খাগড়াছড়িতে ঝুলন্ত বৈদ্যুতিক তার কেড়ে নিল দুই প্রাণ, শোকের ছায়া বড়পাড়ায়
- আপডেট: ১২:৩৭:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
- / ৮১

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার গোলাবাড়ি ইউনিয়নের বড়পাড়ায় ঝুলে থাকা বৈদ্যুতিক তারের স্পর্শে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুইজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন পঙ্কজ ত্রিপুরা (৪৫) ও উপেন ত্রিপুরা (৩২)। আহত চন্দ্ররাণী ত্রিপুরা (২২) সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে বাসায় আছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বড়পাড়ার কাঁচা রাস্তায় মোটরসাইকেলে করে বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন পঙ্কজ ও উপেন ত্রিপুরা। পথে হঠাৎ ঝুলে থাকা সার্ভিস লাইনের বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই উপেন ত্রিপুরার মৃত্যু হয়। পঙ্কজ ত্রিপুরাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ সময় সঙ্গে থাকা চন্দ্ররাণী ত্রিপুরাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তিনি বাড়ি ফিরেছেন।
স্থানীয় নারী কার্বারী পূবালী ত্রিপুরা জানান, “এই ঝুলে থাকা তারের বিষয়ে আমরা বহুবার বিদ্যুৎ বিভাগকে জানিয়েছি। কিন্তু কেউ কানে তুলেনি। আজ দুটি প্রাণ চলে গেল, তারপর ব্যবস্থা!”
বিদ্যুৎ বিভাগের ‘নীরবতা’ নিয়ে ক্ষোভ:
খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফায়জুল আলীম আলোর সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া মেলেনি। তবে ভারপ্রাপ্ত এসবিএ মলয় কুমার ত্রিপুরা বলেন, “ঘটনার পর স্থানীয়রা জানালে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ তার কেটে দিই। আগে কেউ জানায়নি, জানালে দুর্ঘটনা নাও ঘটতে পারত।”
এ বক্তব্যে স্থানীয়দের ক্ষোভ আরও বেড়েছে। তারা বলেন, “বারবার অভিযোগ করেও ফল হয়নি। আজ দুটি তাজা প্রাণ ঝরে গেল, এখন দায় এড়াতে বলছে জানানো হয়নি!”
আইনগত প্রক্রিয়া ও শোকাবহ পরিবেশ:
খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল বাতেন মৃধা বলেন, “পঙ্কজ ত্রিপুরাকে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
ঘটনার পর পুরো বড়পাড়া এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এই মর্মান্তিক মৃত্যু দুটিকে ঘিরে বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বহীনতা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে জনসাধারণ।
নিরাপত্তা না থাকলে উন্নয়ন অর্থহীন:
এ দুর্ঘটনা একটি বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে,জীবনের ঝুঁকিতে বসবাস করা মানুষগুলো আর কতদিন অবহেলার শিকার হবে?
নিরাপদ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা কি খুবই কঠিন, না কি দায়িত্ব এড়ানোর সহজ অজুহাত?





















