স্টাফ রিপোর্টার : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরও দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের ‘হেফাজতে’ নিয়েছে। এনিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পাঁচজন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বা ডিবির ‘হেফাজতে’ রয়েছে। বিষয়টি স্বীকার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের মুক্তি, সব মামলা প্রত্যাহার, ছাত্র-জনতা হত্যায় দায়ী মন্ত্রী থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত সবাইকে অব্যাহতি দিয়ে বিচারের আওতায় আনার দাবিতে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে কোটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

গতকাল অনলাইন গুগল মিটে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আল্টিমেটাম দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ। এ সময় বক্তব্য রাখেন- সমন্বয়ক মাহিন সরকার ও সহ সমন্বয়ক রিফাত রশিদ। তাদের বক্তব্যে অন্য সমন্বয়কদের সমর্থন আছে কিনা এমন প্রশ্নে তারা জানান, নতুন কোনো কিছু বলা হচ্ছে না। সমন্বয়কদের আগের অবস্থানের আলোকে আমরা কথা বলছি। কারণ তারা কেউ হেফাজতে আছেন। কেউ নিরাপত্তার কারণে যোগাযোগ করতে পারছেন না। আমাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে।

কোটা নিয়ে পরিপত্র খেলা বন্ধ করা ও কমিশন গঠন করে স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে সুপারিশের মাধ্যমে কোটা সংস্কার করে সংসদে আইন পাস করার দাবি জানিয়ে সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, গ্রেপ্তার ও গুম হওয়া নেতাদের মুক্তি এবং সারা দেশে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা সব মামলা প্রত্যার করতে হবে, গণহত্যার সঙ্গে জড়িত মন্ত্রী থেকে শুরু করে পুলিশ কনস্টেবল পর্যন্ত জড়িতদের অব্যাহতি এবং আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামবো আমরা।

সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, যে অবিচার চলছে এটা চলতে পারে না। এভাবে দম বন্ধ পরিবেশ থেকে আমরা নিজেদের ও শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিতে চাই।

আগামীকাল (আজ) রাষ্ট্রীয় অবিচারের বিরুদ্ধে অনলাইনে প্রচার-প্রচারণা করা হবে। প্রবাসীরাও এ কর্মসূচি পালন করবে। এছাড়া সারা দেশে দেয়াললিখন ও গ্রাফিতি আঁকবেন শিক্ষার্থীরা। তিনি বলেন, সারা দেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে লিগ্যাল এইড ও হেলথ ফোর্স গঠন করতে আইনজীবী ও চিকিৎসকদের অনুরোধ করছি। আপনাদের সঙ্গে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি সমন্বয় করবো। মাসুদ বলেন, ঢাকাসহ সারা দেশে যুদ্ধাবস্থা তৈরি করেছে সরকার। হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। গত ৩৬ ঘণ্টায় আমরা ২৬৬ জন নিহতের তালিকা করেছি। নিহতদের মধ্যে ৭৮ শতাংশই শিক্ষার্থী। এ সংখ্যাটি হাজার ছাড়াবে বলে আমরা মনে করি। দেশে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করেছে সরকার। এর দায় সরকারকে নিতে হবে। বিশ্বসম্প্রদায় এবং সংস্থাকে বলবো- বাংলাদেশে শিক্ষার্থীরা ভালো নেই। লাখ লাখ শিক্ষার্থী ঘর ছাড়া। আপনারা সরকারকে চাপ দিন।

আন্তর্জাতিক আদালতে প্রয়োজনে মামলা করুন। সরকারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনুন। প্রবাসীরাও এ গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ব পরিমণ্ডলে আওয়াজ তুলুন। পাকিস্তানিদের মতো এখন বাসায় বাসায় ছাত্র খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রিফাত রশিদ বলেন, সরকার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংস করেছে। গুম, খুন, হত্যাসহ সব দায় সরকারের। সরকারকেই ঠিক করতে হবে তারা কীভাবে পরিস্থিতি ঠিক করবেন।