সানজিদা আক্তার সান্তনা, যশোর অফিস : শিশু সানজিদা (৪) হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে খুনি আঞ্জুয়ারা বেগম (৪০)। রোববার আদালতে তিনি এই জবানবন্দি দিয়েছেন। এই জবানবন্দির সূত্র ধরে পুুলিশ ‘লাশ গুমে সহযোগিতার’ অভিযোগে প্রতিবেশি আরেক দম্পতিকে আটক করেছে।
আটককৃতরা হলেন, যশোর সদর উপজেলার বি-পতেঙ্গালী গ্রামের কেরামত গাজীর ছেলে আব্দুল মালেক গাজী (৬৫) ও তার স্ত্রী খাদিজা বেগম (৫০)। যশোর পুলিশের মুখপাত্র ডিবি ওসি রূপন কুমার সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সানজিদা হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার পিতা সোহেল রানা কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন।
যশোর ডিবি পুলিশের ওসি রূপন কুমার সরকার জানান, সানজিদা হত্যাকান্ডের ঘটনায় আটক আঞ্জুয়ারাকে রোববার আদালতে সোপর্দ করা হয়। এসময় তিনি পূর্ব আক্রোশে সানজিদাকে খুন করা হয় বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলাম জবানবন্দি শেষে তাকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, আটক আঞ্জুয়ারা স্বামীসহ বর্তমানে সদর উপজেলার বি-পতেঙ্গালী গ্রামে বসবাস করেন। আঞ্জুয়ারা ও তার স্বামী রেজাউল ওরফে রেজা মাদক, চোরাচালানী ও পাচারকারী দলে সদস্য। তাদের বাড়ি বেনাপোলের পুটখালী গ্রামে হলেও বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে। আঞ্জুয়ারা ও তার স্বামী রেজার বিভিন্ন অপকর্মের খবর জানতেন সানজিদার মা শরিফা খাতুন। এছাড়া আঞ্জুয়ারার অপূর্ব হাসান নামে ৭ বছর বয়সের শারীরিক প্রতিবন্ধী একটি ছেলে আছে। মাঝে মধ্যে খেলাধুলা করার সময় সানজিদার সাথে অপূর্ব হাসানের হাতাহাতি ও মারামারি হয়। মাঝেমধ্যে অপূর্ব হাসানকে পাগল বলেও গালি দিতো সানজিদা। সব মিলিয়ে সানজিদার পরিবারের প্রতি প্রতিহিংসা জন্ম নেয়ায় তাদের ক্ষতি করার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকেন আঞ্জুয়ারা ও তার স্বামী রেজা। এরই সূত্র ধরে শনিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে আপেল খাওয়ানোর কথা বলে বাড়িতে ডেকে সানজিদাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
এ ঘটনায় শনিবার রাত ১১টার দিকে সন্দেহমূলকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আঞ্জুয়ারা পুলিশের কাছে সানজিদাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তার দেখানো মতে সানজিদার লাশ আঞ্জুয়ারার চালের ড্রামের মধ্যে থেকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্ত করার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। রোববার এই ঘটনায় নিহত সানজিদার পিতার দায়ের করা মামলায় আঞ্জুয়ারাকে আটক দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
আঞ্জুয়ারা এরপরে আদালতে সানজিদাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, লাশ গুমে সহযোগিতার অভিযোগে তারই প্রতিবেশি দম্পতি আব্দুল মালেক গাজী (৬৫) ও খাদিজা বেগমকে (৫০) রোববার রাত ১০টার দিকে অভিযান চালিয়ে পতেঙ্গালী গ্রাম থেকে আটক করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম বলেছেন, সানজিদা হত্যাকান্ডের ঘটনায় আটক আঞ্জুয়ারা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তার জবানবন্দি অনুযায়ী আরও দু’জনকে আটক করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.