আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বব্যাপি ক্রমেই সংক্রমণের পরিধি বাড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স। নতুন করে আরও দুটি দেশে ছড়িয়েছে বিরল এ রোগটি। সবশেষ স্লোভেনিয়া ও চেক রিপাবলিকে রোগটির সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত ১৭টি দেশে ছড়াল রোগটি।
আজ মঙ্গলবার (২৪ মে) স্লোভেনিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি স্পেনের ক্যানারি দ্বীপ থেকে ফিরেছেন এমন এক ব্যক্তির শরীরে মাঙ্কিপক্স ধরা পড়েছে। দেশটির জাতীয় রোগ নির্ণয় প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজের প্রধান মারিও ফাফাঞ্জেল জানান, মাঙ্কিপক্সের একটা দুর্বল ধরনে আক্রান্ত হয়েছেন ওই ব্যক্তি। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি।
ফাফাঞ্জেল আরও বলেন, তার বিশ্বাস স্লোভেনিয়ায় রোগটির সংক্রমণ শিগগিরই থামিয়ে দেওয়া যাবে। ইতোমধ্যে যারা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন, তাদের ২১ দিনের জন্য সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। এর জন্য জনগণকে ব্যাপকভাবে টিকাকরণের দরকার নেই বলে জানান এ কর্মকর্তা।
একইদিন মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের প্রথম ঘটনা নথিভুক্ত করে চেক রিপাবলিকও। দেশটির রোগ নির্ণয় সংস্থা চেক সোসাইটি ফর ইনফেকশাস ডিজিজের প্রধান পাভেল ডেলোহি এএফপিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রাগ মিলিটারি ইউনিভার্সিটি হসপিটালে এক ব্যক্তির দেহে ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
মহামারি করোনার মধ্যেই নতুন আতঙ্ক হয়ে এবার সামনে এসেছে মাঙ্কিপক্স। বিরল এ রোগটি দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে দেশে দেশে। প্রথম মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায় যুক্তরাজ্যে। এরপর ইউরোপের স্পেন, জার্মানি, পর্তুগাল, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি ও সুইডেনেও এ রোগে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। ইউরোপের দেশগুলোসহ কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় ৮০ জনের বেশি লোকের মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ ধরা পড়ে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আফ্রিকার পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হাজারো রোগী শনাক্ত হলেও ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলোয় এত দিন রোগটির প্রাদুর্ভাব দেখা যায়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গত শনিবার সতর্ক করে বলে, মাঙ্কিপক্স আরও ছড়াতে পারে।
মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের বিষয়টি বিজ্ঞানীদের কাছে বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে। তবে তারা বলছেন, এটি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছড়ানোর ও ব্যাপকভাবে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি কম। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বলছে, মাঙ্কিপক্স থেকে সৃষ্ট অসুস্থতা মৃদু। রোগী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায়।
মাঙ্কিপক্সের জন্য নির্দিষ্ট কোনো টিকার কথা এখনো বলেননি বিশেষজ্ঞরা। তবে বিবিসি বলছে, কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে গুটিবসন্তের টিকা সংরক্ষণ করতে শুরু করেছে। গুটিবসন্তের সঙ্গে মাঙ্কিপক্সের মিল রয়েছে বলে এই টিকা ৮৫ শতাংশ কার্যকর হতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাঙ্কিপক্স খুব একটা গুরুতর নয়। সংক্রমণের সক্ষমতাও তুলনামূলক কম। রোগটির প্রাথমিক লক্ষণ জ্বর, মাথাব্যথা, পেশিতে ব্যথা ও অবসাদ। পরে মুখ ও শরীরে চিকেনপক্সের মতো র্যাশ বা ফুসকুড়ি দেখা যায়। তবে, এ রোগ নিজে থেকেই কেটে যায়। ১৪-২১ দিনের মধ্যে সেরে ওঠেন রোগীরা।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.