নিজস্ব প্রতিবেদক : ভূয়া পোল্ট্রি ও মৎস্য খামারের আয় দেখিয়ে চট্টগ্রাম শহরে ছয়তলা বাড়ি, কক্সবাজারে প্রায় আড়াই কোটি টাকা মূল্যমানের প্লট এবং দুটি যাত্রীবাহী বাসের মালিক ফেরদৌসী আকতার একজন গৃহিণী। তার স্বামী মো. শাহজাহান শিল্প পুলিশ চট্টগ্রামের পরিদর্শক। এর আগে তিনি ছিলেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়া ও সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। এতসব সম্পদের মালিক পোলট্রি ও মৎস্য খামারের আয়ের টাকায় হয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
ফেরদৌসী নিজেকে মৎস্য ও পোলট্রি খামারি দাবি করলেও এগুলোর কোনো অস্তিত্ব পায়নি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার ৩ কোটি ২৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি। ‘স্বামী পুলিশ কর্মকর্তার ঘুষ ও দুর্নীতির’ টাকায় এসব সম্পদের মালিক হয়েছেন স্ত্রী ফেরদৌসী আকতার। দাবি দুদকের।
ওসি শাহজাহানের স্ত্রী ফেরদৌসী আকতার পোলট্রি ও মৎস্য খামারের আয় থেকে ২০০৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে এসব সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। ব্যবসা থেকে তিনি আয় করেন ২ কোটি ২৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। যদিও পোলট্রি ও মৎস্য খামারের ট্রেড লাইসেন্স ব্যতীত অন্য কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি।
এছাড়া সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে ব্যবসা করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্র, মৎস্য ও পোলট্রি খামারে বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগ থেকে শুরু করে যাবতীয় কাগজপত্র, পরিবেশের ছাড়পত্র, খামারের লেনদেনসংক্রান্ত ব্যাংক হিসাব, মালামাল কেনাবেচার বিল-ভাউচারসংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি।
এসব ব্যবসার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম। মূলত ঘুষের টাকা বৈধ করতে স্ত্রীকে মৎস্য ও পোলট্রি ব্যবসায়ী সাজান ওসি শাহজাহান। এগুলো ছাড়াও ওসি দম্পতির আরও সম্পদ থাকতে পারে। যা তদন্ত করা হচ্ছে।
কত সম্পদ ওসির স্ত্রীর
চট্টগ্রাম নগরের খুলশী থানার লালখান বাজারের ওয়াসা মোড়ের পাশে হাই লেভেল রোডে ৬ তলা বাড়ি। কক্সবাজার সদর থানার ঝিলংজা মৌজায় ৬০ লাখ ৩১ হাজার টাকা মূল্যের চার কাঠার প্লট, ঝিলংজা মৌজায় ১ কোটি ৫৪ লাখ ১০ হাজার টাকার ২০ শতকের আরও একটি জমি, একই মৌজায় ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকায় ২ শতক জঙ্গলবেষ্টিত জমি রয়েছে ফেরদৌসী আকতারের।
বাড়ি এবং জমির পাশাপাশি দুটি যাত্রীবাহী বাসেরও মালিক ওসির স্ত্রী। বাসগুলো চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রোডে চলাচল করে। ২০১৪ সালে বাস দুটি ১০ লাখ টাকায় কেনেন ফেরদৌসী। দুদকের তথ্য মতে, এগুলো ছাড়াও আরও অনেক সম্পদ রয়েছে ওসি দম্পতির, যা তদন্ত করছে দুদক।
মামলা হওয়ার পর ঘুষের টাকায় অর্জিত এসব সম্পদ হস্তান্তর কিংবা স্থানান্তর ঠেকাতে দুদকের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদন করা হলে গত ১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুন নেসা সম্পদগুলো ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.