আব্দুল্লাহ আল-মামুন, স্টাফ রিপোর্টার : বেনাপোল ইমিগ্রেশন কাস্টমসে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা ভ্রমণ কর ফাাঁকির মহোৎসবে হানা দিয়ে জালিয়াতি চক্রের একাংশের হোতা শামীমসহ ৩ সহযোগীর নামে মামলা করছেন কাস্টম কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার সময় চেকপোস্টের বেনাপোল ট্রাভেল পয়েন্ট নামের একটি কম্পিউটার কম্পোজ ও যাত্রী সেবার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ভারত যাতায়াতে কয়েকটি পরিবহন যাত্রীদের নকল ট্যাক্স দিয়ে ইমিগ্রেশন পার করার চেষ্টা করে। এসময় কাস্টমসের কঠোর নজরদারিতে তার প্রতিষ্ঠানের দেওয়া সকল ভ্রমণ কর রশিদ পরীক্ষা করে নকল বলে প্রমানিত হয়। এসময় দীর্ঘদিন ধরে ভ্রমণ কর রশিদের রমরমা বাণিজ্যকারি প্রতারক চক্রের একাংশের হোতা শামিমসহ তার তিন সহযোগীর নামে মামলা রুজু করতে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেন কাস্টম কর্তৃপক্ষ। অবশেষে এঘটনায় কাস্টম বাদি হয়ে প্রতারক চক্রের একাংশের হোতা শামিমসহ তার ৩ সহযোগীর নামে মামলা করছেন। পুলিশ তার কম্পিউটার হাউসে হামলা দিয়েছেন। পালিয়ে থেকে সকল ঝামেলা মেটাতে জোর তদ্বিরে রয়েছে প্রতারক চক্র শামিম গং।

শামিম হোসেন বেনাপোল পোর্ট থানার সাদিপুর গ্রামের গোল্ড সম্রাট মমিনের ছেলে। তার পিতা মমিন ইতিপূর্বে কয়েকবার অর্ধ শতাধিক পিস গোল্ড নিয়ে পুলিশ ও বিজিবির হাতে আটক হলেও তাদের খুটির জোর মজবুত হওয়ায় বেশিদিন তার জেলখানায় থাকতে হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল ইমিগ্রেশন কাস্টমসকে কেন্দ্র করে ভারত যাতায়ায়াতকারি পাসপোর্ট যাত্রীদের সেবার নামে চেকপোস্টে ভুঁইফোড়ের মতো গজিয়ে উঠেছে শহস্রাধিক এন্টার প্রাইজ, পরিবহন কাউন্টার, কম্পিউটার কম্পোজ, ফটোকপিসহ বিভিন্ন নামের দোকান। যাদের অধিকাংশ ভ্রমণ কর জালিয়াতি, পাসপোর্ট যাত্রীদের টাকা গুণে দেওয়ার নাম করে কৌশলে টেবিলের নিচে ফেলে দিয়ে শুভঙ্করের ফাঁকি, ছিনতাই, রাজস্ব ফাঁকিবাজ পাসপোর্ট যাত্রী নামধারী ব্যবসায়ীদের ল্যাগেজ পারাপার, হুন্ডি পাঁচারসহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। যেখান থেকে এসকল অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে সরকার প্রতিদিন রাজস্ব হারাচ্ছে ১০ লক্ষ থেকে অর্ধকোটি টাকা।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার জানান, ইতিমধ্যে পাসপোর্ট যাত্রীর চাপ বেড়েছে বন্দরে। এতে কিছু প্রতারক চক্র যাত্রীদের সাথে প্রতারনা করে ভ্রমন কর জালিয়াতি করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করছে। বৃহস্পতিবার এই চক্রের সদস্যরা কয়েকটি পরিবহনের যাত্রীদের জাল ট্যাক্স করে ইমিগ্রেশন পার করছিল। এসময় সন্দেহ হলে যাত্রীদের ভ্রমন করের কাগজ পরীক্ষা করে দেখা যায় ভূয়া ট্যাক্স কপি। পরে কাস্টমস তাদের নামে মামলা দায়ের করে।

বেনাপোল কাস্টমসের সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন জানান, সরকারের ভ্রমন কর জালিয়াতির ঘটনায় ৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন।

বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) কামাল হোসেন ভুইয়া জানান, কাস্টমস বাদি হয়ে মামলা করছেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। ভ্রমন কর ফাঁকিতে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।

এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম চলছিলো। পুলিশ বলেছেন রাত ১২ টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।