ডেস্ক রিপোর্ট : হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ রবিবার দুপুরে আদালতে দুই জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এরমধ্যে একজন হলেন ডিএন পরীক্ষক। এ নিয়ে সর্বমোট ২৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। নারায়নগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে এই সাক্ষ্য দেন তারা।

সাক্ষিরা দুজন হলেন-মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনারগাঁ থানার তৎকালীন পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম এবং ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিয়িক অ্যাসিড) অ্যানালিস্ট কর্মকর্তা।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মামুনুল হকের ধর্ষণ মামলায় দুজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন ডিএনএ পরীক্ষক। তিনি বলেছেন, রয়েল রিসোর্ট থেকে উদ্ধার তোয়ালে থেকে পুরুষের বীর্য পাওয়া গেছে। সেই বীর্যের সঙ্গে আসামি মামুনুল হকের রক্তের মিল পাওয়া গেছে।

অপর সাক্ষী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেছেন, রয়েল রিসোর্টের ঘটনার পর রিসোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সামনে বাদী জান্নাত আরা ঝরনা বলেছেন, আসামি মামুনুল হক তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এখানে এনে ধর্ষণ করেছেন। এ নিয়ে সর্বমোট ২৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাদী জান্নাত আরা ঝরনা তার ছেলেসহ স্বেচ্ছায় সোনারগাঁ থানায় এসে ধর্ষণ মামলার বিস্তারিত এজাহার করে গেছেন। আদালতে এসে স্বেচ্ছায় ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনি। বাদী ঝরনা আদালতে বলেছিলেন, মামুনুল হক তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘ দুই বছর যাবৎ ধর্ষণ করছেন। এমনকি মামুনুল হকের কারণে তার আগের সংসার নষ্ট হয়েছে বলে তিনি জানান। তাই তিনি এই মামলার বিচার দাবি করেছেন।’

আসামি মামুনুল হকের পক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক নয়ন বলেন, ‘জেরার সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিএনএ পরীক্ষক অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। এতে প্রমাণিত হয় ওই ডিএনএ প্রতিবেদন মিথ্যা ও বানানো ছিল।’

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টের একটি কক্ষে কথিত স্ত্রী জান্নাত আরা ঝরনাসহ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় হেফাজতে ইসলাম ও মাদ্রাসার ছাত্ররা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে তাদের ছিনিয়ে নেয়। ওই ঘটনার ১৫ দিন পর ওই বছরের ১৮ এপ্রিল মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ গ্রেপ্তার করে। রয়েল রিসোর্টের ঘটনার ২৭ দিন পর ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে কথিত স্ত্রী জান্নাত আরা ঝরনা বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।