১০:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ঝিকরগাছায় মহিলার চুল কেটে মুখে কালি মাখিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ, ৪জন গ্রেফতার

নিউজ ডেস্ক

আশরাফুজ্জামান বাবু, স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের ঝিকরগাছায় তুচ্ছ ঘটনায় এক মহিলার মাথার চুল কেটে দিলো অন্য মহিলারা। শুধু চুল কেটেই তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি বরং মধ্যযুগীয় কায়দায় মুখে কালি মাখিয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক ভাবে মারপিট করেছে। এই ঘটনায় নির্যাতিত মহিলা ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ তৎক্ষনাৎ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ৪ জন কে গ্রেফতার করেছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ঝিকরগাছা উপজেলার সদর ইউনিয়নের মৃত তোরাব মোড়লের মেয়ে ফজিলা খাতুন (৪৫) এর ছেলে রায়হানের সাথে পার্শ্ববর্তী পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাস এর মেয়ে বিথীর ২ বছর পুর্বে বিয়ে হয়। বিয়ের পর বনিবনা না হওয়ায় তাদের মধ্যে পারিবারিক ভাবে বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর বিথীর একই উপজেলার গদখালি ইউনিয়নের বেনেয়ালি গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে শিমুল এর সাথে বিয়ে হয়। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারী) দুপুর সাড়ে ৩ টার দিকে ফজিলা বেগম বেনেয়ালি গ্রামে তার সাবেক পুত্রবধুকে দেখতে যায়। এসময় বেনেয়ালি কলাবাগান পাড়ার সিরাজুল ওরফে ছ্যারার নেতৃত্বে আবদুল হামিদের ছেলে শিমুল হোসেন (৩৪), পদ্মপুকুর গ্রামের ইব্রাহীম খলীলের স্ত্রী শারমিন আক্তার রুমি (৩০), বেনেয়ালি গ্রামের মফিজুর ড্রাইভারের স্ত্রী রনি বেগম (৪৬), তবিবর এর স্ত্রী মাজেদা বেগম (৪২), আব্দুল হামিদের স্ত্রী আছিরন বেগম (৪৮), পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাস এর স্ত্রী রহিমা (৪৮) সহ আরও ৫/৬ জন মহিলা মিলে ফজিলা বেগম এর মাথার চুল কেটে দিয়ে মুখে কালি লেপন করে দেয় এবং বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট করে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে। এসময় উপস্থিত আরও অনেক মহিলা ও পুরুষ পুরো ঘটনা ভিডিও করতে থাকে এবং উল্লাস করতে থাকে। শুধু মারপিট করেই তারা থেমে থাকেনি। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত তাকে শিমুলের বাড়ির পিলারের সাথে বেধে রাখে এবং সন্ধ্যার পর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে থানায় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় আসামীরা কোথাও অভিযোগ করলে আরও বড় ধরনের ক্ষতি করার ভয় দেখায়। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে ফজিলা বেগম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এসংক্রান্ত একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ঘটনা জানার পরপরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভুপালী সরকার এবং ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ বাবলুর রহমান খান এর সার্বিক তত্বাবধানে রাতেই এস আই মহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ৪ জনকে গ্রেফতার করে।

ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বাবলুর রহমান খান বলেন এসংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েই আমাদের পুলিশের একটা টিম অভিযানে নামে এবং রাতেই ৪ জনকে গ্রেফতার করে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারী) সকালে ৪ জনকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে এবং বাকী আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০১:০৫:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
১৬

ঝিকরগাছায় মহিলার চুল কেটে মুখে কালি মাখিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ, ৪জন গ্রেফতার

আপডেট: ০১:০৫:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আশরাফুজ্জামান বাবু, স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের ঝিকরগাছায় তুচ্ছ ঘটনায় এক মহিলার মাথার চুল কেটে দিলো অন্য মহিলারা। শুধু চুল কেটেই তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি বরং মধ্যযুগীয় কায়দায় মুখে কালি মাখিয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক ভাবে মারপিট করেছে। এই ঘটনায় নির্যাতিত মহিলা ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ তৎক্ষনাৎ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ৪ জন কে গ্রেফতার করেছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ঝিকরগাছা উপজেলার সদর ইউনিয়নের মৃত তোরাব মোড়লের মেয়ে ফজিলা খাতুন (৪৫) এর ছেলে রায়হানের সাথে পার্শ্ববর্তী পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাস এর মেয়ে বিথীর ২ বছর পুর্বে বিয়ে হয়। বিয়ের পর বনিবনা না হওয়ায় তাদের মধ্যে পারিবারিক ভাবে বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর বিথীর একই উপজেলার গদখালি ইউনিয়নের বেনেয়ালি গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে শিমুল এর সাথে বিয়ে হয়। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারী) দুপুর সাড়ে ৩ টার দিকে ফজিলা বেগম বেনেয়ালি গ্রামে তার সাবেক পুত্রবধুকে দেখতে যায়। এসময় বেনেয়ালি কলাবাগান পাড়ার সিরাজুল ওরফে ছ্যারার নেতৃত্বে আবদুল হামিদের ছেলে শিমুল হোসেন (৩৪), পদ্মপুকুর গ্রামের ইব্রাহীম খলীলের স্ত্রী শারমিন আক্তার রুমি (৩০), বেনেয়ালি গ্রামের মফিজুর ড্রাইভারের স্ত্রী রনি বেগম (৪৬), তবিবর এর স্ত্রী মাজেদা বেগম (৪২), আব্দুল হামিদের স্ত্রী আছিরন বেগম (৪৮), পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাস এর স্ত্রী রহিমা (৪৮) সহ আরও ৫/৬ জন মহিলা মিলে ফজিলা বেগম এর মাথার চুল কেটে দিয়ে মুখে কালি লেপন করে দেয় এবং বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট করে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে। এসময় উপস্থিত আরও অনেক মহিলা ও পুরুষ পুরো ঘটনা ভিডিও করতে থাকে এবং উল্লাস করতে থাকে। শুধু মারপিট করেই তারা থেমে থাকেনি। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত তাকে শিমুলের বাড়ির পিলারের সাথে বেধে রাখে এবং সন্ধ্যার পর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে থানায় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় আসামীরা কোথাও অভিযোগ করলে আরও বড় ধরনের ক্ষতি করার ভয় দেখায়। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে ফজিলা বেগম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এসংক্রান্ত একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ঘটনা জানার পরপরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভুপালী সরকার এবং ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ বাবলুর রহমান খান এর সার্বিক তত্বাবধানে রাতেই এস আই মহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ৪ জনকে গ্রেফতার করে।

ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বাবলুর রহমান খান বলেন এসংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েই আমাদের পুলিশের একটা টিম অভিযানে নামে এবং রাতেই ৪ জনকে গ্রেফতার করে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারী) সকালে ৪ জনকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে এবং বাকী আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।