিয়ে দেখছি যে, এখানে আমাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের কোনো ঘাটতি ছিল কিনা সেটা অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে। যদি সেরকম কিছু পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পহেলা বৈশাখের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, “পহেলা বৈশাখে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‍্যাব কর্তৃক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নববর্ষ আমাদের জাতীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা এই অনুষ্ঠানটি উৎসাহ উদ্দীপনায় আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করব। এজন্য র‌্যাব ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমাদের মোটরসাইকেল পেট্রোল, গাড়ি পেট্রোল, চেকপোস্ট, অবজারভেশন টাওয়ার এবং গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে৷ আমরা অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রেখে এই অনুষ্ঠানটি যাতে সুন্দরভাবে করা যায় তার সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।”

তিনি আরো বলেন, “এই অনুষ্ঠান আজকে থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি ব্যান্ড শো আছে আজকে। কাল সকাল থেকে ঢাকা শহরে বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠান হবে। মূল অনুষ্ঠান থাকবে রমনা বটমূলে। এরপর চারুকলা কর্তৃক আনন্দ শোভাযাত্রা করা হবে। রবীন্দ্র সরোবরে দিনব্যাপী অনুষ্ঠান আছে। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠান আছে। এছাড়া ঢাকা শহরে বিভিন্ন জায়গায় এই অনুষ্ঠান উদযাপিত হবে। আমরা সর্বপ্রকার নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি এবং আশা করি এই অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে আমরা সক্ষম হব।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা সাইবার ওয়ার্ল্ডেও মনিটরিং করছি, যাতে সাইবার ওয়ার্ল্ডে এই অনুষ্ঠানের বিষয়ে কেউ অপপ্রচার চালাতে না পারে। এই অনুষ্ঠানের ব্যাপক জনসমাগম হয়। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার পাশাপাশি মা, বোন, শিশু ও বয়স্কদের নিরাপত্তার দিকে আমরা বিশেষ নজর রাখব। যাতে কোনো প্রকার ইভটিজিং না হয়, সেদিকেও আমাদের সতর্ক সৃষ্টি থাকবে।”

এই সময় তিনি সাধারণ জনগণের প্রতি র‌্যাবকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে আমরা অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে চাই। আমরা আমাদের নিরাপত্তা বলয় বিস্তৃত করব সব জায়গায়, যাতে সুন্দরভাবে এই অনুষ্ঠানটি করা সম্ভব হয়।”

নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়ে তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের এক মাসের মাথায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তখনও নিরাপত্তার প্রশ্ন এসেছিল। পূজা হবে কিনা এই সংশয় ছিল। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে তাদের আশ্বস্ত করা হয়। আমরাও হিন্দু ধর্মের নেতৃস্থানীয় যারা আছেন, তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করি, তাদেরকে আশ্বস্ত করি। তার প্রেক্ষিতে এ বছর খুব সুন্দরভাবে পূজা উৎসবটি সম্পন্ন হয়েছে আনন্দঘন পরিবেশে এবং নিরাপত্তার দিক থেকে কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। এরপর যতগুলো অনুষ্ঠান হয়েছে- যেমন বিজয় দিবস, বড়দিন, ইংরেজি নববর্ষ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, রমজান ও ঈদ- সবগুলোই আমরা যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছি। আমার মনে হয়, পূর্ববর্তী যেকোনো বছরের তুলনায় এবারের সবগুলো অনুষ্ঠান নিরাপত্তার দিক দিয়ে বলেন, আনন্দ উৎসাহের দিক দিয়ে বলেন সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। একই ধারাবাহিকতায় আমরা নববর্ষের অনুষ্ঠানটিও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে পারব বলে আশা করি।”

রমনা বটমূলে নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, “ভেতরে আমাদের ফুট পেট্রোল থাকবে, সাদা পোশাকে নজরদারি থাকবে, রাস্তায় আমাদের মোটরসাইকেল গাড়ির টহল থাকবে। এই ভ্যালুটিকে আমরা সুইপিং করব। আমাদের ডগ স্কোয়াড আছে বোম ডিসপোজাল ইউনিট আছে। সর্বপ্রকার প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি এবং নিরাপত্তা জনিত কোনো সমস্যা হবে না বলেই আমরা আশাবাদী।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০১:১৬:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫
১১

‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ পোড়ার ঘটনায় দায়িত্বরতদের অবহেলা পেলে ব্যবস্থা: র‍্যাব ডিজি

আপডেট: ০১:১৬:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় চারুকলায় নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি ছিল কিনা তা অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান। যদি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকাদের কোনো অবহেলা পাওয়া যায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

রবিবার সকালে রমনা বটমূলে ‘বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনে র‌্যাবের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।

চারুকলায় ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ পুড়ে যাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব ডিজি বলেন, “যে ঘটনাটি ঘটেছে তার তদন্ত হবে। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আমরা এও খতিয়ে দেখছি যে, এখানে আমাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের কোনো ঘাটতি ছিল কিনা সেটা অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে। যদি সেরকম কিছু পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পহেলা বৈশাখের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, “পহেলা বৈশাখে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‍্যাব কর্তৃক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নববর্ষ আমাদের জাতীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা এই অনুষ্ঠানটি উৎসাহ উদ্দীপনায় আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করব। এজন্য র‌্যাব ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমাদের মোটরসাইকেল পেট্রোল, গাড়ি পেট্রোল, চেকপোস্ট, অবজারভেশন টাওয়ার এবং গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে৷ আমরা অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রেখে এই অনুষ্ঠানটি যাতে সুন্দরভাবে করা যায় তার সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।”

তিনি আরো বলেন, “এই অনুষ্ঠান আজকে থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি ব্যান্ড শো আছে আজকে। কাল সকাল থেকে ঢাকা শহরে বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠান হবে। মূল অনুষ্ঠান থাকবে রমনা বটমূলে। এরপর চারুকলা কর্তৃক আনন্দ শোভাযাত্রা করা হবে। রবীন্দ্র সরোবরে দিনব্যাপী অনুষ্ঠান আছে। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠান আছে। এছাড়া ঢাকা শহরে বিভিন্ন জায়গায় এই অনুষ্ঠান উদযাপিত হবে। আমরা সর্বপ্রকার নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি এবং আশা করি এই অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে আমরা সক্ষম হব।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা সাইবার ওয়ার্ল্ডেও মনিটরিং করছি, যাতে সাইবার ওয়ার্ল্ডে এই অনুষ্ঠানের বিষয়ে কেউ অপপ্রচার চালাতে না পারে। এই অনুষ্ঠানের ব্যাপক জনসমাগম হয়। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার পাশাপাশি মা, বোন, শিশু ও বয়স্কদের নিরাপত্তার দিকে আমরা বিশেষ নজর রাখব। যাতে কোনো প্রকার ইভটিজিং না হয়, সেদিকেও আমাদের সতর্ক সৃষ্টি থাকবে।”

এই সময় তিনি সাধারণ জনগণের প্রতি র‌্যাবকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে আমরা অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে চাই। আমরা আমাদের নিরাপত্তা বলয় বিস্তৃত করব সব জায়গায়, যাতে সুন্দরভাবে এই অনুষ্ঠানটি করা সম্ভব হয়।”

নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়ে তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের এক মাসের মাথায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তখনও নিরাপত্তার প্রশ্ন এসেছিল। পূজা হবে কিনা এই সংশয় ছিল। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে তাদের আশ্বস্ত করা হয়। আমরাও হিন্দু ধর্মের নেতৃস্থানীয় যারা আছেন, তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করি, তাদেরকে আশ্বস্ত করি। তার প্রেক্ষিতে এ বছর খুব সুন্দরভাবে পূজা উৎসবটি সম্পন্ন হয়েছে আনন্দঘন পরিবেশে এবং নিরাপত্তার দিক থেকে কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। এরপর যতগুলো অনুষ্ঠান হয়েছে- যেমন বিজয় দিবস, বড়দিন, ইংরেজি নববর্ষ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, রমজান ও ঈদ- সবগুলোই আমরা যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছি। আমার মনে হয়, পূর্ববর্তী যেকোনো বছরের তুলনায় এবারের সবগুলো অনুষ্ঠান নিরাপত্তার দিক দিয়ে বলেন, আনন্দ উৎসাহের দিক দিয়ে বলেন সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। একই ধারাবাহিকতায় আমরা নববর্ষের অনুষ্ঠানটিও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে পারব বলে আশা করি।”

রমনা বটমূলে নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, “ভেতরে আমাদের ফুট পেট্রোল থাকবে, সাদা পোশাকে নজরদারি থাকবে, রাস্তায় আমাদের মোটরসাইকেল গাড়ির টহল থাকবে। এই ভ্যালুটিকে আমরা সুইপিং করব। আমাদের ডগ স্কোয়াড আছে বোম ডিসপোজাল ইউনিট আছে। সর্বপ্রকার প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি এবং নিরাপত্তা জনিত কোনো সমস্যা হবে না বলেই আমরা আশাবাদী।