০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

এবারের নববর্ষে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক আমাদের অঙ্গীকার: প্রধান উপদেষ্টা

নিউজ ডেস্ক

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে। এ সুযোগ যেন আমরা না হারাই। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের নববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার।”

বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বা পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।

নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দেশবাসীকে নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “পহেলা বৈশাখ সম্প্রীতির দিন, মহামিলনের দিন। আজকে সবাইকে আপন করে নেয়ার দিন। এবারের নববর্ষ, নতুন বাংলাদেশের প্রথম নববর্ষ। আসুন, আমরা বিগত বছরগুলোর গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে, নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে চলি। চলুন, নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি।”

বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় এবং তা এগিয়ে যাওয়ায় আমাদের সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের এসব ঐতিহ্য শুধু যেন নিজেদের মধ্যেই না থাকে, আমাদের সংস্কৃতি যেন আমরা ছড়িয়ে দিতে পারি বিশ্ব দরবারে। বছরের এই দিনটিতে আমরা সুযোগ পাই আমাদের সুদীর্ঘ ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে উৎসবমুখর পরিবেশে তুলে ধরতে এবং পৃথিবীর সামনে তুলে ধরতে।”

তিনি বলেন, “পহেলা বৈশাখ আমাদের প্রাণের উৎসব, বাঙালির সার্বজনীন উৎসব। পুরো পৃথিবীতে যেখানে যেখানে বাঙালিরা আছেন আজ আমাদের সবার আনন্দের দিন, বর্ষবরণের দিন।”

‘ফসলি সন’ এর ইতিহাস তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলা সাল গণনা শুরু হয়েছিল কৃষিকাজের সুবিধার জন্য, ‘ফসলি সন’ হিসেবে। এখনো এদেশের কৃষকরা বাংলা তারিখের হিসেবেই বীজ বোনেন, ফসল তোলেন।

বাংলা নববর্ষের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ‘হালখাতা’ উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এখনকার আধুনিক সময়েও এখনো এই হালখাতার ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন বাংলাদেশের হাটে বাজারে শহরে বন্দরে। নববর্ষের বৈশাখী মেলায় বাংলাদেশের জেলায় জেলায় উদ্যোক্তারা সারা দেশে ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি, মাটির হাঁড়ি-পাতিল, খেলনা, হাতপাখা ইত্যাদি তৈরি করে নিজেদের সৃজনশীলতাকে তুলে ধরেন এই দিনকে উপলক্ষ করে।”

তিনি আরও বলেন, “পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীও চৈত্র সংক্রান্তি ও নববর্ষে এবার বড় পরিসরে উৎসব উদযাপন করেছেন।”

দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “নববর্ষ ১৪৩২ আমাদের সবার জন্য শুভদিনের সূচনা করুক। নববর্ষ ১৪৩২ আমাদের সকলের জন্য নতুন ও গভীর আনন্দের উন্মোচন করুক— এই কামনা করছি।”

তিনি নববর্ষের সকল আয়োজন ও উদ্যোগের সাফল্য কামনা করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০১:১০:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
৪৬

এবারের নববর্ষে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক আমাদের অঙ্গীকার: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট: ০১:১০:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে। এ সুযোগ যেন আমরা না হারাই। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের নববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার।”

বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বা পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।

নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দেশবাসীকে নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “পহেলা বৈশাখ সম্প্রীতির দিন, মহামিলনের দিন। আজকে সবাইকে আপন করে নেয়ার দিন। এবারের নববর্ষ, নতুন বাংলাদেশের প্রথম নববর্ষ। আসুন, আমরা বিগত বছরগুলোর গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে, নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে চলি। চলুন, নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি।”

বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় এবং তা এগিয়ে যাওয়ায় আমাদের সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের এসব ঐতিহ্য শুধু যেন নিজেদের মধ্যেই না থাকে, আমাদের সংস্কৃতি যেন আমরা ছড়িয়ে দিতে পারি বিশ্ব দরবারে। বছরের এই দিনটিতে আমরা সুযোগ পাই আমাদের সুদীর্ঘ ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে উৎসবমুখর পরিবেশে তুলে ধরতে এবং পৃথিবীর সামনে তুলে ধরতে।”

তিনি বলেন, “পহেলা বৈশাখ আমাদের প্রাণের উৎসব, বাঙালির সার্বজনীন উৎসব। পুরো পৃথিবীতে যেখানে যেখানে বাঙালিরা আছেন আজ আমাদের সবার আনন্দের দিন, বর্ষবরণের দিন।”

‘ফসলি সন’ এর ইতিহাস তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলা সাল গণনা শুরু হয়েছিল কৃষিকাজের সুবিধার জন্য, ‘ফসলি সন’ হিসেবে। এখনো এদেশের কৃষকরা বাংলা তারিখের হিসেবেই বীজ বোনেন, ফসল তোলেন।

বাংলা নববর্ষের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ‘হালখাতা’ উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এখনকার আধুনিক সময়েও এখনো এই হালখাতার ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন বাংলাদেশের হাটে বাজারে শহরে বন্দরে। নববর্ষের বৈশাখী মেলায় বাংলাদেশের জেলায় জেলায় উদ্যোক্তারা সারা দেশে ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি, মাটির হাঁড়ি-পাতিল, খেলনা, হাতপাখা ইত্যাদি তৈরি করে নিজেদের সৃজনশীলতাকে তুলে ধরেন এই দিনকে উপলক্ষ করে।”

তিনি আরও বলেন, “পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীও চৈত্র সংক্রান্তি ও নববর্ষে এবার বড় পরিসরে উৎসব উদযাপন করেছেন।”

দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “নববর্ষ ১৪৩২ আমাদের সবার জন্য শুভদিনের সূচনা করুক। নববর্ষ ১৪৩২ আমাদের সকলের জন্য নতুন ও গভীর আনন্দের উন্মোচন করুক— এই কামনা করছি।”

তিনি নববর্ষের সকল আয়োজন ও উদ্যোগের সাফল্য কামনা করেন।