নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত ঢাকা সাত আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। রবিবার বিকালে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
এর আগে বেলা তিনটার দিকে আত্মসমর্পণ করতে আদালতে হাজির হন এই সংসদ সদস্য। বেলা তিনটা ২০ মিনিটে তার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়।পরে আদালত হাজী সেলিমের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
হাজী সেলিম আদালতে হাজির হওয়ার আগেই তার পক্ষে তিনটি আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী প্রাণনাথ। আবেদনের একটিতে আপিলের শর্তে জামিন চাওয়া হয়। দ্বিতীয় আবেদনে কারাগারে পাঠানো হলে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা চাওয়া হয়। আর তৃতীয় আবেদনে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ চাওয়া হয়।
এদিকে হাজী সেলিমের আদালতে আসার খবরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের সামনে ভিড় করেন নেতাকর্মীরা। আদালতের এজলাস কক্ষের বাইরে ও আদালতের প্রবেশ মুখে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল বিশেষ আদালতের রায়ে তাকে মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে ‘সহযোগিতার’ দায়ে হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা বেগমকে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হাজী সেলিম হাইকোর্টে আপিল করেন।
এ বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগে হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে গত বছর দেওয়া রায়টি প্রকাশ করা হয়। ৬৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। যেখানে তাকে এক মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। কিন্তু হঠাৎই চিকিৎসার কথা বলে তিনি দেশত্যাগ করেন। পরে অবশ্য দেশে ফিরেও আসেন।
আওয়ামী লীগের টিকেট নিয়ে সংসদ সদস্য হওয়া হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন এবং ৫৯ কোটি ৩৭ লাখ ২৬ হাজার ১৩২ টাকার তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর লালবাগ থানায় মামলা করে দুদক। ওই মামলায় ২০০৮ সালে হাজী সেলিমকে দুদক আইনের দুটি ধারায় মোট ১৩ বছর কারাদণ্ড দেন বিশেষ জজ আদালত।
কিন্তু ২০০৯ সালে হাজী সেলিম বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১১ সালে ওই সাজা বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে দুদক। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় শুনানি করতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। নির্দেশ অনুযায়ী ২০২০ সালে মামলাটি শুনানির জন্য উদ্যোগ নেয় দুদক।
ফের শুনানি শেষে গত বছরের ৯ মার্চ রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। রায়ে আংশিক আপিল মঞ্জুর করে ১০ বছর কারাদণ্ড বহাল রাখেন আদালত। আর তিন বছরের দণ্ড থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়। চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.