০১:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫

কেন খাবেন অশ্বগন্ধা?

নিউজ ডেস্ক

অশ্বগন্ধা এমন একটি ভেষজ যা নানা রোগের ওষুধের কাজ করে। এর ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। অশ্বগন্ধা মূলত ক্লান্তি, নানা ধরণের ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। অশ্বগন্ধার আরেক নাম এডাপ্টোজেন, এটি মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করে।

বর্তমানে এটি সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ভারত, পাকিস্তান, স্পেন, আফ্রিকা, মধ্য প্রাচ্য এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে। প্রাচীনকাল থেকেই এই গাছের ফল, বীজ, পাতা ও শিকড় আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

অশ্বগন্ধার উপকার বলে শেষ করা যাবে না। অশ্বগন্ধার উপকারিতা
১. শুক্রাণু তৈরিতে অশ্বগন্ধা খুব ভালো কাজ করে। এ গাছের রস শক্তি যোগাতেও সাহায্য করে।
২. অশ্বগন্ধার গুঁড়া খেলে ভালো ঘুম হয়।
৩. এটি সর্দি-কাশির সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
৪. চোখের ব্যথা দূর করতে বিশেষ উপকারী এটি।
৫. হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অশ্বগন্ধা অনেক উপকারী। পেট ফাঁপা এবং পেটের ব্যথা নিরাময় সহ যকৃতের জন্য ভীষণ উপকারী অশ্বগন্ধার ফল। তবে অশোধিত অশ্বগন্ধা গুঁড়ো বা পাউডার হজমে গোলমাল সৃষ্টি করতে পারে।
৬. অশ্বগন্ধায় অ্যানজাইলটিক উপাদান উপস্থিত থাকে বলে এটি মানসিক চাপকে কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে।
৭. অশ্বগন্ধা শরীরে টেস্টোস্টেরন ও প্রোজেস্টেরনের পরিমান বাড়াতে পারে। প্রাচীনকাল থেকেই ছেলেদের যৌনসমস্যা দূর করতে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করা হয়।
৮. অশ্বগন্ধায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান থাকার ফলে এটি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনেক সাহায্য করে।
৯. হাইপোথাইরয়েডের অর্থাৎ যাদের শরীরে থাইরয়েড হরমোনের পরিমান কম থাকে তাদের এই সমস্যা দূর করতে ব্যবহৃত হয় অশ্বগন্ধা। শরীরে থাইরক্সিন হরমোনের পরিমান বাড়ায় এই অশ্বগন্ধা।
১০. আর্থ্রাইটিস এর ব্যথার তীব্রতা কমাতে অশ্বগন্ধার গুঁড়ো খুবই উপযোগী। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে আর্থ্রাইটিস সারাতে অশ্বগন্ধা ব্যবহৃত হয়।
সাম্প্রতিক সময়

অশ্বগন্ধার পুষ্টিগুণ
অশ্বগন্ধার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানলে আপনি হয়তো আজ থেকেই উপকারী এই ভেষজের ব্যাবহার শুরু করে দেবেন। সম্মানিত পাঠক, এবার চলুন প্রতি ১০০ গ্রাম অশ্বগন্ধা মুলের মধ্যে যে পরিমাণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা আপনার সুবিধার্থে নিচে একটি ছকের মাধ্যমে দেখানো হল–

ক্যালরি ২৪৫ ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ৩২ গ্রাম, ফ্যাট ০.৩ গ্রাম, প্রোটিন ৩.৯ গ্রাম, ডায়েটারি ফাইবার ১৩ গ্রাম
ভিটামিন সি ৩.৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ২.০ আইইউ, ক্যালসিয়াম ২৩ মিলিগ্রাম, আয়রন ৩.৩ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম ৪৫৩ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৭৮ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ৫০ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৫.৪ মিলিগ্রাম।

অশ্বগন্ধা খেলে কি হয়
অশ্বগন্ধা খেলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়, অশ্বগন্ধা আলসার প্রতিরোধেও সাহায্য করে। এতে ক্যান্সার প্রতিরোধক গুণও রয়েছে, যা ক্যান্সার কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপির সংযোজন হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। পারকিনসন্স, আলঝেইমার রোগের মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগে আক্রান্তদের জন্যও অশ্বগন্ধার ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে বলে জানা যায়।

এছাড়াও, অশ্বগন্ধা মানসিক চাপ কমাতে এবং ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। অশ্বগন্ধা শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি এবং যৌন স্বাস্থ্য উন্নত করতেও সাহায্য করে বলে প্রমাণিত হয়েছে।

অশ্বগন্ধা খেলে ছেলে এবং মেয়েদের বিভিন্ন শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা ভালো হয়ে যায়। যেমনঃ

যৌন চাহিদা বাড়ে, মানসিক চাপ বা স্ট্রেস কমে, শুক্রাণু বৃদ্ধি পায়, পিরিয়ড সমস্যা নিরাময় করে, পেশি শক্তি বাড়ে,শরীরের শক্তি বাড়ে, পুরুষ মহিলা বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দূর হয়, বেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, মানুষের চাপ কমে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বক চুল সুন্দর রাখে, থাইরয়েডের সমস্যা দূর হয়, ভালো ঘুম হয়, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখে ইত্যাদি।

ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা
ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা অনেক যা বলে শেষ করা সম্ভব নয়। সমস্ত ভেষজ উদ্ভিদের মধ্যে অশ্বগন্ধা অন্যতম প্রধান যা পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত অশ্বগন্ধা সেবনে পুরুষদের মধ্যে শুধু যৌন ইচ্ছা বাড়ায় না, শুক্রাণু সংখ্যা এবং টেস্টোটেরনের হার বৃদ্ধিতে এটি কার্যকরী হয়। অশ্বগন্ধার এই যে চাঙা করার উপকারিতা আছে তা পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্য উন্নয়নের সময় দেখা যায়।

কারণ এটি শক্তি এবং পৌরুষত্ব বৃদ্ধি করে বলে যৌনক্রিয়ার উন্নতি হয়। অশ্বগন্ধা বিভিন্নভাবে গ্রহণ করা যেতে পারে, যেমন পাউডার, ক্যাপসুল, বা চা হিসেবে। এর পাউডার গরম দুধ বা পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়। এছাড়াও ক্যাপসুল আকারে বাজারে পাওয়া যায়, যা প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় সেবন করা যায়। ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা থাকে তা হলো-

কাম উত্তেজনা সৃষ্টিতে সহায়কঃ প্রাচীনকাল থেকে অশ্বগন্ধা একটি আফ্রোডাইজিয়াক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিংবদন্তি শাস্ত্র কামসূত্রে অশ্বগন্ধাকে অত্যন্ত শক্তিশালী যৌন উত্তেজক ভেষজ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি যৌন আকাঙ্খা কমে যাওয়া ও ইরেকটাইল ডিসফাংশনের চিকিৎসায় কার্যকরী।

যৌনক্ষমতা বাড়ায়ঃ পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতিতে অশ্বগন্ধা বিশেষভাবে কার্যকর। অশ্বগন্ধা পুরুষ এবং নারীদের যৌনক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং পুরুষদের সাইকোজেনিক কারনে লিঙ্গ উচ্ছৃত না হলে তার চিকিৎসা করলে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যায়।

শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করেঃ প্রতিদিনের কর্মব্যস্ত জীবনে ছেলেদের জন্য শারীরিক শক্তি অপরিহার্য। অশ্বগন্ধা শরীরের শক্তি বাড়াতে এবং ক্লান্তি দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। শরীরচর্চা বা শারীরিক পরিশ্রমের পর দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে, যা ছেলেদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

রক্তে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ায়ঃ অশ্বগন্ধা রক্তে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়াতে সাহায্য করে। টেস্টোস্টেরন পুরুষের যৌন হরমোন যা যৌন আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি করে।

সহনশীলতা বাড়ায়ঃ অশ্বগন্ধা শারীরিক পারফরম্যান্স উন্নত করতে ও যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও কাজ করে। নিয়মিত সেবনের ফলে ধৈর্য্যশীলতা, শারীরিক ক্রিয়াকলাপ ও সহনশীলতা বাড়ে।

অনিদ্রা দূর করেঃ ক্লান্তি দূর করে স্নায়ুকে আরাম প্রদান করতে খুবই কার্যকরী একটি ঔষধি ভেষজ হচ্ছে অশ্বগন্ধা । এর ফলে ঘুম ভালো হয়। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, অশ্বগন্ধা ব্যবহার করলে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।

স্ট্রেস কমায়ঃ অশ্বগন্ধায় অ্যানজাইলটিক উপাদান থাকে যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এটি স্নায়ুতন্ত্রের ওপর কাজ করতে সক্ষম। আপনি যদি খুব ভয় পান কোনো কারণে, তাহলে প্যানিক অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই সমস্যা এড়াতে অশ্বগন্ধা সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়ঃ অশ্বগন্ধা একটি প্রাচীন ভেষজ উদ্ভিদ যা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় বহু বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর মধ্যে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

থাইরয়েডের সমস্যা কমাতেঃ হাইপোথাইরয়েড রোগীদের জন্য অশ্বগন্ধা প্রয়োজন, যারা থাইরয়েড হরমোনের অভাবে আক্রান্ত। এটি তাদের শরীরে থাইরক্সিন হরমোনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।

চোখের সমস্যা কমাতেঃ প্রাচীনকালে চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করা হত। এখনও চোখের সমস্যার জন্য অশ্বগন্ধা অনেকে ব্যবহার করেন।

আর্থ্রাইটিস সারাতেঃ অর্থ্রাইটিসের ব্যথার মাত্রা কমাতে অশ্বগন্ধার খুব গুরুত্বপূর্ণ। আয়ুর্বেদে অর্থ্রাইটিস সম্পূর্ণ চিকিৎসায় অশ্বগন্ধা ব্যবহৃত হয়।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করতেঃ অশ্বগন্ধা ক্যান্সারের প্রতিরোধক হিসেবে কার্যকর। এর পাতার ও মূলের নির্যাস টিউমার কোষ ধ্বংস করে ও সেই কোষে রক্ত সরবারহ বন্ধ করে দেয়।

ডায়াবেটিসের সমস্যা কমাতেঃ অশ্বগন্ধার মূল ও পাতার নির্যাস অ্যান্টিডায়াবেটিক উপাদান থাকে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়াতে ও লিপিডের পরিমান ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

স্মৃতিশক্তি উন্নত করেঃ অ্যালজাইমারস রোগীদের অবস্থার উন্নতিতে অশ্বগন্ধা কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে, অশ্বগন্ধার বিভিন্ন সক্রিয় উপাদান মস্তিষ্কের কোষের ক্ষয় রোধ করতে এবং নিউরোনাল সংযোগ উন্নত করতে সাহায্য করে।

পেশী মজবুত করেঃ অশ্বগন্ধা পেশী মজবুত করতে অত্যন্ত কার্যকরী। এটি প্রাচীন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত একটি ঔষধি গাছ, যা মূলত পেশী শক্তিশালী করতে, পেশীর আঘাত সারাতে এবং ব্যায়ামের ফলে পেশীতে সৃষ্ট চাপ কমাতে ব্যবহৃত হয়।

ইনফেকশন থেকে বাঁচতেঃ অশ্বগন্ধার পাতা ও মূলে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকায় এটি নানা ধরণের ইনফেকশন থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে।

হার্টেকে সুরক্ষা রাখতেঃ অশ্বগন্ধা রক্ত চলাচল সঠিক রেখে হার্টকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে। এটি প্রাচীন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ, যা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।

ওজন বৃদ্ধি করতেঃ অনেকে মনে করেন অশ্বগন্ধার মূলের গুঁড়ো ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, তবে এটি এখনও প্রমাণিত হয়নি। অশ্বগন্ধা মূলত শরীরের সার্বিক স্বাস্থ্য উন্নতিতে একটি ঔষধি উপাদান।

মেয়েদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা
ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতার পাশাপাশি মহিলাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অশ্বগন্ধার উপকারিতা হল শরীরে হরমোনের মাত্রা ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করা।

হরমোনগুলি ছোট বার্তাবাহকের মতো যা আমাদের শরীরের অনেকগুলি ফাংশন যেমন মেজাজ, শক্তি এবং প্রজনন নিয়ন্ত্রণ করে। যখন আমাদের হরমোন ভারসাম্যের বাইরে থাকে, তখন এটি ক্লান্তি, মেজাজের পরিবর্তন এবং অনিয়মিত পিরিয়ডের মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

জেনে রাখো মেয়েদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা গুলো।

বেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, থাইরয়েডের সমস্যায় উপকারী, ত্বক চুলের যত্ন, মাসিক চক্র নিয়মিত করতে সাহায্য কর, যৌন উত্তেজক হিসেবে কাজ করে।

বর্তমানে মেয়েরা বেস্ট ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে থাকে সেজন্য বেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে নিয়মিত অশ্বগন্ধা খেতে পারেন এটা ভালো উপকারী। এছাড়া সকল ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে চাইলে এই অশ্বগন্ধা খেতে পারেন।

১। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে

বর্তমানে মেয়েরা বিভিন্ন কারণে বিভিন্নভাবে মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যায়। ভারতের একটি মানুষের চাপের ফলে বিভিন্ন রকম সমস্যা সৃষ্টি হয়। মানুষের চাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে হলে নিয়মিত অশ্বগন্ধা খেতে পারেন।

২। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য অবশ্যই আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকতে হবে। রোগ ক্ষমতা বেশি না থাকলে বিভিন্ন রকম রোগে আক্রমণ করে। আমাদের বিভিন্ন রকম ক্ষতি হতে পারে তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অশ্বগন্ধা খেতে পারেন।

৩। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে

বর্তমানে অনেক মেয়েরা বা অনেক মানুষজন বয়স একটু বেশি হলে বা ওজন বেশি হলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ডায়াবেটিসের আক্রান্ত হলে স্বাভাবিক মানুষের মত জীবন যাপন করা যায় না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাইলে অবশ্যই নিয়মিত সময় অশ্বগন্ধা খেতে পারেন।

৪। থাইরয়েডের এর সমস্যায় উপকারী
বর্তমানে অনেক মেয়েরা থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগে থাকেন কিন্তু বুঝতে পারে না কিভাবে সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। থেকে মুক্তি পেতে চাইলে অবশ্যই অশ্বগন্ধা খেতে পারেন আশা করি তাড়াতাড়ি মুক্তি পাবেন।

ত্বক ও চুলের যত্ন

৫। সব মেয়েরা চায় তাদের চুল এবং ত্বক সব সময় সুন্দর থাকো এবং পরিপাটি থাকবে। কিন্তু বিভিন্ন কারণ ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে ত্বক ও চুলের চুলের সৌন্দর্য ধরে রাখতে আপনি অশ্বগন্ধা ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া যেসব মহিলাদের নিয়মিত পিরিয়ড হয়না বা হরমোন জনিত সমস্যার কারণে।

৬। মাসিক চক্র নিয়মিত করতে সাহায্য করে

মহিলাদের ক্ষেত্রে বিলম্বিত বা অনিয়মিত পিরিয়ড, পিরিয়ডের ব্যথা, প্রজনন সমস্যা বা মেনোপজের সময় পরিবর্তন হওয়া সাধারণ ব্যাপার। স্ট্রেস এই সমস্যাগুলি আরও খারাপ করতে পারে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সাধারণত দায়ী, যা এমনকি গর্ভাবস্থায় জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

৭। যৌন উত্তেজক হিসেবে কাজ করে

ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতার পাশাপাশি, অশ্বগন্ধা এমন মহিলাদের সাহায্য করে, যাদের যৌন জীবনে সমস্যা রয়েছে। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে এটি চালু করা, প্রচণ্ড উত্তেজনায় পৌঁছানো এবং তেলতেলে থাকা সহজ হতে পারে। এটি মানসিক চাপের সাথেও সাহায্য করে, আপনাকে একটি ভাল মেজাজে রাখে এবং রক্ত​​​​প্রবাহ উন্নত করে, যা যৌনতাকে আরও ভাল করতে পারে।

গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অশ্বগন্ধা
গর্ভবতী মহিলাদের অশ্বগন্ধার মতো সম্পূরকগুলি সহ তারা কী গ্রহণ করে সে সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। যদিও এটি সাধারণত বেশিরভাগ মানুষের জন্য নিরাপদ বলে বিবেচিত হয় যখন উপযুক্ত মাত্রায় নেওয়া হয়। ফলস্বরূপ, এটি প্রায়শই সুপারিশ করা হয় যে গর্ভবতী মহিলাদের অশ্বগন্ধা বা অন্য কোনও ভেষজ পরিপূরকগুলি এড়িয়ে চলুন যদি না তাদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর দ্বারা বিশেষভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়।

অশ্বগন্ধা স্ট্রেস এবং উদ্বেগ কমানোর জন্য সম্ভাব্য সুবিধা থাকতে পারে, যা গর্ভাবস্থায় আগ্রহের বিষয় হতে পারে, তবে মা এবং বিকাশমান ভ্রূণ উভয়ের জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকির বিরুদ্ধে এই সম্ভাব্য সুবিধাগুলিকে ওজন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পরিশেষে, আপনি যদি গর্ভবতী হন এবং অশ্বগন্ধা বা অন্য কোন ভেষজ সম্পূরক গ্রহণ করার কথা বিবেচনা করেন, তাহলে আপনার ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য অবস্থা এবং প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং সুবিধাগুলি নিয়ে আলোচনা করার জন্য প্রথমে আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে পরামর্শ করা ভাল।

অশ্বগন্ধা পাউডার এর উপকারিতা
অশ্বগন্ধার পাউডার খেলে যেসব উপকার পাওয়া যায় সেগুলোর তালিকা আমরা পোষ্টের এই অংশে তুলে ধরব। অশ্বগন্ধা পাউডার এর উপকারিতাগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ

যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে: আপনার যদি যৌন শক্তি বৃদ্ধি করতে চান তাহলে আপুনি চাইলে বাজার থেকে অশ্বগন্ধা পাউডার ক্রয় করে নিয়মিত কিছুদিন সেবন করতে পারেন। আশা করা যায় ভালো ফলাফল পাবেন।

শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে: আমাদের অনেকেরই শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করার দরকার হয় সেক্ষেত্রে আপনি যদি নিয়মিত অশ্বগন্ধা পাউডার সেবনব করেন তাহলে দীর্ঘ সময় কাজ করার এনার্জি পাওয়া যায়। তাই আপনি যদি এমন কোন কাজের সাথে যুক্ত থাকেন যা করতে প্রচুর পরিমাণে এনার্জির প্রয়োজন হয় তাহলে নিয়মিত অশ্বগন্ধা সেবন করতে পারেন।

কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়: রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে চাইলে আপনাকে নিয়মিত কিছুদিন অশ্বগন্ধার পাউডার সেবন করতে হবে। আপনি যদি নির্দিষ্ট নিয়মে অশ্বগন্ধার পাউডার সেবন করেন তাহলে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে আসবে।

হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চাইলে আপনাকে নিয়মিত অশ্বগন্ধার সেবন করতে হবে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অশ্বগন্ধার গুড়া হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাই আপনি যদি আপনার হার্ট সুস্থ রাখতে চান সে ক্ষেত্রে নিয়মিত অশ্বগন্ধার গুঁড়ো খেতে পারেন।

অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সহায়তা করে: শরীরের অতিরিক্ত চর্বি দূর করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে অশ্বগন্ধা। অশ্বগন্ধা সেবন করার ফলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ঝরে যায়। অশ্বগন্ধায় থাকা ভেষজ উপাদান শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে সহায়তা করে। তাই চাইলে আপনি কিছুদিন অশ্বগন্ধার গুড়া সেবন করে আপনার শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ঝরিয়ে ফেলতে পারেন।

হাড় গঠনে সহায়তা করে: অশ্বগন্ধা সেবন করলে হাড় মজবুত হয়। এবং হাড়ের সঠিক বৃদ্ধি ঘটে। আর এ কারণেই অনেকে লম্বা হওয়ার জন্য অশ্বগন্ধার গুড়া সেবন করে থাকেন। বলা হয় যদি কোন ব্যক্তি তার উচ্চতা বৃদ্ধি করতে চায় তাহলে, তাকে একটানা তিন মাস অশ্বগন্ধার গুড়া সেবন করতে হবে। তিন মাস যদি নিয়মিতভাবে অশ্বগন্ধার সেবন করা যায় তাহলে, সঠিকভাবে হার গঠন হওয়ার কারণে কিছুটা লম্বা হওয়া সম্ভব।

ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধা খাওয়ার নিয়ম
অনেক ছেলেরাই আছেন যারা জানেন না অশ্বগন্ধা কিভাবে খাব। কিংবা অশ্বগন্ধা খাওয়ার নিয়ম কি। ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধা খাওয়ার নিয়ম জেনে খাওয়া উচিৎ। কেননা, প্রতিটি জিনিসের ভাল ফল পেতে অবশ্যই নিয়ম মেনে পরিমিত করে খেতে হবে। খাওয়ার নিয়ম না জানা থাকলে সেটা উপকারের পরিবর্তে ক্ষতি করে থাকে। তাই খাওয়ার আগে অবশ্যই নিয়ন জানা জরুরি।

অশ্বগন্ধা খাওয়ার নিয়ম হলো এক কাপ চা, দুধ, বা মধুর সাথে ১ থেকে ২ চা চামচ অশ্বগন্ধা গুড়া মিশিয়ে খাওয়া। এটি সেবনে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং মন ও শরীরকে প্রশান্ত করে। আরও অশ্বগন্ধা খাওয়ার নিয়ম হলো অশ্বগন্ধার গুড়া মধু বা বাদামের সাথে মিশিয়ে ঘুমের টনিক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে, যা রাতের ঘুমকে গভীর ও প্রশান্তিময় করে তোলে।

এতে চাপ এবং দুশ্চিন্তা কমে যায়, ফলে আপনি সকালে উঠে সতেজ অনুভব করবেন। অশ্বগন্ধা গুড়া শুধু সেবন নয়, বাহ্যিকভাবেও কার্যকর।অশ্বগন্ধার শেকড় এবং গুঁড়া দুইভাবেই খাওয়া যায়। তবে এখন অশ্বগন্ধা গুঁড়া খাওয়ার প্রচলন সবচেয়ে বেশি। কারণ বাজারে শেকড়ের থেকে গুঁড়া বেশি দেখা যায়। ভালো ফল পেতে প্রতিদিন ৪-৫ গ্রাম অর্থাৎ ১ চামচ অশ্বগন্ধা গুঁড়া খেতে পারেন।

আপনি চাইলে এটি কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে, হালকা গরম দুধে মিশিয়ে অথবা মধু মিশিয়েও খেতে পারেন। প্রতিদিন সকালে ১ চামচ অথবা ১/২ চামচ আর রাতে ঘুমানোর আগে ১/২ চামচ করে খেতে পারেন। তবে আপনার সমস্যার উপর ভিত্তি করে বিশেষজ্ঞ একজন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অশ্বগন্ধা খাওয়া সবথেকে নিরাপদ।

আর ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধা পাউডার খাওয়ার খাওয়ার সঠিক নিয়ম সমূহ নিচে উল্লেখ করা হলঃ

এক কাপ চা বা দুধ বা মধুর সঙ্গে ১-২ চা চামচ অশ্বগন্ধা গুড়া মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
সকালে খালি পেটে পানিতে গুলিয়ে সেই পানি খেতে পারেন
মধু বা বাদামের সাথে মিশিয়ে খেলে ঘুমের টনিক হিসেবে কাজ করে। এতে মানুষিক চাপ এবং দুশ্চিন্তা অনেকটাই কমে যায়।
অশ্বগন্ধা গুড়া অল্প পানিয়ে গুলিয়ে মলমের মতো করে ক্ষত বা প্রদাহের স্থানে প্রলেপ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
অশ্বগন্ধা ক্যাপসুল সকালে খাবার পরে একটি ও রাতে ঘুমানোর আগে একটি করে খাওয়া যেতে পারে। তবে ডাক্তার এর পরামর্শ মেনে খেতে হবে।
অশ্বগন্ধা গুড়া মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে যৌন স্বাস্থ্যের জন্য সব চেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

অশ্বগন্ধার আসল উপকারিতা এর মূল তথা শিকড়ে। তাই এটির মূল বেঁটে রস খেতে পারেন।

অশ্বগন্ধার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
অশ্বগন্ধার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জেনে নিন। সাধারণত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো হালকা এবং এর মধ্যে রয়েছে পেট খারাপ হালকা মল বমি বমি ভাব এবং তন্দ্রা যাই হোক বহু মাস বা বছর ধরে দীর্ঘমেয়াদি অশ্বগন্ধার ব্যবহারে সুরক্ষার প্রমাণের অভাব রয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করলে শরীরে উষ্ণতা বেড়ে যেতে পারে, যা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। নিজের খাদ্যাভ্যাসে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করতে চাইলে রেজিস্ট্রিকৃত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যে ওষুধ আপনি ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছেন তার প্রতিক্রিয়ার ওপর এটি প্রভাব ফেলতে পারে।

যেমন, যিনি রক্তে শর্করা কমানোর ওষুধ নিয়ে থাকেন তিনি অশ্বগন্ধা ব্যবহার করলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি নেমে যেতে পারে। অশ্বগন্ধা রক্ত পাতলা করে এবং এটি অ্যান্টিকোঅ্যাগুলেন্ট হিসেবে কাজ করে, কাজেই আপনার শরীরে যদি সার্জারি থাকে বা আপনার শরীরে সাম্প্রতিককালে সার্জারি হয়ে থাকে তাহলে এটি ব্যবহার করা উচিত নয়। যদি আপনি রক্ত পাতলা করার ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন।

অতিরিক্ত মাত্রায় অশ্বগন্ধা গ্রহণ করলে কিছু ক্ষেত্রে হ্যালুসিনেশন এবং বিভ্রান্তির মতো মানসিক সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও, দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে পেটের সমস্যা, ডায়রিয়া, এবং বমির সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অশ্বগন্ধার মধ্যে থাকা সক্রিয় উপাদানগুলি কিছু মানুষের ক্ষেত্রে অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। তাই প্রথমবার ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকুন এবং কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে অবিলম্বে ব্যবহার বন্ধ করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

যেসব মায়েরা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ান তাদের ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা না খাওয়াই উত্তম।

অশ্বগন্ধা পাউডারের দাম কত
অশ্বগন্ধা পাউডার দাম কত সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। অশ্বগন্ধা পাউডারের দাম বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। যেমন অনলাইনে মাধ্যমে অনেকে অশ্বগন্ধা পাউডার বিক্রি করে থাকে।

আপনি যদি তাদের কাছ থেক কিনতে চান তাহলে ১০০ গ্রাম অশ্নগন্ধা পাউডার দাম ১৫০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। আর এক কেজি অষ্ট গন্ধা পাউডার দাম দেড় হাজার থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ১১:৫০:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
১৪

কেন খাবেন অশ্বগন্ধা?

আপডেট: ১১:৫০:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

অশ্বগন্ধা এমন একটি ভেষজ যা নানা রোগের ওষুধের কাজ করে। এর ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। অশ্বগন্ধা মূলত ক্লান্তি, নানা ধরণের ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। অশ্বগন্ধার আরেক নাম এডাপ্টোজেন, এটি মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করে।

বর্তমানে এটি সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ভারত, পাকিস্তান, স্পেন, আফ্রিকা, মধ্য প্রাচ্য এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে। প্রাচীনকাল থেকেই এই গাছের ফল, বীজ, পাতা ও শিকড় আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

অশ্বগন্ধার উপকার বলে শেষ করা যাবে না। অশ্বগন্ধার উপকারিতা
১. শুক্রাণু তৈরিতে অশ্বগন্ধা খুব ভালো কাজ করে। এ গাছের রস শক্তি যোগাতেও সাহায্য করে।
২. অশ্বগন্ধার গুঁড়া খেলে ভালো ঘুম হয়।
৩. এটি সর্দি-কাশির সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
৪. চোখের ব্যথা দূর করতে বিশেষ উপকারী এটি।
৫. হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অশ্বগন্ধা অনেক উপকারী। পেট ফাঁপা এবং পেটের ব্যথা নিরাময় সহ যকৃতের জন্য ভীষণ উপকারী অশ্বগন্ধার ফল। তবে অশোধিত অশ্বগন্ধা গুঁড়ো বা পাউডার হজমে গোলমাল সৃষ্টি করতে পারে।
৬. অশ্বগন্ধায় অ্যানজাইলটিক উপাদান উপস্থিত থাকে বলে এটি মানসিক চাপকে কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে।
৭. অশ্বগন্ধা শরীরে টেস্টোস্টেরন ও প্রোজেস্টেরনের পরিমান বাড়াতে পারে। প্রাচীনকাল থেকেই ছেলেদের যৌনসমস্যা দূর করতে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করা হয়।
৮. অশ্বগন্ধায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান থাকার ফলে এটি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনেক সাহায্য করে।
৯. হাইপোথাইরয়েডের অর্থাৎ যাদের শরীরে থাইরয়েড হরমোনের পরিমান কম থাকে তাদের এই সমস্যা দূর করতে ব্যবহৃত হয় অশ্বগন্ধা। শরীরে থাইরক্সিন হরমোনের পরিমান বাড়ায় এই অশ্বগন্ধা।
১০. আর্থ্রাইটিস এর ব্যথার তীব্রতা কমাতে অশ্বগন্ধার গুঁড়ো খুবই উপযোগী। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে আর্থ্রাইটিস সারাতে অশ্বগন্ধা ব্যবহৃত হয়।
সাম্প্রতিক সময়

অশ্বগন্ধার পুষ্টিগুণ
অশ্বগন্ধার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানলে আপনি হয়তো আজ থেকেই উপকারী এই ভেষজের ব্যাবহার শুরু করে দেবেন। সম্মানিত পাঠক, এবার চলুন প্রতি ১০০ গ্রাম অশ্বগন্ধা মুলের মধ্যে যে পরিমাণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা আপনার সুবিধার্থে নিচে একটি ছকের মাধ্যমে দেখানো হল–

ক্যালরি ২৪৫ ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ৩২ গ্রাম, ফ্যাট ০.৩ গ্রাম, প্রোটিন ৩.৯ গ্রাম, ডায়েটারি ফাইবার ১৩ গ্রাম
ভিটামিন সি ৩.৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ২.০ আইইউ, ক্যালসিয়াম ২৩ মিলিগ্রাম, আয়রন ৩.৩ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম ৪৫৩ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৭৮ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ৫০ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৫.৪ মিলিগ্রাম।

অশ্বগন্ধা খেলে কি হয়
অশ্বগন্ধা খেলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়, অশ্বগন্ধা আলসার প্রতিরোধেও সাহায্য করে। এতে ক্যান্সার প্রতিরোধক গুণও রয়েছে, যা ক্যান্সার কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপির সংযোজন হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। পারকিনসন্স, আলঝেইমার রোগের মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগে আক্রান্তদের জন্যও অশ্বগন্ধার ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে বলে জানা যায়।

এছাড়াও, অশ্বগন্ধা মানসিক চাপ কমাতে এবং ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। অশ্বগন্ধা শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি এবং যৌন স্বাস্থ্য উন্নত করতেও সাহায্য করে বলে প্রমাণিত হয়েছে।

অশ্বগন্ধা খেলে ছেলে এবং মেয়েদের বিভিন্ন শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা ভালো হয়ে যায়। যেমনঃ

যৌন চাহিদা বাড়ে, মানসিক চাপ বা স্ট্রেস কমে, শুক্রাণু বৃদ্ধি পায়, পিরিয়ড সমস্যা নিরাময় করে, পেশি শক্তি বাড়ে,শরীরের শক্তি বাড়ে, পুরুষ মহিলা বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দূর হয়, বেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, মানুষের চাপ কমে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বক চুল সুন্দর রাখে, থাইরয়েডের সমস্যা দূর হয়, ভালো ঘুম হয়, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখে ইত্যাদি।

ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা
ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা অনেক যা বলে শেষ করা সম্ভব নয়। সমস্ত ভেষজ উদ্ভিদের মধ্যে অশ্বগন্ধা অন্যতম প্রধান যা পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত অশ্বগন্ধা সেবনে পুরুষদের মধ্যে শুধু যৌন ইচ্ছা বাড়ায় না, শুক্রাণু সংখ্যা এবং টেস্টোটেরনের হার বৃদ্ধিতে এটি কার্যকরী হয়। অশ্বগন্ধার এই যে চাঙা করার উপকারিতা আছে তা পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্য উন্নয়নের সময় দেখা যায়।

কারণ এটি শক্তি এবং পৌরুষত্ব বৃদ্ধি করে বলে যৌনক্রিয়ার উন্নতি হয়। অশ্বগন্ধা বিভিন্নভাবে গ্রহণ করা যেতে পারে, যেমন পাউডার, ক্যাপসুল, বা চা হিসেবে। এর পাউডার গরম দুধ বা পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়। এছাড়াও ক্যাপসুল আকারে বাজারে পাওয়া যায়, যা প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় সেবন করা যায়। ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা থাকে তা হলো-

কাম উত্তেজনা সৃষ্টিতে সহায়কঃ প্রাচীনকাল থেকে অশ্বগন্ধা একটি আফ্রোডাইজিয়াক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিংবদন্তি শাস্ত্র কামসূত্রে অশ্বগন্ধাকে অত্যন্ত শক্তিশালী যৌন উত্তেজক ভেষজ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি যৌন আকাঙ্খা কমে যাওয়া ও ইরেকটাইল ডিসফাংশনের চিকিৎসায় কার্যকরী।

যৌনক্ষমতা বাড়ায়ঃ পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতিতে অশ্বগন্ধা বিশেষভাবে কার্যকর। অশ্বগন্ধা পুরুষ এবং নারীদের যৌনক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং পুরুষদের সাইকোজেনিক কারনে লিঙ্গ উচ্ছৃত না হলে তার চিকিৎসা করলে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যায়।

শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করেঃ প্রতিদিনের কর্মব্যস্ত জীবনে ছেলেদের জন্য শারীরিক শক্তি অপরিহার্য। অশ্বগন্ধা শরীরের শক্তি বাড়াতে এবং ক্লান্তি দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। শরীরচর্চা বা শারীরিক পরিশ্রমের পর দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে, যা ছেলেদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

রক্তে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ায়ঃ অশ্বগন্ধা রক্তে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়াতে সাহায্য করে। টেস্টোস্টেরন পুরুষের যৌন হরমোন যা যৌন আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি করে।

সহনশীলতা বাড়ায়ঃ অশ্বগন্ধা শারীরিক পারফরম্যান্স উন্নত করতে ও যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও কাজ করে। নিয়মিত সেবনের ফলে ধৈর্য্যশীলতা, শারীরিক ক্রিয়াকলাপ ও সহনশীলতা বাড়ে।

অনিদ্রা দূর করেঃ ক্লান্তি দূর করে স্নায়ুকে আরাম প্রদান করতে খুবই কার্যকরী একটি ঔষধি ভেষজ হচ্ছে অশ্বগন্ধা । এর ফলে ঘুম ভালো হয়। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, অশ্বগন্ধা ব্যবহার করলে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।

স্ট্রেস কমায়ঃ অশ্বগন্ধায় অ্যানজাইলটিক উপাদান থাকে যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এটি স্নায়ুতন্ত্রের ওপর কাজ করতে সক্ষম। আপনি যদি খুব ভয় পান কোনো কারণে, তাহলে প্যানিক অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই সমস্যা এড়াতে অশ্বগন্ধা সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়ঃ অশ্বগন্ধা একটি প্রাচীন ভেষজ উদ্ভিদ যা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় বহু বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর মধ্যে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

থাইরয়েডের সমস্যা কমাতেঃ হাইপোথাইরয়েড রোগীদের জন্য অশ্বগন্ধা প্রয়োজন, যারা থাইরয়েড হরমোনের অভাবে আক্রান্ত। এটি তাদের শরীরে থাইরক্সিন হরমোনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।

চোখের সমস্যা কমাতেঃ প্রাচীনকালে চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করা হত। এখনও চোখের সমস্যার জন্য অশ্বগন্ধা অনেকে ব্যবহার করেন।

আর্থ্রাইটিস সারাতেঃ অর্থ্রাইটিসের ব্যথার মাত্রা কমাতে অশ্বগন্ধার খুব গুরুত্বপূর্ণ। আয়ুর্বেদে অর্থ্রাইটিস সম্পূর্ণ চিকিৎসায় অশ্বগন্ধা ব্যবহৃত হয়।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করতেঃ অশ্বগন্ধা ক্যান্সারের প্রতিরোধক হিসেবে কার্যকর। এর পাতার ও মূলের নির্যাস টিউমার কোষ ধ্বংস করে ও সেই কোষে রক্ত সরবারহ বন্ধ করে দেয়।

ডায়াবেটিসের সমস্যা কমাতেঃ অশ্বগন্ধার মূল ও পাতার নির্যাস অ্যান্টিডায়াবেটিক উপাদান থাকে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়াতে ও লিপিডের পরিমান ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

স্মৃতিশক্তি উন্নত করেঃ অ্যালজাইমারস রোগীদের অবস্থার উন্নতিতে অশ্বগন্ধা কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে, অশ্বগন্ধার বিভিন্ন সক্রিয় উপাদান মস্তিষ্কের কোষের ক্ষয় রোধ করতে এবং নিউরোনাল সংযোগ উন্নত করতে সাহায্য করে।

পেশী মজবুত করেঃ অশ্বগন্ধা পেশী মজবুত করতে অত্যন্ত কার্যকরী। এটি প্রাচীন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত একটি ঔষধি গাছ, যা মূলত পেশী শক্তিশালী করতে, পেশীর আঘাত সারাতে এবং ব্যায়ামের ফলে পেশীতে সৃষ্ট চাপ কমাতে ব্যবহৃত হয়।

ইনফেকশন থেকে বাঁচতেঃ অশ্বগন্ধার পাতা ও মূলে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকায় এটি নানা ধরণের ইনফেকশন থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে।

হার্টেকে সুরক্ষা রাখতেঃ অশ্বগন্ধা রক্ত চলাচল সঠিক রেখে হার্টকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে। এটি প্রাচীন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ, যা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।

ওজন বৃদ্ধি করতেঃ অনেকে মনে করেন অশ্বগন্ধার মূলের গুঁড়ো ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, তবে এটি এখনও প্রমাণিত হয়নি। অশ্বগন্ধা মূলত শরীরের সার্বিক স্বাস্থ্য উন্নতিতে একটি ঔষধি উপাদান।

মেয়েদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা
ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতার পাশাপাশি মহিলাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অশ্বগন্ধার উপকারিতা হল শরীরে হরমোনের মাত্রা ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করা।

হরমোনগুলি ছোট বার্তাবাহকের মতো যা আমাদের শরীরের অনেকগুলি ফাংশন যেমন মেজাজ, শক্তি এবং প্রজনন নিয়ন্ত্রণ করে। যখন আমাদের হরমোন ভারসাম্যের বাইরে থাকে, তখন এটি ক্লান্তি, মেজাজের পরিবর্তন এবং অনিয়মিত পিরিয়ডের মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

জেনে রাখো মেয়েদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা গুলো।

বেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, থাইরয়েডের সমস্যায় উপকারী, ত্বক চুলের যত্ন, মাসিক চক্র নিয়মিত করতে সাহায্য কর, যৌন উত্তেজক হিসেবে কাজ করে।

বর্তমানে মেয়েরা বেস্ট ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে থাকে সেজন্য বেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে নিয়মিত অশ্বগন্ধা খেতে পারেন এটা ভালো উপকারী। এছাড়া সকল ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে চাইলে এই অশ্বগন্ধা খেতে পারেন।

১। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে

বর্তমানে মেয়েরা বিভিন্ন কারণে বিভিন্নভাবে মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যায়। ভারতের একটি মানুষের চাপের ফলে বিভিন্ন রকম সমস্যা সৃষ্টি হয়। মানুষের চাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে হলে নিয়মিত অশ্বগন্ধা খেতে পারেন।

২। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য অবশ্যই আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকতে হবে। রোগ ক্ষমতা বেশি না থাকলে বিভিন্ন রকম রোগে আক্রমণ করে। আমাদের বিভিন্ন রকম ক্ষতি হতে পারে তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অশ্বগন্ধা খেতে পারেন।

৩। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে

বর্তমানে অনেক মেয়েরা বা অনেক মানুষজন বয়স একটু বেশি হলে বা ওজন বেশি হলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ডায়াবেটিসের আক্রান্ত হলে স্বাভাবিক মানুষের মত জীবন যাপন করা যায় না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাইলে অবশ্যই নিয়মিত সময় অশ্বগন্ধা খেতে পারেন।

৪। থাইরয়েডের এর সমস্যায় উপকারী
বর্তমানে অনেক মেয়েরা থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগে থাকেন কিন্তু বুঝতে পারে না কিভাবে সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। থেকে মুক্তি পেতে চাইলে অবশ্যই অশ্বগন্ধা খেতে পারেন আশা করি তাড়াতাড়ি মুক্তি পাবেন।

ত্বক ও চুলের যত্ন

৫। সব মেয়েরা চায় তাদের চুল এবং ত্বক সব সময় সুন্দর থাকো এবং পরিপাটি থাকবে। কিন্তু বিভিন্ন কারণ ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে ত্বক ও চুলের চুলের সৌন্দর্য ধরে রাখতে আপনি অশ্বগন্ধা ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া যেসব মহিলাদের নিয়মিত পিরিয়ড হয়না বা হরমোন জনিত সমস্যার কারণে।

৬। মাসিক চক্র নিয়মিত করতে সাহায্য করে

মহিলাদের ক্ষেত্রে বিলম্বিত বা অনিয়মিত পিরিয়ড, পিরিয়ডের ব্যথা, প্রজনন সমস্যা বা মেনোপজের সময় পরিবর্তন হওয়া সাধারণ ব্যাপার। স্ট্রেস এই সমস্যাগুলি আরও খারাপ করতে পারে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সাধারণত দায়ী, যা এমনকি গর্ভাবস্থায় জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

৭। যৌন উত্তেজক হিসেবে কাজ করে

ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতার পাশাপাশি, অশ্বগন্ধা এমন মহিলাদের সাহায্য করে, যাদের যৌন জীবনে সমস্যা রয়েছে। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে এটি চালু করা, প্রচণ্ড উত্তেজনায় পৌঁছানো এবং তেলতেলে থাকা সহজ হতে পারে। এটি মানসিক চাপের সাথেও সাহায্য করে, আপনাকে একটি ভাল মেজাজে রাখে এবং রক্ত​​​​প্রবাহ উন্নত করে, যা যৌনতাকে আরও ভাল করতে পারে।

গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অশ্বগন্ধা
গর্ভবতী মহিলাদের অশ্বগন্ধার মতো সম্পূরকগুলি সহ তারা কী গ্রহণ করে সে সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। যদিও এটি সাধারণত বেশিরভাগ মানুষের জন্য নিরাপদ বলে বিবেচিত হয় যখন উপযুক্ত মাত্রায় নেওয়া হয়। ফলস্বরূপ, এটি প্রায়শই সুপারিশ করা হয় যে গর্ভবতী মহিলাদের অশ্বগন্ধা বা অন্য কোনও ভেষজ পরিপূরকগুলি এড়িয়ে চলুন যদি না তাদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর দ্বারা বিশেষভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়।

অশ্বগন্ধা স্ট্রেস এবং উদ্বেগ কমানোর জন্য সম্ভাব্য সুবিধা থাকতে পারে, যা গর্ভাবস্থায় আগ্রহের বিষয় হতে পারে, তবে মা এবং বিকাশমান ভ্রূণ উভয়ের জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকির বিরুদ্ধে এই সম্ভাব্য সুবিধাগুলিকে ওজন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পরিশেষে, আপনি যদি গর্ভবতী হন এবং অশ্বগন্ধা বা অন্য কোন ভেষজ সম্পূরক গ্রহণ করার কথা বিবেচনা করেন, তাহলে আপনার ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য অবস্থা এবং প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং সুবিধাগুলি নিয়ে আলোচনা করার জন্য প্রথমে আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে পরামর্শ করা ভাল।

অশ্বগন্ধা পাউডার এর উপকারিতা
অশ্বগন্ধার পাউডার খেলে যেসব উপকার পাওয়া যায় সেগুলোর তালিকা আমরা পোষ্টের এই অংশে তুলে ধরব। অশ্বগন্ধা পাউডার এর উপকারিতাগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ

যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে: আপনার যদি যৌন শক্তি বৃদ্ধি করতে চান তাহলে আপুনি চাইলে বাজার থেকে অশ্বগন্ধা পাউডার ক্রয় করে নিয়মিত কিছুদিন সেবন করতে পারেন। আশা করা যায় ভালো ফলাফল পাবেন।

শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে: আমাদের অনেকেরই শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করার দরকার হয় সেক্ষেত্রে আপনি যদি নিয়মিত অশ্বগন্ধা পাউডার সেবনব করেন তাহলে দীর্ঘ সময় কাজ করার এনার্জি পাওয়া যায়। তাই আপনি যদি এমন কোন কাজের সাথে যুক্ত থাকেন যা করতে প্রচুর পরিমাণে এনার্জির প্রয়োজন হয় তাহলে নিয়মিত অশ্বগন্ধা সেবন করতে পারেন।

কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়: রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে চাইলে আপনাকে নিয়মিত কিছুদিন অশ্বগন্ধার পাউডার সেবন করতে হবে। আপনি যদি নির্দিষ্ট নিয়মে অশ্বগন্ধার পাউডার সেবন করেন তাহলে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে আসবে।

হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চাইলে আপনাকে নিয়মিত অশ্বগন্ধার সেবন করতে হবে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অশ্বগন্ধার গুড়া হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাই আপনি যদি আপনার হার্ট সুস্থ রাখতে চান সে ক্ষেত্রে নিয়মিত অশ্বগন্ধার গুঁড়ো খেতে পারেন।

অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সহায়তা করে: শরীরের অতিরিক্ত চর্বি দূর করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে অশ্বগন্ধা। অশ্বগন্ধা সেবন করার ফলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ঝরে যায়। অশ্বগন্ধায় থাকা ভেষজ উপাদান শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে সহায়তা করে। তাই চাইলে আপনি কিছুদিন অশ্বগন্ধার গুড়া সেবন করে আপনার শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ঝরিয়ে ফেলতে পারেন।

হাড় গঠনে সহায়তা করে: অশ্বগন্ধা সেবন করলে হাড় মজবুত হয়। এবং হাড়ের সঠিক বৃদ্ধি ঘটে। আর এ কারণেই অনেকে লম্বা হওয়ার জন্য অশ্বগন্ধার গুড়া সেবন করে থাকেন। বলা হয় যদি কোন ব্যক্তি তার উচ্চতা বৃদ্ধি করতে চায় তাহলে, তাকে একটানা তিন মাস অশ্বগন্ধার গুড়া সেবন করতে হবে। তিন মাস যদি নিয়মিতভাবে অশ্বগন্ধার সেবন করা যায় তাহলে, সঠিকভাবে হার গঠন হওয়ার কারণে কিছুটা লম্বা হওয়া সম্ভব।

ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধা খাওয়ার নিয়ম
অনেক ছেলেরাই আছেন যারা জানেন না অশ্বগন্ধা কিভাবে খাব। কিংবা অশ্বগন্ধা খাওয়ার নিয়ম কি। ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধা খাওয়ার নিয়ম জেনে খাওয়া উচিৎ। কেননা, প্রতিটি জিনিসের ভাল ফল পেতে অবশ্যই নিয়ম মেনে পরিমিত করে খেতে হবে। খাওয়ার নিয়ম না জানা থাকলে সেটা উপকারের পরিবর্তে ক্ষতি করে থাকে। তাই খাওয়ার আগে অবশ্যই নিয়ন জানা জরুরি।

অশ্বগন্ধা খাওয়ার নিয়ম হলো এক কাপ চা, দুধ, বা মধুর সাথে ১ থেকে ২ চা চামচ অশ্বগন্ধা গুড়া মিশিয়ে খাওয়া। এটি সেবনে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং মন ও শরীরকে প্রশান্ত করে। আরও অশ্বগন্ধা খাওয়ার নিয়ম হলো অশ্বগন্ধার গুড়া মধু বা বাদামের সাথে মিশিয়ে ঘুমের টনিক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে, যা রাতের ঘুমকে গভীর ও প্রশান্তিময় করে তোলে।

এতে চাপ এবং দুশ্চিন্তা কমে যায়, ফলে আপনি সকালে উঠে সতেজ অনুভব করবেন। অশ্বগন্ধা গুড়া শুধু সেবন নয়, বাহ্যিকভাবেও কার্যকর।অশ্বগন্ধার শেকড় এবং গুঁড়া দুইভাবেই খাওয়া যায়। তবে এখন অশ্বগন্ধা গুঁড়া খাওয়ার প্রচলন সবচেয়ে বেশি। কারণ বাজারে শেকড়ের থেকে গুঁড়া বেশি দেখা যায়। ভালো ফল পেতে প্রতিদিন ৪-৫ গ্রাম অর্থাৎ ১ চামচ অশ্বগন্ধা গুঁড়া খেতে পারেন।

আপনি চাইলে এটি কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে, হালকা গরম দুধে মিশিয়ে অথবা মধু মিশিয়েও খেতে পারেন। প্রতিদিন সকালে ১ চামচ অথবা ১/২ চামচ আর রাতে ঘুমানোর আগে ১/২ চামচ করে খেতে পারেন। তবে আপনার সমস্যার উপর ভিত্তি করে বিশেষজ্ঞ একজন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অশ্বগন্ধা খাওয়া সবথেকে নিরাপদ।

আর ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধা পাউডার খাওয়ার খাওয়ার সঠিক নিয়ম সমূহ নিচে উল্লেখ করা হলঃ

এক কাপ চা বা দুধ বা মধুর সঙ্গে ১-২ চা চামচ অশ্বগন্ধা গুড়া মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
সকালে খালি পেটে পানিতে গুলিয়ে সেই পানি খেতে পারেন
মধু বা বাদামের সাথে মিশিয়ে খেলে ঘুমের টনিক হিসেবে কাজ করে। এতে মানুষিক চাপ এবং দুশ্চিন্তা অনেকটাই কমে যায়।
অশ্বগন্ধা গুড়া অল্প পানিয়ে গুলিয়ে মলমের মতো করে ক্ষত বা প্রদাহের স্থানে প্রলেপ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
অশ্বগন্ধা ক্যাপসুল সকালে খাবার পরে একটি ও রাতে ঘুমানোর আগে একটি করে খাওয়া যেতে পারে। তবে ডাক্তার এর পরামর্শ মেনে খেতে হবে।
অশ্বগন্ধা গুড়া মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে যৌন স্বাস্থ্যের জন্য সব চেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

অশ্বগন্ধার আসল উপকারিতা এর মূল তথা শিকড়ে। তাই এটির মূল বেঁটে রস খেতে পারেন।

অশ্বগন্ধার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
অশ্বগন্ধার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জেনে নিন। সাধারণত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো হালকা এবং এর মধ্যে রয়েছে পেট খারাপ হালকা মল বমি বমি ভাব এবং তন্দ্রা যাই হোক বহু মাস বা বছর ধরে দীর্ঘমেয়াদি অশ্বগন্ধার ব্যবহারে সুরক্ষার প্রমাণের অভাব রয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করলে শরীরে উষ্ণতা বেড়ে যেতে পারে, যা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। নিজের খাদ্যাভ্যাসে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করতে চাইলে রেজিস্ট্রিকৃত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যে ওষুধ আপনি ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছেন তার প্রতিক্রিয়ার ওপর এটি প্রভাব ফেলতে পারে।

যেমন, যিনি রক্তে শর্করা কমানোর ওষুধ নিয়ে থাকেন তিনি অশ্বগন্ধা ব্যবহার করলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি নেমে যেতে পারে। অশ্বগন্ধা রক্ত পাতলা করে এবং এটি অ্যান্টিকোঅ্যাগুলেন্ট হিসেবে কাজ করে, কাজেই আপনার শরীরে যদি সার্জারি থাকে বা আপনার শরীরে সাম্প্রতিককালে সার্জারি হয়ে থাকে তাহলে এটি ব্যবহার করা উচিত নয়। যদি আপনি রক্ত পাতলা করার ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন।

অতিরিক্ত মাত্রায় অশ্বগন্ধা গ্রহণ করলে কিছু ক্ষেত্রে হ্যালুসিনেশন এবং বিভ্রান্তির মতো মানসিক সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও, দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে পেটের সমস্যা, ডায়রিয়া, এবং বমির সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অশ্বগন্ধার মধ্যে থাকা সক্রিয় উপাদানগুলি কিছু মানুষের ক্ষেত্রে অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। তাই প্রথমবার ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকুন এবং কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে অবিলম্বে ব্যবহার বন্ধ করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

যেসব মায়েরা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ান তাদের ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা না খাওয়াই উত্তম।

অশ্বগন্ধা পাউডারের দাম কত
অশ্বগন্ধা পাউডার দাম কত সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। অশ্বগন্ধা পাউডারের দাম বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। যেমন অনলাইনে মাধ্যমে অনেকে অশ্বগন্ধা পাউডার বিক্রি করে থাকে।

আপনি যদি তাদের কাছ থেক কিনতে চান তাহলে ১০০ গ্রাম অশ্নগন্ধা পাউডার দাম ১৫০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। আর এক কেজি অষ্ট গন্ধা পাউডার দাম দেড় হাজার থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।