ঝিকরগাছা (যশোর) প্রতিনিধিঃ যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার এবং রোগীর দ্বন্দে প্রায় দুই ঘন্টা স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হয়েছে৷ বুধবার সকাল দশটা থেকে বারোটা পর্যন্ত এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল হক ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুমন ভক্তের হস্তক্ষেপে ডাক্তাররা বহির্বিভাগে ফেরেন। এইসময়ে হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে এসে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সেবাপ্রত্যাশীরা। তবে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সেবা স্বাভাবিক ছিল।
জানা যায়, বুধবার সকাল দশটার দিকে হাসপাতালের ওয়ার্ডে রাউন্ড দিচ্ছিলেন ডাক্তার রাফেজাতুন জান্নাত রজনী। এসময় তাইজুল ইসলাম নামের এক রোগীর কথা না শোনাকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডার সুত্রপাত ঘটে। ওই রোগী বলেন, আমার জ্বর, হাত পায়ে শক্তি পাচ্ছিনা তাই হাসপাতালে ভর্তি হই। ডাক্তারকে চারবার বলার পরেও তিনি কথা শুনছিলেন না। পরে ডাক্তার বলেন, প্রয়োজনে একশবার বলবেন। বলতে না পারলে সেবা না নিয়ে চলে যান৷
এসময় ডাক্তারের সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন পাশের বেডের ডায়রিয়া রোগী উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের ইফাজ উদ্দীন। তিনি হাসপাতালের ওয়ার্ডেই চিল্লাচিল্লি আরম্ভ করেন। ডাক্তারকে মারতে রুখে যান। তার দাবি ডাক্তার এবং নার্স ফ্লোরে তার বেডের উপরে জুতা পায়ে দাঁড়িয়ে ছিল। এসময় তার মেয়ে প্রতিবাদ করলে তারা খারাপ ব্যবহার করে। তার মেয়ে অভিযোগ করেন এই ঘটনায় হাসপাতালের স্টাফরা তাদের বাইরে বের হলে দেখে নেয়ার হুমকি দেন।
তবে ডিউটিরত ডাক্তার এবং নার্স এইসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তারা জানান, তাইজুল ইসলাম নামের ওই রোগী তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। এছাড়া ডায়রিয়া রোগী ইফাজ উদ্দীন অকারণে ডিউটিরত ডাক্তারের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। তুই তোকারি করে মুখের মাস্ক খুলতে বলেন এবং নানাভাবে হুমকিধামকি দেন।
এইঘটনার পরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. রশিদুলের আলমের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত ডায়রিয়া রোগী ইফাজ উদ্দীন ডাক্তার রাফেজাতুন জান্নাত রজনীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। এরপরেও হাসপাতালের মেডিকেল অফিসাররা কর্মবিরতিতে যান। পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে থাকলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসির হস্তক্ষেপে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর ডাক্তাররা বহির্বিভাগে ফেরেন।
ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রশিদুল আলম জানান, একজন রোগী ডিউটিরত ডাক্তারের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরিপ্রেক্ষিতে ডাক্তাররা প্রায় ঘন্টাখানেক কর্মবিরতিতে যায়। তবে হাসপাতালের জরুরী সেবা স্বাভাবিক ছিল। এসময় ডাক্তার ও স্টাফদের নিরাপত্তার স্বার্থে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.