সাঈদ ইবনে হানিফ, বাঘারপাড়া (যশোর) : একদিকে অনাবৃষ্টি অন্যদিকে প্রখর রোদের উত্তাপ, আবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে কৃষি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি এই তিন ধরনের প্রভাবে পুড়ছে ফসলের মাঠ। ফলে ভরা বৃষ্টির মৌসুমে আশানুরুপ বৃষ্টি না হওয়ার কারণে সেচযন্ত্র বা স্যালোমেশিনের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে কৃষকদের।

খোঁজ খবর নিয়ে দেখা যায়, চলতি আমন মৌসুমের শুরু থেকে সেচের ব্যবস্থা সচল রাখতে হচ্ছে চাষিদের। তারপর আবার নতুন করে যোগ হয়েছে, রাসায়নিক সার ও কৃষি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ।ফলে ফসল উৎপাদনের তুলনায় খরচের পাল্লা ভারীই হবে বলে জানিয়েছে কৃষক মহল।

সম্প্রতি বাঘারপাড়া উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ রোপা আমন ও অন্যান্যে ফসলের জমিতে সেচযন্ত্র স্যালোমেশিনের মাধ্যমে ফসলের জমিতে পানি দেওয়ার কাজে ব্যাস্ত রয়েছে চাষিরা। তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে , চলিত মৌসুমে রোপা আমন সহ অন্যান্যে ফসল উৎপাদনে বৃষ্টির উপর কমবেশি ভরসা থাকে। কিন্তু এবছর তীব্র তাপদাহ এবং খরার কবলে পড়েছে ফসলের মাঠ । জমিতে দুএকদিন পর পর পানির ব্যবস্থা না করলে শুকিয়ে ধানগাছ ও অন্যান্যে ফসল দুর্বল হয়ে পড়ছে। বেশির ভাগ কৃষক বলেছেন, ডিজেল, সার এবং কৃষি পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে আমন আবাদের খরচের সাথে মিল খাওয়াতে নাজেহাল হতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে চরম শঙ্কিত তারা। ইতিমধ্যে বর্ষাকালের দুইমাস অতিবাহিত হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বাঘারপাড়া উপজেলায় ১৬ হাজার ৮” শ” হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। এবছর সেচের জন্য বিঘা প্রতি দুই হাজার টাকা বাড়তি খরচের আশাংখ্যা রয়েছে। রাসায়নিক সারের দাম বৃদ্ধিতে গতবছরের তুলনায় একহাজার টাকা বেশি খরচ হবে । জমি তৈরি করতে তিন চাষে পাওয়ার ট্রিলারে গত বছর ১২” শ”টাকা ছিল কিন্তু এবছর ২১”শ” টাকা পর্যন্ত খরচ হবে। ফলে প্রতি বিঘায় খরচ দাঁড়াবে ১৮ থেকে ২২ হাজার টাকা।আর ধান উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ১৫ থেকে ২০ মন বিঘা প্রতি । ধান উঠা মহুর্তে ৯” শ” থেকে ১১” শ” বিক্রি হতে পারে, তাতে ১৪ থেকে ২১ হাজার হতে পারে। এমন অবস্থায় লোকসানের বোঝা নেমে আসতে পারে ২ থেকে ৪ হাজার টাকা । উপজেলার জামদিয়া এলাকার কৃষক আব্দুল আলীম, মোঃ ইসহাক, রানা, আব্দুর রহমান, বাসুয়াড়ী ইউনিয়নের কৃষক মিজানুর রহমান, সোহরাব হোসেন, ইকবল কবির, শরিফুল ইসলাম, আবদুল কাদের,হারুনর রশিদসহ অনেক কৃষকের সাথে কথা হয় প্রতিবেদক, সাঈদ ইবনে হানিফের, তারা বলেন, আষাঢ় গেলো শ্রাবণও চলে গেছে ভাদ্র মাস বর্ষার ঘনঘটা কিন্তু এবছর নেই। আবহাওয়ার পরিস্থিতিতে মনে হয় না বৃষ্টি হবে।এমন অবস্থা চলতে থাকলে বোরো চাষের মত খরচ আমনেও সমপরিমাণ এসে যাবে।এবিষয়ে বাঘারপাড়া উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাগন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে স্বরণকালের অনাবৃষ্টি ঘটনা ঘটাছে এবছর। যার পরিপ্রেক্ষিতে ফসলের মাঠে কিছুটা প্রভাতো পড়বেই। তবে আমাদের কৃষক তো থেমে নেই তারা বিভিন্ন পরিকল্পিত উপায়ে আমন ধান ও অন্যান্যে ফসল উৎপাদনে ব্যাস্ত সময় পার করছেন । এমন অবস্থায় চলতি মৌসুমে কৃষকের উৎপাদন খরচ বাড়বে তবে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ফসলের আশানুরূপ মূল্য পাওয়া গেলে কৃষক মহল লাভবান হবে বলে জানিয়েছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা গন।