ডেস্ক রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক শেষে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করেছে চা বাগান মালিকরা। সেই সঙ্গে আনুপাতিক হারে বাড়বে অন্য সুবিধাও। সব মিলিয়ে দৈনিক মজুরি হবে প্রায় ৪৫০-৫০০ টাকা বলে দাবি চা বাগান মালিকদের। শনিবার বিকেল ৪টার পর গণভবনে এ বৈঠক শুরু হয়। এতে দেশের বৃহৎ ১৩ চা বাগান মালিক উপস্থিত ছিলেন।
বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের দাবি, মাঠ পর্যায়ের একজন চা-শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা, প্লাকিং বোনাস/মাঠ/কারখানা অধিককাল কাজের আয় ৬৫ টাকা, বার্ষিক ছুটি ভাতা ৪.৬০ টাকা, বেতনসহ উৎসব ছুটি ৪.৬০ টাকা, অসুস্থতা জনিত ছুটি ৬.৫৮ টাকা, ভবিষ্যৎ তহবিলে নিয়োগ কর্তার চাঁদা ৯ টাকা, কাজে উপস্থিতি অনুযায়ী বার্ষিক উৎসব ভাতা ১৫.৪৫ টাকা এবং মোট প্রদত্ত চাঁদার ৫% প্রশাসনিক খরচ ০.৯০ টাকাসহ মোট ২২৬.১৩ টাকা মজুরি পান।
আর কারখানা পর্যায়ের একজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ১২৪ টাকা আর প্লাকিং বোনাস/মাঠ/কারখানা অধিককাল কাজের আয় ৩০ টাকা। বাকিগুলো মাঠের শ্রমিকের মতোই। তারা মোট পান ১৯৫.১৩ টাকা।
চা সংসদ বলছে, দৈনিক মজুরির বাইরে একজন চা-শ্রমিক (মাঠ ও কারখানা) ঘর ভাড়া ছাড়াও ভর্তুকি মূল্যে রেশন (প্রতি কেজি ২ টাকা দরে) সরবরাহ বাবদ ব্যয় (চাল ও আটার গড়) ৩০.৭১ টাকা, চিকিৎসা সুবিধা ৭.৫০ টাকা, অবসর প্রাপ্ত শ্রমিকদের পেনশন বাবদ ২ টাকা, ধানক্ষেতের জন্য ভূমি উন্নয়ন কর/ইজারা মূল্য পরিশোধ বাবদ ০.১০ টাকা, চা-শ্রমিক পোষ্যদের শিক্ষা বাবদ ব্যয় ১.৫০ টাকা, রক্ষণাবেক্ষণ, গরু চড়ানো, চৌকিদার প্রভৃতি বাবদ ব্যয় ১ টাকা, শ্রমিক গৃহের জন্য ব্যবহৃত জমি বাবদ ভূমি উন্নয়ন কর/ইজারা মূল্য ০.০২ টাকা, শ্রমিক কল্যাণ কর্মসূচি (গৃহ মেরামত, বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক স্প্রে, পয়ঃনিষ্কাশন, পাতি গামছা সরবরাহ, ছুপি সরবরাহ, ছাতা সরবরাহ, জ্বালানি কাঠ, পূজা, খেলাধুলা, বিনোদন, পণ্ডিত, শেষকৃত্য, প্রভৃতি বাবদ ৪৩ টাকা এবং বাসাবাড়িতে উৎপাদিত ফলমূল প্রভৃতি বাবদ আয় ১৪ টাকাসহ মোট ১৭৬.৭৫ টাকার সুযোগ-সুবিধা পান। অর্থাৎ মজুরি এবং দ্রব্য ও সেবার সুবিধাসহ একজন মাঠ পর্যায়ের শ্রমিক দৈনিক ৩৭১.৮৮ টাকা এবং মাঠ পর্যায়ের শ্রমিক ৪০২.৮৮ টাকা পান বলে বাগান মালিকদের দাবি।
প্রসঙ্গত, দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকার দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে ৪ দিন ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি করেন চা শ্রমিকরা। এরপর তারা ১৩ আগস্ট থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন। এর মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হলেও তা সমাধান হয়নি। এরইমধ্যে তারা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন। শেষ পর্যন্ত গত শনিবারের বৈঠকে তাদের মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হলে নেতারা আন্দোলন প্রত্যাহার করেন।
পরবর্তীতে শ্রমিকরা এ মজুরি মানেন না জানিয়ে ফের আন্দোলনে নামেন। কয়েক দফা বৈঠকের পর সোমবার তাদের একাংশ কাজে যোগ দিলেও মঙ্গলবার ফের তারা আন্দোলন শুরু করেন। এদিকে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী আজ শনিবার বিকেলে বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.