নিজস্ব প্রতিবেদক : টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে হু হু করে বাড়ছে দেশের নদ-নদীর পানি। ফলে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। শুক্রবার দুপুরে বন্যা পরিস্থিতি ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশের অন্তত ১০টি নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বন্যা পরিস্থিতি ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আরও বলছে, উজানের ঢল ও বৃষ্টির কারণে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা, সুরমা, কুশিয়ারা, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারসহ সব প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।

শুক্রবার দুপুরে বন্যা পরিস্থিতি ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নোয়াখালীর হাতিয়া পয়েন্টে ব্ৰহ্মপুত্ৰ নদীর পানি বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদীর পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার, কুড়িগ্রাম পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার, ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার, কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১০৮ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার, সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১২০ সেন্টিমিটার, সারিঘাট পয়েন্টে সারিগোয়ান নদীর পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার, দেরাই পয়েন্টে পুরাতন সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার, লরেরগড় পয়েন্টে যাদুকাটা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫৪ সেন্টিমিটার, নেত্রকোণার কলমাকান্দা পয়েন্টে সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ও নাকুয়াগাঁও পয়েন্টে ভুগাই নদীর পানি বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

নদ-নদীর পরিস্থিতি ও পূর্বাভাসে সংস্থাটি জানিয়েছে, আবহাওয়া সংস্থাসমূহের গাণিতিক মডেলভিত্তিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের কতিপয় স্থানে মাঝারি থেকে ভারী কোথাও কোথাও অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে দেশের সব প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাবে।

এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও নেত্রকোণা জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।

এদিকে ক্রমেই অবনতি হচ্ছে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির। সড়ক তলিয়ে সারা দেশের সঙ্গে সুনামগঞ্জের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র ও বৈদ্যুতিক খুঁটি তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। এতে দুই জেলার অন্তত দুই লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন অন্তত ২০ লাখ মানুষ।