ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেওয়া নবজাতক সুস্থ আছে। চরপাড়া লাবিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটির দায়িত্ব নিতে চান অনেকেই। তবে শিশুটির বেঁচে থাকা অপর দুই ভাই-বোনের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

অলৌকিকভাবে বেঁচে থাকা নবজাতক বর্তমানে ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া লাবিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শিশুটি সুস্থ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান।

তিনি বলেন, ‘নিহত জাহাঙ্গীর আলম আমার প্রতিবেশী। জাহাঙ্গীরের তিন সন্তানের মধ্যে একজন মারা গেছে। অপর দুজন এবাদত মিয়া (৮) ও জান্নাত আক্তার (১০)। ছেলেটা কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধী। এখন এই নবজাতকসহ তারা তিন ভাই-বোন হলো। তাদের দাদা দাদি দুজনই প্রতিবন্ধী হওয়ায় এই শিশুদের দেখাশুনা এমনকি ভরণপোষণের কেউ নেই।’

শাহজাহান আরও বলেন, ‘অনেক মানুষ নবজাতকের দায়িত্ব নিতে চায়। কিন্তু অন্য দুই ভাই-বোনের খবর এখন পর্যন্ত কেউ নেয়নি। আমরা আশাবাদী, শুধু নবজাতক নয় তিনজনের দায়িত্বই প্রশাসন নেবে।’

এদিকে শনিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে লাবিব হাসপাতালে ওই নবজাতকের খোঁজখবর নিতে যান জেলা প্রশাসক মো. এনামুল হক। এসময় সাংবাদিকদের জেলা প্রশাসক জানান, নবজাতকের চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব ও ভবিষ্যতে যেন তার কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য তার নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, শনিবার দুপুরে উপজেলার রাইমনি গ্রামের ফকির বাড়ির মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০) তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্না বেগম (৩০) ও মেয়ে সানজিদাকে (৬) নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশাল শহরে আসেন।

খান ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গীর আলম ও স্ত্রী রত্না বেগম মারা যান এবং মেয়ে সানজিদা আক্তার গুরুতর আহত হয়। এসময় ট্রাকচাপায় রত্না বেগমের পেট ফেটে কন্যা শিশুর জন্ম হয়।

পরে আহত সানজিদা ও নবজাতককে নিয়ে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সানজিদাকে মৃত ঘোষণা করে নবজাতককে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখান থেকে চিকিৎসা দিয়ে নবজাতকটিকে চরপাড়া এলাকায় লাবিব হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।