আশরাফুজ্জামান বাবু, স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়নের ছুটিপুর বাজারের হাতুড়ে ডাক্তার আসলামের অপচিকিৎসার শিকার হয়ে আজ একমাস ধরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন পার্শ্ববর্তী মাগুরা ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামের মৃত আদিল হোসেনের ছেলে ইয়ামিন খান (৫৭)। ইয়মিন খান ছুটিপুর বাজারের একজন ক্ষুদ্র সব্জি ব্যবসায়ী এবং নৈশপ্রহরী।

বর্তমানে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ইয়ামিন খান বলেন, মাসখানেক আগে বাজারে রাত্রি কালীন নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালনের সময় তিনি বৃষ্টির পানিতে পা পিছলে পড়ে যান। এসময় তার সাথে বাজারে ডিউটিতে থাকা আরেকজন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আসলামকে ডেকে আনেন। আসলাম তাকে ২টি ট্যাবলেট খেতে দেন এবং তার পশ্চাৎদেশে একই স্থানে ২টি ইনজেকশন পুশ করেন। এর দুদিন পরেই ইনজেকশন দেওয়া জায়গায় যন্ত্রণার সাথে ফুলতে শুরু করে। এক পর্যায়ে যন্ত্রণা সহ্য না করতে পেরে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে যশোর সদর হাসপাতালে রেফার করেন। যশোর সদর হাসপাতালেও তার অবস্থা দেখে ভর্তি না নিয়ে ঢাকায় রেফার করেন। কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে তারা ঢাকায় যেতে না পেরে বাড়িতে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে অবস্থা আরও খারাপ হলে আবারো যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। তখন ডাক্তাররা তার অবস্থা বিবেচনা করে দ্রুত অপারেশনের ব্যবস্থা করেন এবং প্রায় একফুট লম্বালম্বি কেটে ইনজেকশন দেওয়া জায়গায় ইনফেকশন হয়ে পচে যাওয়া মাংস কেটে ফেলে দেন। ইয়ামিন খান আরও বলেন, সদর হাসপাতালের ডাক্তার শরিফুল ইসলাম তাকে বলেছেন, আর দুদিন দেরী হলে তার পা কেটে ফেলা লাগতো এবং তাকেও বাঁচানো কষ্টসাধ্য হয়ে যেতো। যশোর সদর হাসপাতালে কয়েকদিন থাকার পর তিনি বর্তমানে ঝিকরগাছা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

ইয়ামিনের ছেলে সাহেব আলী বলেন, সহায় সম্বল যা কিছু ছিলো সব ব্যায় করে আমি আমার আব্বার চিকিৎসা করাচ্ছি। আমি ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালাই। ইতিমধ্যে ৩টা ছাগল এবং ইজিবাইকের ব্যাটারী কেনার জন্য জমানো টাকাও খরচ করে ফেলেছি। কিন্তু আব্বা সুস্থ হয়নি। তার অবস্থা এখনও আশংকা জনক। আসলাম ডাক্তার একই জায়গায় দুটো ইনজেকশন দেওয়ায় সেখানে পচন ধরে আজ আব্বার এই অবস্থা। তার আব্বা একটু সুস্থ হলে আসলাম ডাক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে তিনি জানান।

পল্লী চিকিৎসক আসলাম হোসেন প্রথমে একই স্থানে দুটো ইনজেকশন দেওয়ার কথা অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে স্বীকার করে বলেন আমি ৫ বছর ধরে ডাক্তারি করছি কিন্তু এরকম ঘটনা এর আগে কখনও ঘটেনি। তার দেওয়া চিকিৎসায় রোগী সুস্থ হওয়ার পরে কেন এরকম হলো সেটা তিনি জানেননা বলে জানান।