০৯:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

আজ ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত দিবস

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ০৬:৩১:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • /

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : আজ ৬ ডিসেম্বর ঝিনাইদহ পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত দিবস।

১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয় ঝিনাইদহ মুক্ত হয়। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যশোর ও ঝিনাইদহ পাক বাহিনীর কাছে হয়ে ওঠে এক আতঙ্কের জনপদ। ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গেরিলা বাহিনীর তীব্র আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাক বাহিনী।

১৯৭১ এর ৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার ও তাদের দোসরদের পরাজিত করে ঝিনাইদহকে স্বাধীন করে মুক্তিযোদ্ধারা। সেদিন ঝিনাইদহের আকাশে প্রথম উড্ডয়ন হয় স্বাধীন বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ঝিনাইদহে মুক্তি বাহিনীর সঙ্গে পাক বাহিনীর প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ হয় ১ এপ্রিল। জেলার সদর উপজেলার বিষয়খালী বাজারে মুক্তিবাহিনীর তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে পাক হানাদাররা। ওই যুদ্ধে তুমুল প্রতিরোধ গড়ে তোলেন বীর মুক্তি সেনানীরা।

ঝিনাইদহ জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠে জানা যায়, বিষয়খালীতে ১ এপ্রিল ‘প্রথম সম্মুখ প্রতিরোধ যুদ্ধ’ হয়। ওই দিন পাকবাহিনী যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ভারী অস্ত্রসস্ত্রসহ কামানবাহী ট্যাংকের বহর নিয়ে ঝিনাইদহ দখলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। খবর পেয়ে মুক্তিবাহিনী ঝিনাইদহের বিষয়খালীতে অবস্থান নেয়। পাকবাহিনী বিষয়খালী বাজারের উপকণ্ঠে পৌঁছানো মাত্রই মুক্তিবাহিনীর আক্রমণ শুরু হয়।

মুক্তিযোদ্ধারা বেগবতী নদীর ওপর বিষয়খালী সেতু গুড়িয়ে দেন। ফলে সেতুর অন্য প্রান্তে আটকা পড়ে পাক সেনাদের বহর। পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর দীর্ঘ ৮ ঘণ্টার সম্মুখ যুদ্ধ হয়। পরে মুক্তিবাহিনীর তুমুল আক্রমণে পিছু হটতে বাধ্য হয় পাকহানাদার বাহিনী। ঝিনাইদহের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তাজউদ্দিন আহমেদ ও এসএম মশিউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমি ইস্ট পাকিস্তান রেজিমেন্ট (ইপিআর) এ ছিলাম। বাঙালি সেনাদের অস্ত্র সমর্পণের জন্য পাক আর্মি নির্দেশ দেয়। আমরা নির্দেশ অমান্য করে অস্ত্র নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যাই। পরে সিলেট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে যুদ্ধ করেছি।

মৌলভীবাজারের ধলই সীমান্তে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের সতীর্থ হিসেবে যুদ্ধ করেছি। আমি সেদিন পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম।’ মুক্তিযুদ্ধে জেলায় ২৭৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাঁদের মধ্যে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন দুজন। তাঁরা হলেন বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ও বীর প্রতীক সিরাজুল ইসলাম।

Please Share This Post in Your Social Media

আজ ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত দিবস

আপডেট: ০৬:৩১:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : আজ ৬ ডিসেম্বর ঝিনাইদহ পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত দিবস।

১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয় ঝিনাইদহ মুক্ত হয়। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যশোর ও ঝিনাইদহ পাক বাহিনীর কাছে হয়ে ওঠে এক আতঙ্কের জনপদ। ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গেরিলা বাহিনীর তীব্র আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাক বাহিনী।

১৯৭১ এর ৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার ও তাদের দোসরদের পরাজিত করে ঝিনাইদহকে স্বাধীন করে মুক্তিযোদ্ধারা। সেদিন ঝিনাইদহের আকাশে প্রথম উড্ডয়ন হয় স্বাধীন বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ঝিনাইদহে মুক্তি বাহিনীর সঙ্গে পাক বাহিনীর প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ হয় ১ এপ্রিল। জেলার সদর উপজেলার বিষয়খালী বাজারে মুক্তিবাহিনীর তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে পাক হানাদাররা। ওই যুদ্ধে তুমুল প্রতিরোধ গড়ে তোলেন বীর মুক্তি সেনানীরা।

ঝিনাইদহ জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠে জানা যায়, বিষয়খালীতে ১ এপ্রিল ‘প্রথম সম্মুখ প্রতিরোধ যুদ্ধ’ হয়। ওই দিন পাকবাহিনী যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ভারী অস্ত্রসস্ত্রসহ কামানবাহী ট্যাংকের বহর নিয়ে ঝিনাইদহ দখলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। খবর পেয়ে মুক্তিবাহিনী ঝিনাইদহের বিষয়খালীতে অবস্থান নেয়। পাকবাহিনী বিষয়খালী বাজারের উপকণ্ঠে পৌঁছানো মাত্রই মুক্তিবাহিনীর আক্রমণ শুরু হয়।

মুক্তিযোদ্ধারা বেগবতী নদীর ওপর বিষয়খালী সেতু গুড়িয়ে দেন। ফলে সেতুর অন্য প্রান্তে আটকা পড়ে পাক সেনাদের বহর। পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর দীর্ঘ ৮ ঘণ্টার সম্মুখ যুদ্ধ হয়। পরে মুক্তিবাহিনীর তুমুল আক্রমণে পিছু হটতে বাধ্য হয় পাকহানাদার বাহিনী। ঝিনাইদহের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তাজউদ্দিন আহমেদ ও এসএম মশিউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমি ইস্ট পাকিস্তান রেজিমেন্ট (ইপিআর) এ ছিলাম। বাঙালি সেনাদের অস্ত্র সমর্পণের জন্য পাক আর্মি নির্দেশ দেয়। আমরা নির্দেশ অমান্য করে অস্ত্র নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যাই। পরে সিলেট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে যুদ্ধ করেছি।

মৌলভীবাজারের ধলই সীমান্তে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের সতীর্থ হিসেবে যুদ্ধ করেছি। আমি সেদিন পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম।’ মুক্তিযুদ্ধে জেলায় ২৭৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাঁদের মধ্যে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন দুজন। তাঁরা হলেন বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ও বীর প্রতীক সিরাজুল ইসলাম।