মোঃ রুবেল হোসেন স্টাফ রিপোর্টারঃ দরিদ্রতা থেকে মুক্তি পেতে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে মালয়েশিয়ায় গিয়ে কর্মহীন শত শত বাংলাদেশি মাসের পর মাস চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

অভিযোগ উঠেছে, এজেন্সিগুলোর মারপ্যাঁচে পড়ে ফ্রি ভিসার নামে মালয়েশিয়া গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন অনেক মানুষ। দেশ থেকে তাদের বিমানে করে নিয়ে মালয়েশিয়া বিমানবন্দরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি একাধিক ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা এমন অভিযোগ করেছেন। এমন অভিযোগ রয়েছে দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোতেও। ইতোমধ্যে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা অভিযুক্ত এজেন্সি গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।

সাম্প্রতি এমনই প্রতারণার শিকার হয়েছেন ঝিনাইদহের সাব্বির, জানা গেছে সুরাইয়া ওভারসীস (আর এল-১৯৪৯) স্বত্বাধিকারী মো. আহসানউল্লাহ সুমন গত নয় মাস আগে ভুক্তভোগী সাব্বিরের কাছ থেকে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে কলিং ভিসায় কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্ট পার করিয়ে ছেড়ে দেন। ভুক্তভোগী সাব্বির কোনো কাজ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে থাকেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায় রিক্রুটিং এজেন্সি সুরাইয়া ওভারসীস নিয়ম অনুযায়ী, ভুক্তভোগী সাব্বিরকে কলিং ভিসায় মালয়েশিয়ায় প্রবেশের এক বছরের জন্য ওয়ার্কিং ভিসা পাইয়ে দিলেও নিয়োগকর্তার মাধ্যমে কোনো কাজের নিশ্চয়তা দেননি। পরে সুরাইয়া ওভারসীসের স্বত্বাধিকারী মো. আহসানউল্লাহ সুমন ও নিয়োগকর্তারা বাংলাদেশি কর্মী সাব্বিরের কল রিসিভ করেন না। এ অবস্থায় ভিসা ও কাজ না থাকায় দিনদিন সাব্বিরের হতাশা বাড়ছে।

ভুক্তভোগী বাংলাদেশি কর্মী সাব্বির জানান, প্রথমে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে মার্কেটের ভিসা দেবে বলেছিল সুরাইয়া ওভারসীসের স্বত্বাধিকারী সুমন। কিন্তু এখানে আসার পর দেখি ভিসা তো দূরে থাক, কথা কাজের কোনো মিল নেই। উল্টো পাসপোর্ট ফিরে পাওয়ার জন্য পরিবারের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়ে পাসপোর্ট ফিরে পেতে হয়েছে, খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। নয় মাস ধরে কাজ দেওয়ার কথা বলে নয়ছয় করছেন। এদিকে ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে যাচ্ছে আর ওদিকে এনজিওর ঋণের সুদ দিনদিন বেড়েই চলেছে।

অথচ মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ চুক্তিতে (এমওইউ) উল্লেখ রয়েছে, প্রত্যেক কর্মীর কাজ, বাসস্থান, চিকিৎসা, ভিসা ফি এবং যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে রিক্রুটিং এজেন্সি ও নিয়োগকর্তা।

এ বিষয়ে সুরাইয়া ওভারসীসের স্বত্বাধিকারী মোঃ আহসানউল্লাহ সুমনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ভুক্তভোগী সাব্বিরকে গত ৪ ডিসেম্বর ২০২৩ইং তারিখের মধ্যে কাজের ব্যবস্থা করে দেবেন বলেন, উক্ত সময়ের মধ্যে কাজ না দিতে পারলে তিনি সাব্বিরকে এক বছরের ভিসা রিনিউ করে দেওয়াসহ পাসপোর্ট ফিরিয়ে নেওয়ার এক লক্ষ টাকা দিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি কোন কাজের ব্যবস্থা না করে দিয়ে কোন প্রকার সমাধান না দিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, মুঠোফোনে তাকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি এখন আর ফোন কল রিসিভ করছেন না।