সাবাবিশ্ব ডেস্ক : ইরান-ইসরায়েলের লড়াই দিয়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যে যুদ্ধে পৃথিবীর সবাই গোপনে অংশ নিবে বলেই অনুমান করা হচ্ছে। তবে এখনও কোনো কিছুই নিশ্চিত নয়। কারণ ইরানের হামলার পরে ইসরায়েল কী পদক্ষেপ নিবে সেটার উপরেই অনেক কিছু নির্ভর করছে।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতকে কেন্দ্র করে অনেকটা দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন মিত্ররা। আমেরিকার নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও অনেকটা ইরানের ভয়েই স্পষ্ট করে ইসরায়েলের পক্ষ নিতে পারছে না আরবের এই দেশগুলো। মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে এই দুই দেশের সংঘাত নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে পরাশক্তিগুলো। ফলে স্পষ্টতই এই সংঘাতে আরও একটি ভূরাজনৈতিক মেরুকরণ দেখতে যাচ্ছে বিশ্ব।

ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলার সম্ভাব্য পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে আগেই যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের চার মার্কিন মিত্র সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান ও কুয়েত। দেশগুলো জানিয়েছে, তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ইরানের ওপর কোনো প্রকার হামলা চালাতে দেওয়া হবে না। অন্যদিকে আরেক আরব রাষ্ট্র জর্ডান খোদ ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে ইরানি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে মাঠে নেমেছে।

ইরানের হামলা মোকাবিলায় এরইমধ্যে ইসরায়েলকে সহযোগিতা করছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। পাশাপাশি ইসরায়েলের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও জার্মানি।

অন্যদিকে, ইসরায়েলে ইরানের হামলার পর সৌদি আরব সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অঞ্চলে ‘সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং ‘যুদ্ধের বিপদ’ এড়াতে উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জানিয়েছে।

ইরানি মিত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ, হুতি, হামাস, রাশিয়ার ওয়াগনানের মতো শক্তিশালী দলগুলো নানাভাবে ইরানের সঙ্গে যোগ দিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। গোপনে অস্ত্র আর প্রযুক্তি দিয়ে সাহায্য করতে পারে রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া, চীন, তুরস্ক। সৌদিসহ গোটা মধ্যপ্রাচ্য নীরব থাকবে। গোপনে কেউ কেউ ইসরায়েলকে জমি ব্যবহারের অনুমতি দিবে।

এদিকে ইরানের এ হামলার জবাবে পাল্টা হামলা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি তেলআবিব। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়ে রোববার বিকেলে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা করা হবে।

অন্যদিকে, ইরান ও ইসরায়েলের চরম উত্তেজনার মধ্যে তেল আবিবের প্রতি ইস্পাতদৃঢ় সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিলেও ইরানে পাল্টা হামলায় ইসরায়েলের সঙ্গে অংশ নেবে না মার্কিন বাহিনী। এমনকি এই ইসরায়েলি হামলায় তারা সমর্থন পর্যন্ত দেবেন না। তবে তাই বলে ইসরায়েলের পাশে থাকছে না যুক্তরাষ্ট এমনটাও নয়। প্রকাশ্যে না হলেও পরোক্ষভাবে ইসরায়েলের হয়ে ইরানকে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করবে শক্তিধর দেশটি।