ভারী বর্ষণে আমন ধানের বীজতলা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে শার্শার চাষীরা
- আপডেট: ১০:৫৬:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
- / ৫৪

মো: সাখাওয়াত হোসেন: টানা কয়েক সপ্তাহের ভারী বর্ষণে যশোরের শার্শা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার আমন ধানের বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে একদিকে যেমন কৃষকরা সময়মতো চারা রোপণ করতে পারছেন না, অন্যদিকে আসছে মৌসুমে আমন ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নিয়েও দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।
বর্তমানে আমন চাষের ভরা মৌসুম। জমি প্রস্তুত, আগাছা পরিষ্কার ও সার প্রয়োগসহ প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করলেও ধান রোপণের প্রধান উপকরণ—চারা—সংকটে পড়েছেন চাষীরা। বীজতলা পানিতে ডুবে যাওয়ায় এখন চারার জন্য হাহাকার চলছে পুরো উপজেলায়।
শার্শা উপজেলার ছোট মান্দারতলা গ্রামের কৃষক মাইনুদ্দিন জানান, “জমি চাষ করে সার দিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু এখন চারার কোনো ব্যবস্থা নেই। বীজতলা ডুবে যাওয়ায় আমন ধান রোপণ করা সম্ভব হচ্ছে না।”
খাজুরা গ্রামের আরেক কৃষক জাকির হোসেন বলেন, “প্রতি বছর ১০-১২ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করি। এবার বীজতলা পানিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দুই-তিন বিঘার বেশি আবাদ করা সম্ভব হবে না।”
এদিকে চারা সংকটকে পুঁজি করে বাড়ছে দাম। সাধারণ মানের চারার জন্যও এখন গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ দাম, যা চাষীদের জন্য বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা জানান, “আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি—বীজতলা থেকে পানি দ্রুত সরিয়ে দিতে এবং ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে। চলতি মৌসুমে উপজেলার ২১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমির বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ৬০ শতাংশই পানির নিচে।”
তিনি আরও বলেন, “আগস্টের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আমন চারা রোপণ না হলে উৎপাদনে বড় ধরনের ধাক্কা লাগতে পারে। শ্রাবণ মাসে যদি আরও ভারী বর্ষণ হয়, তাহলে ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়বে। ধানের পাশাপাশি মরিচ, বিভিন্ন ধরনের সবজি ও অন্যান্য ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”
এদিকে চাষীরা দাবি করছেন, ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারি সহায়তা ও সহজ শর্তে চারা বিতরণের ব্যবস্থা করা হোক।