নিজস্ব প্রতিবেদক : চলমান মেগা প্রকল্পগুলোতে দুর্নীতি হচ্ছে বলে সিপিডি যে অভিযোগ তুলেছে তার কড়া জবাব দিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির কাছে পাল্টা প্রশ্ন রেখেছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। ইমানের সঙ্গে কাজ করার পর ইমান নিয়ে টান দিলে বুকে ব্যথা লাগে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
সিপিডির অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ওনারা (সিপিডি) বললেন, বৃহৎ বৃহৎ প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে। আমাদের কোন প্রকল্প নিজেদের অর্থায়নে হচ্ছে? জাপানি সংস্থা জাইকার অর্থায়নে মাতারবাড়ি, মেট্রোরেল বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কেনাকাটাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও জাইকা সরাসরি সম্পৃক্ত। তাহলে জাইকাও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত? রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সব কাজ করছে রাশিয়া? সেখানকার দুর্নীতিতে কি রাশিয়া জড়িত?’
শনিবার দুপুরে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব। ‘এক্সপোর্ট চ্যালেঞ্জেস অব বাংলাদেশ আফটার গ্রাজুয়েশন ফর্ম এলডিসি স্ট্যাটাস: অপশনস ফর দি প্রাইভেট সেক্টর’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘প্রতি ডোজ করোনার টিকা কেনায় ৬৯ টাকা ঘুষ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ কেরেছে টিআইবি। এ ধরনের অভিযোগের মানে কি? টিআইবিতে বেশি অর্থায়ন করে পরিবেশ দূষণের দায়ে বিভিন্ন দেশে কালো তালিকাভুক্ত অষ্ট্রেলিয়ান খনন কোম্পানি বিএইচপি। একটি কালো তালিকাভুক্ত কোম্পানির অর্থায়নে পরিচালিত টিআইবি আমাদের দুর্নীতিবাজ বলে যাবে, ফাজলামি নাকি? আমরা কি চুরি করে বসে আছি?’
প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব বলেন, ‘ইমানের সঙ্গে কাজ করার পর ইমান ধরে টান দিলে বুকে ব্যথা পাই। দেশকে এগিয়ে নিতে সরকারি-বেসরকারি উভয় পক্ষকেই একে অপরের কাছে স্বচ্ছ হতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী দেশের সকল ব্যবসায়ীদের হৃদয়ে ধারণ করেন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দেশের ব্যবসায়ীদের শক্তি ও সামর্থ্য নিয়ে গর্ব করেন। সহজ বাংলায় বললে আমাদের শক্তি অনেক বেশি। আমাদের ব্যবসায়ীদের শক্তি ও সামর্থ্য অনেক বেশি।’
আহমেদ কায়কাউস বলেন, ‘সরকার প্রণোদনার প্যাকেজ দিয়েছে। আমরা সরাসরি ওয়ার্কার্সদের হাতে দিয়েছি। দেশের কোনো লোক করোনাকালে ছাঁটাই করা হয়নি। দেশে একবারে দুর্নীতি নাই আমি তা বলব না। আদম (আ.) কিন্তু আল্লাহর কথা শোনে নাই। দুর্নীতি হচ্ছে তবে ছোট পরিসরে। তার জন্য আমরা পুরো ব্যবস্থাটাকে দোষারোপ করতে পারি না।’
আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘দেশে দুর্নীতি নেই এ কথা বলা যাবে না। নিম্ন পর্যায়ে কিছু দুর্নীতি হয়। সরকার সেটি সংস্কারের চেষ্টা করছে। তবে ব্যবসায়ীদেরও স্বচ্ছ হতে হবে। সরকার ও বেসরকারি খাত একে অপরের কাছে স্বচ্ছ হলে অনেক ক্ষেত্রে যন্ত্রণামুক্ত হবে। দেশ এগিয়ে যাবে।’
এসময় এলডিসি থেকে উত্তরণের পর যে চ্যালেঞ্জ আসবে তা মোকাবেলায় সরকারের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে বলেও এ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির প্রধান আহমদ কায়কাউস।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের স্বাগত বক্তব্যে শুরু হওয়া সেমিনারে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শরিফা খান বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেমিনারে প্যানেল আলোচক ছিলেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, এমসিসিআইর সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, পিডব্লিউসি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা অংশীদার মামুন রশীদ, এফবিসিসিআইর উপদেষ্টা মঞ্জুর আহমেদ, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মজিবুর রহমান।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.