০৫:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

চার দিনের সফরে বিকালে ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব, কর্মসূচিতে যা যা রয়েছে

নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে চার দিনের সরকারি সফরে আজ বিকালে ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

অন্তর্বর্তী সরকারের সূত্র জানিয়েছে, গুতেরেসকে বহনকারী এমিরেটসের একটি ফ্লাইট (ইকে-৫৮৬) আজ (বৃহস্পতিবার) বিকাল ৫টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। জাতিসংঘ মহাসচিব পৌঁছানোর পর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে যাওয়ার আগে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

শুক্রবার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং রোহিঙ্গা ইস্যু ও অগ্রাধিকার বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান সকাল ৯টায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে গুতেরেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। পরে জাতিসংঘ মহাসচিব সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

বৈঠকের পর গুতেরেস রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে কক্সবাজার যাবেন। তিনি কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম তাকে স্বাগত জানাবেন।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস দিনের শেষে গুতেরেসের সঙ্গে কক্সবাজারে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন। এ অনুষ্ঠান চলাকালে দুই নেতা রোহিঙ্গা ইমাম এবং সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ইফতারের আগে জাতিসংঘ মহাসচিব ক্যাম্পের বেশ কয়েকটি সুযোগ-সুবিধা পরিদর্শন করবেন। যার মধ্যে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, লার্নিং সেন্টার, মাল্টি-পারপাস সার্ভিস সেন্টার এবং একটি পাট উৎপাদন স্থাপনা। তিনি রোহিঙ্গা যুবক ও শিশুদের সঙ্গেও কথা বলবেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব সন্ধ্যায় ঢাকায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ফিরে আসবেন। শনিবার তিনি ঢাকায় জাতিসংঘের ভবন পরিদর্শন করবেন, যেখানে তিনি জাতিসংঘের পতাকা উত্তোলন করবেন। এছাড়া বাংলাদেশ-জাতিসংঘ সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী পর্যবেক্ষণ করবেন এবং জাতিসংঘের কর্মীদের সঙ্গে একটি সভায় যোগ দেবেন।

বিকালে জাতিসংঘ মহাসচিব ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়ার ওপর একটি গোলটেবিল আলোচনায় যোগ দেবেন। তিনি তরুণদের সঙ্গে একটি সংলাপে অংশ নেবেন এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

পরে গুতেরেস হোটেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে একটি যৌথ মিডিয়া ব্রিফিংয়ে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। একই দিন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিবের সম্মানে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করবেন।

রবিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে গুতেরেস এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করবেন। ড. খলিলুর রহমান বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাতে উপস্থিত থাকবেন।

এই সফরকালে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক মর্যাদা এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে রোহিঙ্গা সমস্যার মতো দেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে তা তুলে ধরা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ড. ইউনূসকে লেখা এক সাম্প্রতিক চিঠিতে গুতেরেস আশা প্রকাশ করেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিষয়ে আসন্ন উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন নতুন করে বৈশ্বিক মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং তাদের দুর্দশার ব্যাপক ভিত্তিক সমাধান বের করতে সহায়তা করবে।

গুতেরেস বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশকে সমর্থন করার জন্য জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংগঠিত করার প্রয়াস অব্যাহত রাখবে।’

জাতিসংঘ প্রধান বলেন, তিনি তার ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপকদের বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে জাতিসংঘের স্থানীয় টিমগুলোকে রাখাইনের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জন্য মানবিক সহায়তা ও জীবিকা নির্বাহের জন্য কীভাবে সর্বাধিক সহায়তা দেওয়া যায়, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ১২:৩০:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
২৯

চার দিনের সফরে বিকালে ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব, কর্মসূচিতে যা যা রয়েছে

আপডেট: ১২:৩০:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে চার দিনের সরকারি সফরে আজ বিকালে ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

অন্তর্বর্তী সরকারের সূত্র জানিয়েছে, গুতেরেসকে বহনকারী এমিরেটসের একটি ফ্লাইট (ইকে-৫৮৬) আজ (বৃহস্পতিবার) বিকাল ৫টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। জাতিসংঘ মহাসচিব পৌঁছানোর পর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে যাওয়ার আগে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

শুক্রবার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং রোহিঙ্গা ইস্যু ও অগ্রাধিকার বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান সকাল ৯টায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে গুতেরেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। পরে জাতিসংঘ মহাসচিব সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

বৈঠকের পর গুতেরেস রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে কক্সবাজার যাবেন। তিনি কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম তাকে স্বাগত জানাবেন।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস দিনের শেষে গুতেরেসের সঙ্গে কক্সবাজারে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন। এ অনুষ্ঠান চলাকালে দুই নেতা রোহিঙ্গা ইমাম এবং সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ইফতারের আগে জাতিসংঘ মহাসচিব ক্যাম্পের বেশ কয়েকটি সুযোগ-সুবিধা পরিদর্শন করবেন। যার মধ্যে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, লার্নিং সেন্টার, মাল্টি-পারপাস সার্ভিস সেন্টার এবং একটি পাট উৎপাদন স্থাপনা। তিনি রোহিঙ্গা যুবক ও শিশুদের সঙ্গেও কথা বলবেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব সন্ধ্যায় ঢাকায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ফিরে আসবেন। শনিবার তিনি ঢাকায় জাতিসংঘের ভবন পরিদর্শন করবেন, যেখানে তিনি জাতিসংঘের পতাকা উত্তোলন করবেন। এছাড়া বাংলাদেশ-জাতিসংঘ সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী পর্যবেক্ষণ করবেন এবং জাতিসংঘের কর্মীদের সঙ্গে একটি সভায় যোগ দেবেন।

বিকালে জাতিসংঘ মহাসচিব ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়ার ওপর একটি গোলটেবিল আলোচনায় যোগ দেবেন। তিনি তরুণদের সঙ্গে একটি সংলাপে অংশ নেবেন এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

পরে গুতেরেস হোটেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে একটি যৌথ মিডিয়া ব্রিফিংয়ে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। একই দিন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিবের সম্মানে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করবেন।

রবিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে গুতেরেস এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করবেন। ড. খলিলুর রহমান বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাতে উপস্থিত থাকবেন।

এই সফরকালে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক মর্যাদা এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে রোহিঙ্গা সমস্যার মতো দেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে তা তুলে ধরা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ড. ইউনূসকে লেখা এক সাম্প্রতিক চিঠিতে গুতেরেস আশা প্রকাশ করেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিষয়ে আসন্ন উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন নতুন করে বৈশ্বিক মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং তাদের দুর্দশার ব্যাপক ভিত্তিক সমাধান বের করতে সহায়তা করবে।

গুতেরেস বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশকে সমর্থন করার জন্য জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংগঠিত করার প্রয়াস অব্যাহত রাখবে।’

জাতিসংঘ প্রধান বলেন, তিনি তার ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপকদের বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে জাতিসংঘের স্থানীয় টিমগুলোকে রাখাইনের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জন্য মানবিক সহায়তা ও জীবিকা নির্বাহের জন্য কীভাবে সর্বাধিক সহায়তা দেওয়া যায়, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।