ডেস্ক রিপোর্ট : আজ (২৭ আগস্ট) জাতীয় (বিদ্রোহী) কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী । তিনি ১৯৭৬ সালের এ দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব (সাবেক পিজি হাসপাতাল) মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধেও নজরুলের কবিতা-গান জনগণকে উজ্জীবিত করেছে।
নজরুল ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার অগ্রসর মানুষ। ইসলামী গজলের পাশাপাশি লিখে গেছেন শ্যামা সংগীত। বাংলা সাহিত্য ও সংগীতে নতুন এক দিগন্ত উন্মোচিত হয় জাতীয় কবি নজরুলের হাত ধরে। সাহিত্য হয় সমৃদ্ধ। শুধু কবিতা ও গানেই তিনি নিজেকে সীমিত রাখেননি; লিখেছেন নাটক-উপন্যাসও। তিনি সমৃদ্ধ করেছিলেন বাংলা শিশু সাহিত্যকেও। ভারত বর্ষে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ধারাকে নজরুল তার সাহিত্যে বিপুলভাবে ধারণ করেছেন। মানুষের দুয়ারে পুনর্জাগরণের ডাক পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। একজন বলিষ্ঠ নেতার মতোই সমাজের নেতৃত্ব দিয়েছেন নজরুল। কবির মৃত্যুর মধ্যদিয়ে বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী যুগের অবসান হয়েছিল। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। সেখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।
কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে দেশের শিল্পী-সাহিত্যিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলো। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদসংলগ্ন কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ উপলক্ষে শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় কবি নজরুল ইনস্টিটিউট ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে আলোচনাসভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান মালা প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে, ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দ) জন্মগ্রহণ করেন স্বাধীনতাকামী এ কবি। ছোট বেলায় তার ডাকনাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন। প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। নজরুলের কবিতা, গান ও সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তার লেখনী জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে স্বাধীন বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে কবি নজরুলকে সপরিবারে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। তাকে দেয়া হয় জাতীয় কবির মর্যাদা। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক বিশেষ সমাবর্তনে কবিকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি দেয়। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি একুশে পদকে ভূষিত হন কবি।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.