বেগম খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়ি বহর গুলশানের বাসা ফিরোজার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে
গ্রামের সংবাদ ডেস্ক : বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়ি বহর গুলশানের বাসা ফিরোজার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। সাদা রঙের নিশান জিপে তাকে বহনকারী গাড়ি ও নিরাপত্তায় নিয়োজিত গাড়িবহরসহ অন্যান্য গাড়ির বহর বিমানবন্দর থেকে ১১ টা ২০ মিনিটে রওয়ানা দেয়। আবেগাপ্লুত নেতাকর্মীদের সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছে নিরাপত্তায় নিয়োজিতদের।
বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের অবস্থানের ফলে কোনো পূর্ব নির্দেশনা না থাকলেও “বাধ্য হয়ে” বনানী থেকে গুলশানগামী সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে ট্রাফিক গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. জিয়াউর রহমান জানিয়েছেন, বনানী থেকে গুলশান দুই নম্বর সড়কের মুখে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। গুলশানের দিকে যেতে চাওয়া যানবাহনকে সামনে এগিয়ে বনানী ১১ নম্বর সড়ক ব্যবহার করতে বলছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।
উপকমিশনার মো. জিয়াউর রহমান বলেন, “আমাদের সড়ক বন্ধের কোনো নির্দেশনা ছিল না। মানুষজনের অবস্থানের ফলে কোনো গাড়ি ঢুকতে পারছে না। ফলে বাধ্য হয়ে সড়কটি আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
এর আগে খালেদা জিয়াকে বহনকারী কাতারের রাজপরিবারের বিশেষ বিমান (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) আজ মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল সাড়ে ১০টা ৪৩ মিনিটের দিকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
দীর্ঘ চার মাস পর যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে আজ মঙ্গলবার দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে দেশে আছেন দুই পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শার্মিলা রহমান।
খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা। দলীয় চেয়ারপার্সনকে একনজর দেখতে এবং তাকে শুভেচ্ছা জানাতে সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা ছুটে আসেন বিমানবন্দর সড়ক থেকে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজা পর্যন্ত।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দলীয় পতাকা ও জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তার দুইপাশে অবস্থান নিয়েছেন। সেখানে তারা বিভিন্ন শ্লোগান দিচ্ছেন। একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে বিমানবন্দর এলাকায় অতিরিক্ত জনসমাগমের সম্ভাবনা থাকায় ট্রাফিক পুলিশেরও ব্যাপক তৎপরতা দেখা যাচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি অবস্থান করছে বিমানবন্দর থেকে লে মেরিডিয়ান হোটেল, ছাত্রদল লে মেরিডিয়ান হোটেল থেকে খিলক্ষেত, যুবদল হোটেল র্যাডিসন পর্যন্ত এলাকায়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি অবস্থান করছে হোটেল র্যাডিসন থেকে আর্মি স্টেডিয়াম, স্বেচ্ছাসেবক দল আর্মি স্টেডিয়াম থেকে বনানী কবরস্থান, কৃষক দল বনানী কবরস্থান থেকে কাকলী মোড়, শ্রমিক দল কাকলী মোড় থেকে বনানীর শেরাটন হোটেল এবং ওলামা দল, তাঁতী দল, জাসাস, মৎস্যজীবী দল অবস্থান করবে শেরাটন হোটেল থেকে বনানী কাঁচাবাজার পর্যন্ত এলাকায়। পেশাজীবী সংগঠনগুলো অবস্থান করবে বনানী কাঁচাবাজার থেকে গুলশান-২ এবং মহিলা দল গুলশান-২ নম্বর গোলচত্বর থেকে গুলশান অ্যাভিনিউ রোড পর্যন্ত এলাকায়।
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নেন তিনি। খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি তার যুক্তরাজ্য গমনের জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছিলেন। সেটিতেই তিনি লন্ডন যান এবং একই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশে ফেরেন।