সনতচক্রবর্ত্তী:মাগুরার মোহাম্মদপুরে উপজেলার সূর্য কুন্ড গ্রামে কোয়েল পাখি পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন সাজ্জাদ হোসেন(২৫) নামে এক যুবক । সাজ্জাদ হোসেন ২০১০ সালে মাত্র ১৫০ কোয়েল পাখির বাচ্চা বাড়ির এক কোনে পুষতে শুরু করে। বর্তমানে তার তিনটি খামার রয়েছে। খামারের মধ্যে রয়েছে পোল্ট্রি মুরগী, কবুতর,কোয়েল পাখি,সেটি মিলেয়ে প্রায় ৫ হাজার মতো হবে।শখের বশে কোয়েল পাখি পালনের করে এবং ৪৫০ টাক পুঁজিতেই মাত্র এক মাসের মাথায় দেখতে পান সাফল্য।
নিজস্ব পদ্ধতি কোয়েল পাখি পালন ও বিক্রি করেও লাভবান হচ্ছেন তিনি। কোয়েল পাখির রোগ-বালাই কম হওয়ায় এবং বাজারে এর চাহিদা থাকায় বিভিন্ন এন জি ও থেকে লোন নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে এ ব্যবসা শুরু করেন তিনি। বর্তমানে এন জি ও এর টাকা শোধের দিকে।
সাজ্জাদ হোসেন জানান, অভাবের কারণে লেখা- পড়া করতে পারিনি।চারিদিকে সবকিছু অর্থহীন লাগতো, ভ্যান চালিয়ে ৬-৭ জনের সংসারে হাঁপিয়ে উঠেছি। হাত খরচের(৪৫০) টাকা বাঁচিয়ে শখের বসে কোয়েল পাখি পালন করি।
কোয়েল পাখির মাংস সুস্বাদু হওয়ায় উপজেলায় মোহাম্মদপুর বাজারে এর চাহিদাও রয়েছে বেশ। এখন তার খামার প্রায়২ হাজারেরও বেশি কোয়েল পাখি রয়েছে। এছাড়াও পোল্ট্রি মুরগী, কবুতর রয়েছে খামারে। খামার থেকে এখন প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার ডিম এবং প্রায় ২ হাজার পাখি বিক্রির উপযোগী হচ্ছে। বর্তমানে তার এসব খামার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন পরিবারের সবাই। মাসে সব খরচ বাদ দিয়ে গড়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা লাভ হয় তার।
সাজ্জাদ হোসেন এর স্ত্রী জানান, কোয়েল পাখি জন্মের ২২দিন পর মাংস খাওয়ার উপযুক্ত হয়ে ওঠে। তখন থেকে মর্দা পাখিকে বাজারে বিক্রি শুরু করেন এবং মাদি পাখি পালন শুরু করেন। আর এসব পাখি ৪২ দিনের মাথায় ডিম দেওয়া শুরু করে এবং টানা ১৮ মাস ডিম দেয়। এক হাজার ডিম পাইকারি বিক্রি করে ২ হাজার টাকা পাওয়া যায়। কিন্তু একই পরিমাণ ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন করে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা পাওয়া যায়। ডিম বিক্রির চেয়ে বাচ্চা উৎপাদনে বেশি লাভ বলে মনে করেন তিনি। এখন তাকে অনুসরণ করে কোয়েল চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন এলাকার অনেক বেকার যুবক।
প্রতিদিন পাখি ও ডিম কিনতে ব্যবসায়ী ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকে ছোট-বড় খামারিরাও আসেন অনেকে। খামারে প্রতিটি পাখির দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা হলেও বাজারে বিক্রি হয় প্রায় ২০০ টাকা জোড়া।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিপুল কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, কোয়েল পাখির রোগ-বালাই কম এবং সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদা থাকায় লাভবান হওয়া যায় খুব সহজে। বেকার যুবকদের সাজ্জাদের মতো উদ্বুদ্ধ হয়ে কোয়েল পালনের পরামর্শও দেন এ কর্মকর্তা। প্রশিক্ষণ নিতে চাইলে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সরকারি সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস ও দেন তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.