আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনে চলমান রুশ সেনা অভিযানের দুই মাস পার হয়েছে। তবে এখনো শান্তি আলোচনার যেমন ফল শূন্য, তেমনি নেই যুদ্ধ থামার ন্যুনতম লক্ষণ। বরং, আরও জোরদার হয়েছে পুতিন বাহিনীর হামলা। ভয়াবহতার দিক থেকে যুদ্ধের ৬০তম দিনে ব্যাপক আগ্রাসী ছিল রুশ বাহিনী। একাধারে বড় ধরনের হামলা হয় ওডেসা, খারকিভ ও দোনবাসে। এতে প্রাণ যায় ১৭ জনের।
ঠিক দু’মাস আগে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ এর নামে ইউক্রেনের তিন ফ্রন্টে হামলা শুরু করে রাশিয়া। আট সপ্তাহের মাথায় আজভ সাগরের তীর থেকে খারকিভ পর্যন্ত ২ থেকে আড়াইশ’ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে এখন রুশ সেনাদের উপস্থিতি। তবে বেশিরভাগ এলাকাই পূর্ণ দখলে নিতে পারেনি তারা। ইউক্রেনের অভাবনীয় প্রতিরোধের মুখে যুদ্ধের মাসখানেকের মাথায় কৌশল পরিবর্তন করে রুশ সেনারা। কিছুদিন হামলা স্তিমিতের পর দ্বিতীয় ধাপের অভিযানে নামে পুতিন বাহিনী। এবার টার্গেট করা হয় দোনবাস ও দক্ষিণাঞ্চলে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ, যাতে ক্রাইমিয়ার সাথে স্থল করিডোর তৈরি করা যায়। এর মাধ্যমে কৃষ্ণসাগরসহ ইউক্রেনের প্রধান স্থাপনাগুলোতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠাই মস্কোর লক্ষ্য। সিএনএনকে এক রুশ সৈন্য বলেন, আমরা ভোলনোভাখায় ছিলাম। মারিনকায় পৌঁছেছে বাহিনী। উত্তর পশ্চিমের দিকে যাচ্ছি। সম্পূর্ণ প্রস্তুত আমরা।
যুদ্ধের ৬০তম দিনে শনিবার ইউক্রেনের একাধিক শহরে ব্যাপক হামলা চালায় পুতিন বাহিনী। কৃষ্ণসাগর উপকূলের শহর ওডেসায় ছোঁড়া হয় ৭টি মিসাইল। এতে বিধ্বস্ত হয় একটি সামরিক স্থাপনা ও একাধিক আবাসিক ভবন। পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভেও ৫০টির বেশি রকেট বা গোলা ছুঁড়েছে রুশ বাহিনী। খারকিভের গভর্নর ওলেহ সিনিউহুবোভ জানিয়েছেন, দোনবাসের উত্তর পশ্চিমের শহরটির ২২টি গ্রাম এখন রাশিয়ার দখলে। গেল দু’ মাসে অঞ্চলটিতে ৪০ শিশুসহ কমপক্ষে ৭০০ মানুষ নিহত হয় বলে জানান তিনি। ওলেহ সিনিউহুবোভ বলেন, শত্রুপক্ষ বুঝে গিয়েছে খারকিভে হেরেছে তারা। পুতিন বোঝেননি এখানে এমন প্রতিরোধ হবে। তাই সাধারণ মানুষের ওপর সন্ত্রাস চালাচ্ছে। ঠিক কত সংখ্যক হতাহত নিশ্চিত বলা সম্ভব নয়। কারণ, ধ্বংসস্তুপের নিচে অনেকেই চাপা পড়ে থাকতে পারে।
ইজিউমের ফ্রন্টলাইনে রুশ বাহিনীর সাথে তীব্র লড়াই চলছে ইউক্রেনের সেনাদের। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহরটির আরও তিনটি গ্রাম দখলে নিয়েছে পুতিন বাহিনী। হামলা বেড়েছে দোনেৎস্কে। দোনবাসের লাইমান, বারভিনকোভসহ অনেক শহরে চলছে ভারি গোলাবর্ষণ। ইউক্রেনীয় এক বৃদ্ধা বলেন, আমার স্বামী শয্যাশায়ী। জানিনা কী করবো! কোথায় যাবো! এখানে কেন বোমা মারছে? কী করেছি আমরা? আমরা তো কিছুই করিনি।
একই দিন আকাশে রাশিয়ার ১৭টি টার্গেটে হামলার দাবি করেছে ইউক্রেন। ধ্বংস করেছে তিনটি এয়ারক্রাফট, ৫টি ক্রুজ মিসাইল ও ৯টি ড্রোন। এ পর্যন্ত ১৭৭টি রুশ বিমান ও ১৫৪টি হেলিকপ্টার ধ্বংসের দাবিও করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
সূত্র: আল-জাজিরা
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.