১১:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই যেখানে কাস্ট হওয়া ভোটের অনুপাতে সংসদের আসন বন্টিত হবে : ডা. শফিকুর রহমান

নিউজ ডেস্ক

নিজস্ব প্রতিবেদকঃডোমারের পথসভায় নির্বাচনের বিষয়ে জামায়াতের আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই, যেখানে কাস্ট হওয়া ভোটের অনুপাতে সংসদে আসন বণ্টন হবে। এতে ছোট দলগুলোকেও কারও করুণার পাত্র হতে হবে না। তারা যথাযথভাবে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে।’

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নীলফামারীর ডোমার উপজেলা পরিষদ মাঠে উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে সভাপতিত্ব করেন ডোমার উপজেলা জামায়াতের আমির খন্দকার আহমাদুল হক মানিকের। নীলফামারী জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আন্তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত পথসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম, অঞ্চল টিম সদস্য মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ, নীলফামারী জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার প্রমুখ।

শহিদদের দলীয় স্বার্থে বিভক্ত না করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, অনেকে ৫ আগস্টের শহিদদের নিজেদের দলের দাবি করে, ভাগাভাগি করে নেয়। আমরা এ কাজ করব না।আমরা মনে করি শহিদেরা জাতীয় সম্পদ, তাদের দলের ভিত্তিতে ভাগ করতে চাই না।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘৫ আগস্টের পর যদি বাংলাদেশ পুরোপুরি ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়ে যেত, তাহলে পরবর্তী সময়ে এত আন্দোলনের দরকার হতো না। কিন্তু ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি বলেই এ যুদ্ধ চলছে।’

তিনি অভিযোগ করেন যে, ‘আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অবনতির দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় যদি বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয়, তাহলে নির্বাচন একদম খতম হয়ে যাবে। বিশৃঙ্খলা বাড়বে, রক্তের বন্যায় বাংলাদেশ ভেসে যাবে। আমরা তা চাই না। আমরা চাই প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে তারপর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।’

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদগুলো আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। তারা নিজেদের নিকট আত্মীয়দের জোরপূর্বক নির্বাচিত করে দখল করে রেখেছিল। এখন দেশের পরিস্থিতি পরিবর্তনের পর চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এত মানুষের দায়িত্ব প্রশাসনের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। জনগণ যাদের প্রতিনিধি হিসেবে মানে না, তারা এখন ঘুষের হার বাড়িয়ে মানুষকে আরও হয়রানি করছে। ফলে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, সিটি করপোরেশন ও জেলা পরিষদ ভেঙে যাওয়ায় প্রতিদিন জনদুর্ভোগ বাড়ছে। আমাদের রাজনীতি জনগণের দুর্ভোগ বাড়ানোর জন্য নয়, বরং জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য।

তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে, ‘আমরা যদি দেশ পরিচালনার সুযোগ পাই, তাহলে নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি পেশাগত দক্ষতার ওপর জোর দেব। যেন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ করার সঙ্গে সঙ্গেই চাকরির সুযোগ পায়।’

নারীদের প্রতি ভীতি প্রদর্শনকারীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘কিছু লোক প্রচার করে যে দেশে কোরআনের শাসন হলে নারীদের ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হবে না। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রচারণা। আমাদের পরিবারে মা-বোনেরা ইসলাম মেনে সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে, এটা বন্ধ করার জন্যই এসব ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘যে জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাদের মাথার ওপর কেউ আধিপত্য বিস্তার করতে পারে না। আমরা এমন একটি সম্মানের স্বাধীন বাংলাদেশ চাই যেখানে জনগণের ঐক্য অটুট থাকবে।’

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০৬:৪৫:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৩৩

আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই যেখানে কাস্ট হওয়া ভোটের অনুপাতে সংসদের আসন বন্টিত হবে : ডা. শফিকুর রহমান

আপডেট: ০৬:৪৫:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদকঃডোমারের পথসভায় নির্বাচনের বিষয়ে জামায়াতের আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই, যেখানে কাস্ট হওয়া ভোটের অনুপাতে সংসদে আসন বণ্টন হবে। এতে ছোট দলগুলোকেও কারও করুণার পাত্র হতে হবে না। তারা যথাযথভাবে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে।’

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নীলফামারীর ডোমার উপজেলা পরিষদ মাঠে উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে সভাপতিত্ব করেন ডোমার উপজেলা জামায়াতের আমির খন্দকার আহমাদুল হক মানিকের। নীলফামারী জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আন্তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত পথসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম, অঞ্চল টিম সদস্য মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ, নীলফামারী জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার প্রমুখ।

শহিদদের দলীয় স্বার্থে বিভক্ত না করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, অনেকে ৫ আগস্টের শহিদদের নিজেদের দলের দাবি করে, ভাগাভাগি করে নেয়। আমরা এ কাজ করব না।আমরা মনে করি শহিদেরা জাতীয় সম্পদ, তাদের দলের ভিত্তিতে ভাগ করতে চাই না।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘৫ আগস্টের পর যদি বাংলাদেশ পুরোপুরি ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়ে যেত, তাহলে পরবর্তী সময়ে এত আন্দোলনের দরকার হতো না। কিন্তু ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি বলেই এ যুদ্ধ চলছে।’

তিনি অভিযোগ করেন যে, ‘আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অবনতির দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় যদি বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয়, তাহলে নির্বাচন একদম খতম হয়ে যাবে। বিশৃঙ্খলা বাড়বে, রক্তের বন্যায় বাংলাদেশ ভেসে যাবে। আমরা তা চাই না। আমরা চাই প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে তারপর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।’

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদগুলো আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। তারা নিজেদের নিকট আত্মীয়দের জোরপূর্বক নির্বাচিত করে দখল করে রেখেছিল। এখন দেশের পরিস্থিতি পরিবর্তনের পর চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এত মানুষের দায়িত্ব প্রশাসনের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। জনগণ যাদের প্রতিনিধি হিসেবে মানে না, তারা এখন ঘুষের হার বাড়িয়ে মানুষকে আরও হয়রানি করছে। ফলে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, সিটি করপোরেশন ও জেলা পরিষদ ভেঙে যাওয়ায় প্রতিদিন জনদুর্ভোগ বাড়ছে। আমাদের রাজনীতি জনগণের দুর্ভোগ বাড়ানোর জন্য নয়, বরং জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য।

তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে, ‘আমরা যদি দেশ পরিচালনার সুযোগ পাই, তাহলে নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি পেশাগত দক্ষতার ওপর জোর দেব। যেন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ করার সঙ্গে সঙ্গেই চাকরির সুযোগ পায়।’

নারীদের প্রতি ভীতি প্রদর্শনকারীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘কিছু লোক প্রচার করে যে দেশে কোরআনের শাসন হলে নারীদের ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হবে না। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রচারণা। আমাদের পরিবারে মা-বোনেরা ইসলাম মেনে সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে, এটা বন্ধ করার জন্যই এসব ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘যে জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাদের মাথার ওপর কেউ আধিপত্য বিস্তার করতে পারে না। আমরা এমন একটি সম্মানের স্বাধীন বাংলাদেশ চাই যেখানে জনগণের ঐক্য অটুট থাকবে।’