নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকার দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আ স ম আবদুর রব। বুধাবর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ ও পুলিশের যৌথ তাণ্ডবে সন্তানের লাশ রাস্তায় পড়ে থাকবে, মস্তক বিচ্ছিন্ন হবে, দেহ খণ্ড-বিখণ্ড হবে এবং রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হবে—এইজন্য মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়নি।৩০ লক্ষ মানুষ রক্ত দিয়েছে নতুন করে হানাদার বাহিনীর নিষ্ঠুরতা দেখার জন্য নয়।’

ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলনরত ছাত্রদের হত্যা করা সরকারের ঘৃণ্য কৌশলের বিরুদ্ধে এবং ছাত্রদের জীবন ও ভবিষ্যৎ নিরাপদ করতে অভিভাবকসহ সকলকে সর্বশক্তি নিয়ে রাস্তায় নামার আহ্বান জানান তিনি।

আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘ন্যায় সংগত ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে গিয়ে গত দুই দিনে বর্বরোচিত হামলা ও গুলি চালিয়ে কমপক্ষে ৬ জনকে হত্যাসহ শত শত ছাত্রকে আহত করে সরকার সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে।’

সরকারের গদি রক্ষার স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ‘৬৯, ‘৭০ এবং ‘৭১ সালে ছাত্রদের বিরোচিত ভূমিকার তীর্থভূমিতে তাদেরকেই গুলি করে হত্যার মাধ্যমে সরকারের গদি রক্ষার স্বপ্ন অচিরেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে।’

তিনি বলেন, ‘সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে অবৈধ ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে দেশকে বিভক্ত করে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ভোট চুরি, লুণ্ঠন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামকে স্তব্ধ করতে গিয়ে সরকারি লাঠিয়াল বাহিনী ব্যবহার করে রাষ্ট্রকে ব্যর্থ রাষ্ট্রের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।’

সরকারের অন্যায় অবিচার এবং পাপের পরিমাণ সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এই সরকারের কাছে জনগণ এবং রাষ্ট্র কেউ নিরাপদ নয় বিবৃতিতে উল্লেখ করেন তিনি।

বিবৃতি তিনি বলেন, ‘ভিন্নমত-পথের মানুষদের ‘রাজাকার’ আখ্যায়িত করে সরকার জন-আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ‘৭১ সালের হানাদার বাহিনীর অনুসারী হয়ে উঠছে। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পেটোয়া বাহিনীর হামলার নির্দেশদাতাদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় এনে প্রজাতন্ত্রের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

অচিরেই সরকারের পদত্যাগ করা উচিত উল্লেখ করে বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘সকল ক্ষেত্রে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণে ছাত্রদের আন্দোলনে যে স্বতঃস্ফূর্ত জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে তার প্রেক্ষিতে অগণিত মানুষের প্রাণ হরণের পরিকল্পনা পরিত্যাগ করে জনগণের ক্ষোভ এবং ঘৃণাকে বিবেচনায় নিয়ে অচিরেই সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।’