শার্শা অফিস : যশোরের নাভারন হাইওয়েতে পুলিশ টোকেনের মাধ্যমে মহাসড়কে প্রকাশ্যে ব্যাপক চাঁদাবাজি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে গাড়ির মালিক ও চালকরা। এদিকে মহাসড়কে অবৈধ যান ও মাটি বহনকারী বাহনের ফলে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ছোটছোট দুর্ঘটনার ফলে সাধারন মানুষ হচ্ছে মারাত্মক জখম।
ভুক্তভোগীরা অবৈধ ও বৈধ যানবাহনের ড্রাইভাররা বলছেন, মামলার ভয় দেখিয়ে ও কাগজপত্র দেখার নামে হাইওয়ে পুলিশ নিয়মিত মাসোহারা ও প্রতিদিন চাঁদা নিচ্ছে। এ ঘটনায় যানবাহনের মালিক ও চালকরা অসহায়ত্বের কথা বললেও চাঁদার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন নাভারন হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মঞ্জুরুল আলম।
জানা যায়, যশোর জেলার শার্শা উপজেলার প্রবেশদ্বারখ্যাত নাভারনে স্থাপিত হয়েছে হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি। নাভারন সাতক্ষিরা মোড় থেকে মহাসড়ক দুইভাগে বিভক্ত হয়েছে।
একটি নাভারন-বেনাপোল, অপরটি নাভারন-সাতক্ষিরা মহাসড়ক। এ মহাসড়ক দুটি দিয়ে প্রতিদিন ২০-২৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে। মহাসড়কে নিরাপত্তা, দুর্ঘটনা রোধ এবং মাদক চোরাচালান বন্ধ করা এ ফাঁড়ির পুলিশের প্রধান কাজ। কিন্তু তারা নিজেরাই চাঁদাবাজিতে বেশি ব্যস্ত থাকে বলে ভুক্তভোগিদের অভিযোগ। সড়কে প্রতিদিন প্রায় ১০হাজার অবৈধ যান বিভিন্ন মালামাল নিয়ে ও মাটি বহনকারী ট্রাক্টর চলাচল করলেও অজানা কারনে নাভারন হাইওয়ে ফাঁড়ি পুলিশের না দেখার ভান করে এড়িয়ে চলে।
নাভারন হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির চাঁদাবাজি নীরবে সহ্য করে যাচ্ছে যানবাহনের মালিক, শ্রমিকরা। তারা দিন-রাত সমানতালে পুলিশের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হলেও ভয়ে মুখ খুলতে পারে না। নাম না প্রকাশের শর্তে আলম নামের এক ইজিবাইক চালক জানান, আমাদের গত ২মাস আগ পর্যন্ত টোকেন দিলেও বর্তমানে কোন টোকেন দিচ্ছে না। তবে মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে বিনা রসিদে ২৫শত টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেয়।
এদিকে এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক্টর দিয়ে মাটি বহন করে চলেছে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আশ্রয়ে থাকা কয়েকজন ব্যক্তি। ভরা বর্ষা মৌসুম চললেও থামছে না মাটি বহন করা। যার ফলে হাইওয়ে সড়ক সহ গ্রাম্য রাস্তাগুলি কর্দময় পিচ্ছিল হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।
মালিক চালকদের অভিযোগ, ‘সন্ধ্যার পর টহলের নামে পুলিশের চাঁদাবাজি ভয়াবহ রূপ নেয়। দূরের মালবাহী ট্রাক ছোট, ছোট পিকআপ টাকা না দিলে রেহাই নেই। মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও টোকেনের মাধ্যমে ফাঁড়ির পুলিশ নিয়মিত চাঁদা নিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করে দেয়।’
এ ব্যাপারে শার্শা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ওসমান গনি বলেন, বাইক নিয়ে মহাসড়কসহ গ্রাম্য রাস্তাও চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। পিচের রাস্তার উপর মাটি পড়ে একটু বৃষ্টিতে পিচ্ছিল কাদার সৃষ্টি হয়েছে। যাদের দেখার কথা তারা নিশ্চুপ থাকা এহেন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে নাভারন হাইওয়ে পুলিশের সাবেক ইনচার্জদের বিরুদ্ধে ব্যাপক চাঁদাবাজির বিষয়টি বেশ কয়েকটি পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে তাদেরকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়।
এ বিষয়ে নাভারন হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মঞ্জুরুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি চাঁদাবাজীর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, খুব শীগ্রই অবৈধ যানবাহনের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.