আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের লোকসভা নির্বাচনের সাত ধাপের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০২টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৫৯.৭১% ভোট পড়েছে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, প্রথম ধাপের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে পশ্চিমবঙ্গে।

এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় রেকর্ডসংখ্যক ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা পর্যন্ত সবগুলো আসন মিলিয়ে ভোট পড়েছে ৫৯.৭১%। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ভোট হয়েছে তামিলনাড়ু, উত্তরাখণ্ড, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, আন্দামান-নিকোবর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, পুদুচেরি, সিকিম, লাক্ষাদ্বীপসহ মোট ২১ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে।

১৮তম লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের ডাক দিয়েছে। আর পরপর ২০১৪ ও ২০১৯ সালের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর এবার জয়ের প্রত্যাশা করছে বিরোধী ভারত ব্লকের অংশীদাররা।

শুক্রবারের ভোটে উত্তর প্রদেশে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৫৮%। রাজ্যের আটটি আসনে ভোট হয়েছে। রাজ্যটির প্রধান নির্বাচনি কর্মকর্তা নবদ্বীপ রিনওয়া বলেন, ‘‘সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে বেশিরভাগ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়েছে। ভোটার উপস্থিতির নির্দিষ্ট তথ্য শনিবার জানানো হবে।’’

পশ্চিমবঙ্গে বিচ্ছিন্ন সহিংসতার মধ্যে ভোটার উপস্থিতি ছিল সর্বোচ্চ। প্রথম ধাপে রাজ্যে তিনটি আসনে ভোট হয়েছে। রাজ্যে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৭৭.৫৭%।

ভোট শেষে সংবাদ সম্মেলনে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনি কর্মকর্তা আরিজ আফতাব বলেছেন, ‘‘দু’একটা বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া তিনটি আসনে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে।’’

পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার লোকসভা আসনে মোট ৫ হাজার ৮১৪ টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। তিনটি আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ৫৬ লাখ ২৬ হাজার ১০৮জন। ভোটের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ২৭ হাজার ৯০৭ জন ভোট কর্মী। পুলিশ অবজারভার, স্পেশাল অবজারভারের পাশাপাশি ৫৮১ জন মাইক্রো অবজারভার ছিলেন।

পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটকে কেন্দ্র করে মোট ৫৫৬ টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে কোচবিহারে ২৬৯টি, আলিপুরদুয়ারে ১৬২টি এবং জলপাইগুড়িতে ১২৫টি অভিযোগ জমা পড়েছে।

সিকিমে একটি লোকসভা আসনে ভোট হয়েছে। রাজ্যের আসনটিতে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৬৮%। অরুণাচলে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৬৮.৩%। তামিলনাড়ুতে ৬২.৩%, আসামে ৭১.৩%, মেঘালয়ে ৭০.২%, মণিপুরে ৬৮.৬% ও ত্রিপুরায় ৭৯.৯%।

ভারতের নির্বাচন কমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, একটি মসৃণ, স্বচ্ছ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য কঠোরভাবে কাজ করছে কমিশন।

নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ‘‘ইন্ডিয়া’’ জোটের মধ্যে মূল লড়াই হতে যাচ্ছে। জোটগতভাবে ৪০০ আসন জয়ের স্বপ্ন দেখছে ক্ষমতাসীন জোট এনডিএ। আর এককভাবে ৩৭০ আসনের টার্গেট নিয়ে এগোচ্ছে জোটটির মূল দল ভারতীয় জনতা পার্টি।

২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচন সাতটি ধাপে মোট ৯৬ কোটি ৯০ লাখ ভোটার ভোট দেবেন। ভোটারের এই সংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১০ ভাগেরও বেশি।

দ্বিতীয় ধাপের ভোট হবে ২৬ এপ্রিল। পরবর্তী ধাপগুলোর ভোট হবে যথাক্রমে, ৭ মে, ১৩ মে, ২০ মে, ২৫ মে এবং ১ জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ভোট গণনা এবং ফলাফল ঘোষণা করা হবে।