ডিমলায় প্রশাসনের নীরবতায় বেড়েই চলছে অনুমোদনবিহীন মিনি পেট্রোল পাম্প, আতঙ্কে সাধারণ মানুষ
- আপডেট: ১২:২৩:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
- / ২১

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নীলফামারীর ডিমলায় প্রশাসনের নীরবতায় অবৈধভাবে গরে উঠেছে অনুমোদনহীন অসংখ্য মিনি পেট্রোল পাম্প। মালিকদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট পাম্পের অনুমোদন নেওয়ার কোন বালাই নেই। যেখানে ইচ্ছে সেখানে পাম্প স্থাপন করে দিব্যি ব্যবসা করে যাচ্ছে। এসব অবৈধ মিনি পাম্পের কারণে প্রতিনিয়ত চরম নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছে মানুষের জান ও মাল।
সম্প্রতি ডিমলা সদর ইউনিয়নের বাবুরহাটে ‘মেসার্স বক্কর অ্যান্ড সন্স’ নামে এক অবৈধ পাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। শ্রাবণ কুমার রায় (১৮) নামে একজন গুরুতরভাবে দগ্ধ হন। আগুনে পুড়ে যায় আশপাশের কয়েকটি দোকানসহ একটি মোটরসাইকেল শোরুমসহ। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় কয়েক কোটি টাকা কোটি।
এরপর প্রশাসনের দ্বায়সারা অভিযানে কিছুদিন দুই-চারটি পাম্প বন্ধ থাকলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না থাকায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।মালিকেরা এখন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো যত্র-তত্র মিনি স্থাপন করে ব্যবসা পরিচালনা করছে। আগে সমস্ত উপজেলা জুড়ে এসব মিনি পাম্প ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টি অভিযানের পরে এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ টি উপর। প্রতিদিন এসব পাম্প থেকে বিক্রি হচ্ছে হাজার হাজার লিটার পেট্রোল, ডিজেল ও অকটেন। কোথাও নেই অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, পরিবেশগত ছাড়পত্র বা নিরাপদ দূরত্বের মানদণ্ড। স্কুল, কলেজ, বাজারের মধ্যে এবং আবাসিক এলাকার পাশে গড়ে ওঠা এসব পাম্পে রয়েছে তেলের বিশাল মজুত। ড্রামে করে খোলা স্থানে রাখা এসব পেট্রোলিয়াম জাত দ্রব্যের মজুদ থেকে যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।পাম্পের আশেপাশের মানুষজন ও ব্যবসায়ীগণের প্রতিনিয়ত দিন কাটছে আতঙ্কে ও নিরাপত্তাহীনতায়। তাদের দাবি প্রশাসন যেন অতি দ্রুত এদের বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং অবৈধভাবে গড়ে ওঠা পামগুলো বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয়রা জানান, এসব পাম্পে বিক্রি হওয়া তেলে ভেজাল ও পরিমাপে কারচুপি করা হয়। এতে যানবাহনের ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্তসহ এবং পরিবেশও মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) তথ্য অনুযায়ী, ডিমলায় অনুমোদিত ফিলিং স্টেশন মাত্র চারটি; কিন্তু বাস্তবে চলমান অবৈধ মিনি পাম্পের সংখ্যা ৭০টিরও বেশি। প্রশাসনের সাময়িক অভিযানের পর অল্পদিনেই এগুলো আবার চালু হয়ে যায়।
ডিমলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘এসব পাম্পে কোনো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র বা নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেই।যে কোনো সময় আগুন লেগে কোটি কোটি টাকার সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি ও মানুষের জীবন বিনাশসহ মারাত্মক বিপর্যয় ঘটতে পারে।’
স্থানীয়রা পরিবেশ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নীরবতায় ক্ষোভ প্রকাশ এবং তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব অবৈধ পাম্প বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছেন ।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরানুজ্জামান বলেন, ‘কিছু অবৈধ পাম্পে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। অচিরেই আবারও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হবে।