শার্শায় বর্ষার পানিতে ৪০০ হেক্টর ফসলি জমি বিনষ্ট: কৃষকের মাথায় হাত, বাজারে সবজির চড়া দাম
- আপডেট: ১২:০৩:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৫৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা বৃষ্টি ও ইছামতী নদীর উজানের পানির প্রবল ঢলে যশোরের শার্শা উপজেলায় এবছর ৪০০ হেক্টর আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
উপজেলার মোট ২৬ হাজার ৯৪২ হেক্টর আবাদি জমির মধ্যে এই ক্ষতির পরিমাণ কৃষকদের মাঝে চরম হতাশা সৃষ্টি করেছে। ফসলহানিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, ধান, পাট ও সবজির বিস্তীর্ণ ক্ষেত ভেসে গেছে ঠেঙ্গামারী, আওয়ালী বিল, মাখলার বিল, পদ্মবিল, বনমান্দার বিল, সাতরাইল বিল, মান্দারতলা ও সোনামুখি বিল এলাকায়। অনেক বাড়ি-ঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছে হাজারো হতদরিদ্র পরিবার।
রুদ্রপুর, গোগা, বাহাদুরপুর, পুটখালী, বাগআঁচড়া, নাভারণ, শ্যামলাগাছি ও বেনাপোলসহ নিচু বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে থাকায় আমন ধানসহ চলতি মৌসুমের সবজি চাষ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। বাজারে সবজির সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে দাম, ফলে ভোক্তারাও পড়েছেন বিপাকে।
স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করে জানান, প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে ইছামতী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন নদী খননের ও বাঁধ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এর ফলে ঢলের পানি সহজে আবাদি জমিতে প্রবেশ করে দীর্ঘদিন পানি জমে থাকায় অনেক এলাকায় বছরে মাত্র একবার ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে।
রুদ্রপুর গ্রামের কৃষক আবুল কালাম বলেন, “প্রতি বছর একই অবস্থা হয়। পানি জমে থাকায় আমন ধান লাগাতে পারিনি। সরকার যদি ড্রেনেজ ও নদী খননের স্থায়ী ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে কৃষকরা একসময় কৃষিকাজ ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে।”
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, “চলতি বছরের ভারি বর্ষণে শার্শা ও বেনাপোল থানার অন্তত ৪০০ হেক্টর জমিতে পানি উঠে আমনের বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “প্রতি বছর এই বিলগুলোতে জলাবদ্ধতা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচিত এসব এলাকায় টেকসই পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং ইছামতীর তীরে বাঁধ নির্মাণ করা।”