০১:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের ফোন পেয়ে কেউ উচ্ছ্বসিত, না পেয়ে কেউ হতাশ

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ১২:৫৩:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১২

গ্রামের সংবাদ ডেস্ক : আগামী সংসদ নির্বাচনে খুলনা বিভাগের ৩৫টি আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের ঢাকায় ডেকেছে বিএনপি।

ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসেবে আজ সোমবার বিকেলে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য প্রাথীদের ফোন করে ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

প্রথমবারের মতো যারা নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিচ্ছেন, মনোনয়ন চাইছেন; কেন্দ্রীয় নেতাদের আমন্ত্রণ পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তারা। নিজ দলের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঝে এটাকে প্রাথমিক বিজয় হিসেবে মনে করছেন। আবার প্রচারে থাকা অনেকেই বৈঠকে আমন্ত্রণ পাননি। তাদের মাঝে হতাশা দেখা গেছে। নানাভাবে তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং আমন্ত্রণ পাওয়ার চেষ্টা করছেন।

মনোনয়নপ্রত্যাশীদের আমন্ত্রণ জানানোর দায়িত্ব থাকা বিএনপির দুই কেন্দ্রীয় নেতা জানান, শুক্রবার রাত থেকে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার নেতাদের ফোন করে আমন্ত্রণ জানানো শুরু হয়। রোববার বিকেল পর্যন্ত খুলনা জেলার ৬টি আসনে এখন পর্যন্ত ১২ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী আমন্ত্রণ পেয়েছেন।

আমন্ত্রণ পাননি খুলনা-৩ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, খুলনা-৪ আসনের সাবেক প্রার্থী শাহ কামাল তাজ ও খুলনা-৫ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী শফি মোহাম্মদ খান।

তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমন্ত্রণ পাইনি এটা ঠিক না। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম আমাকে আমন্ত্রণ জানাতে দেওয়া হয়নি।’

শাহ কামাল তাজ বলেন, ‘আমি তো এবার মনোনয়ন চাইনি।’ এলাকায় প্রচারণার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ধানের শীষের পক্ষে ভোট চেয়েছি। নিজের জন্য নয়।’

শফি মোহাম্মদ খান বলেন, ‘এখনও সময় আছে, অপেক্ষায় আছি।’

খুলনা-১ আসন থেকে আমন্ত্রণ পেয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান ও সাবেক ছাত্রদল নেতা জিয়াউর রহমান পাপুল। গতবছর ১৯ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে দিলে খুলনায় বিএনপির রাজনীতিতে চাপে পড়েন আমীর এজাজ খান। কেন্দ্রের ফোনকে প্রাথমিক বিজয় হিসেবে দেখছে তাঁর অনুসারীরা।

জানতে চাইলে আমির এজাজ খান বলেন, ‌‘দাকোপ-বটিয়াঘাটা আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। কেউ এখানে নির্বাচনের সাহস করে না। তিনবার পরাজিত হয়েছি কিন্তু মাঠ ছাড়িনি। দল এই কাজের মূল্যায়ন করবে বলে আমার বিশ্বাস ছিল।’

জিয়াউর রহমান পাপুল বলেন, ‘স্থানীয় মানুষ ও নেতাকর্মীদের অনুরোধে প্রথমবারে মতো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য কাজ করছি। কেন্দ্রের ফোন পেয়েছি, আশা করছি তারা আমার ওপর আস্থা রাখবেন।’

খুলনা-২ আসন থেকে ফোন পেয়েছেন এই আসনের সাবেক এমপি ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, বর্তমান নগর সভাপতি শফিকুল আলম মনা ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন। নগর বিএনপির রাজনীতিতে মঞ্জু প্রায় ৪ বছর ধরে কোণঠাসা। তাঁর আমন্ত্রণকে বিজয় হিসেবে দেখছেন অনুসারীরা।

তবে শফিকুল আলম তুহিন বলেন, ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রাজপথে সবচেয়ে বেশি নির্যাতন, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছি আমি। এলাকায় কাজ করছি, বিপুল সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি মনোনয়নও পাব।’

শফিকুল আলম মনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের হাত ধরে বিএনপিতে প্রবেশ করি। বিভিন্ন সময় মনোনয়ন চেয়েও পাইনি। এবার মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।’

নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘প্রার্থীদের তৎপরতা, সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা সবকিছুর বিষয়ে চেয়ারম্যানের ধারণা রয়েছে। এজন্য আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আশা করি সিদ্ধান্ত নিতে তিনি ভুল করবেন না।’

খুলনা-৩ আসনে একমাত্র প্রার্থী হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল।

খুলনা-৪ আসনে কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি পারভেজ মল্লিক ফোন পেয়েছেন। হেলাল আগে আসনটিতে ধানের শীষ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। পারভেজ এবার প্রথম।

পারভেজ মল্লিক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করছি। দল যে আমাকে মনোনয়নের জন্য ডেকেছে, এটাকে কাজের মূল্যায়ন বলে মনে করছি।’

খুলনা-৫ আসন থেকে সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগর লবী এবং খুলনা-৬ আসন থেকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম, পাইকগাছার সভাপতি আবদুল মজিদ, সাংবাদিক আনোয়ার আলদীন এবং আমিরুল ইসলাম কাগজী আমন্ত্রণ পেয়েছেন।

বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ ইসলাম অমিত সমকালকে বলেন, ‘নির্বাচনের প্রস্তুতি অংশ হিসেবে প্রতিটি বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সোমবার খুলনা বিভাগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হবে।’

সুত্র : দৈনিক সমকাল।

Please Share This Post in Your Social Media

তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের ফোন পেয়ে কেউ উচ্ছ্বসিত, না পেয়ে কেউ হতাশ

আপডেট: ১২:৫৩:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

গ্রামের সংবাদ ডেস্ক : আগামী সংসদ নির্বাচনে খুলনা বিভাগের ৩৫টি আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের ঢাকায় ডেকেছে বিএনপি।

ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসেবে আজ সোমবার বিকেলে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য প্রাথীদের ফোন করে ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

প্রথমবারের মতো যারা নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিচ্ছেন, মনোনয়ন চাইছেন; কেন্দ্রীয় নেতাদের আমন্ত্রণ পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তারা। নিজ দলের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঝে এটাকে প্রাথমিক বিজয় হিসেবে মনে করছেন। আবার প্রচারে থাকা অনেকেই বৈঠকে আমন্ত্রণ পাননি। তাদের মাঝে হতাশা দেখা গেছে। নানাভাবে তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং আমন্ত্রণ পাওয়ার চেষ্টা করছেন।

মনোনয়নপ্রত্যাশীদের আমন্ত্রণ জানানোর দায়িত্ব থাকা বিএনপির দুই কেন্দ্রীয় নেতা জানান, শুক্রবার রাত থেকে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার নেতাদের ফোন করে আমন্ত্রণ জানানো শুরু হয়। রোববার বিকেল পর্যন্ত খুলনা জেলার ৬টি আসনে এখন পর্যন্ত ১২ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী আমন্ত্রণ পেয়েছেন।

আমন্ত্রণ পাননি খুলনা-৩ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, খুলনা-৪ আসনের সাবেক প্রার্থী শাহ কামাল তাজ ও খুলনা-৫ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী শফি মোহাম্মদ খান।

তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমন্ত্রণ পাইনি এটা ঠিক না। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম আমাকে আমন্ত্রণ জানাতে দেওয়া হয়নি।’

শাহ কামাল তাজ বলেন, ‘আমি তো এবার মনোনয়ন চাইনি।’ এলাকায় প্রচারণার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ধানের শীষের পক্ষে ভোট চেয়েছি। নিজের জন্য নয়।’

শফি মোহাম্মদ খান বলেন, ‘এখনও সময় আছে, অপেক্ষায় আছি।’

খুলনা-১ আসন থেকে আমন্ত্রণ পেয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান ও সাবেক ছাত্রদল নেতা জিয়াউর রহমান পাপুল। গতবছর ১৯ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে দিলে খুলনায় বিএনপির রাজনীতিতে চাপে পড়েন আমীর এজাজ খান। কেন্দ্রের ফোনকে প্রাথমিক বিজয় হিসেবে দেখছে তাঁর অনুসারীরা।

জানতে চাইলে আমির এজাজ খান বলেন, ‌‘দাকোপ-বটিয়াঘাটা আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। কেউ এখানে নির্বাচনের সাহস করে না। তিনবার পরাজিত হয়েছি কিন্তু মাঠ ছাড়িনি। দল এই কাজের মূল্যায়ন করবে বলে আমার বিশ্বাস ছিল।’

জিয়াউর রহমান পাপুল বলেন, ‘স্থানীয় মানুষ ও নেতাকর্মীদের অনুরোধে প্রথমবারে মতো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য কাজ করছি। কেন্দ্রের ফোন পেয়েছি, আশা করছি তারা আমার ওপর আস্থা রাখবেন।’

খুলনা-২ আসন থেকে ফোন পেয়েছেন এই আসনের সাবেক এমপি ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, বর্তমান নগর সভাপতি শফিকুল আলম মনা ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন। নগর বিএনপির রাজনীতিতে মঞ্জু প্রায় ৪ বছর ধরে কোণঠাসা। তাঁর আমন্ত্রণকে বিজয় হিসেবে দেখছেন অনুসারীরা।

তবে শফিকুল আলম তুহিন বলেন, ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রাজপথে সবচেয়ে বেশি নির্যাতন, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছি আমি। এলাকায় কাজ করছি, বিপুল সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি মনোনয়নও পাব।’

শফিকুল আলম মনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের হাত ধরে বিএনপিতে প্রবেশ করি। বিভিন্ন সময় মনোনয়ন চেয়েও পাইনি। এবার মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।’

নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘প্রার্থীদের তৎপরতা, সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা সবকিছুর বিষয়ে চেয়ারম্যানের ধারণা রয়েছে। এজন্য আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আশা করি সিদ্ধান্ত নিতে তিনি ভুল করবেন না।’

খুলনা-৩ আসনে একমাত্র প্রার্থী হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল।

খুলনা-৪ আসনে কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি পারভেজ মল্লিক ফোন পেয়েছেন। হেলাল আগে আসনটিতে ধানের শীষ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। পারভেজ এবার প্রথম।

পারভেজ মল্লিক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করছি। দল যে আমাকে মনোনয়নের জন্য ডেকেছে, এটাকে কাজের মূল্যায়ন বলে মনে করছি।’

খুলনা-৫ আসন থেকে সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগর লবী এবং খুলনা-৬ আসন থেকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম, পাইকগাছার সভাপতি আবদুল মজিদ, সাংবাদিক আনোয়ার আলদীন এবং আমিরুল ইসলাম কাগজী আমন্ত্রণ পেয়েছেন।

বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ ইসলাম অমিত সমকালকে বলেন, ‘নির্বাচনের প্রস্তুতি অংশ হিসেবে প্রতিটি বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সোমবার খুলনা বিভাগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হবে।’

সুত্র : দৈনিক সমকাল।