নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইলে ফোন করলেই বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যায় অতিথি পাখি। নড়াইলের বিল ও জলাশয়গুলোতে হালকা শীতের আমেজে প্রতিবছরের মতো দল বেঁধে আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখিরা।
পানি কমে আসা বিল ও জলাশয়গুলোতে খাবারের সন্ধানে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির সঙ্গে আসছে দেশীয় প্রজাতির পাখিও। আর এই সুযোগে ফাঁদ পেতে নির্বিচারে পাখি নিধন করছে অসাধু শিকারিরা।
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, এসব পাখির একটা বড় অংশ বিষটপ, জাল, বড়শিতে আটকে শিকারের খাঁচায় বন্দি হচ্ছে। সেগুলো আবার দেদার বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন এলাকার হাটে-বাজারে। এমনকি মুঠোফোনে অর্ডার করলেই যথারীতি একটু গোপনে ব্যাগভর্তি করে মোটরসাইকেলে ক্রেতার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে অতিথি পাখি।
জানা যায়, মূলত নভেম্বর মাস থেকে শুরু করে মার্চ-এপ্রিল মাস পর্যন্ত অবস্থান করে এসব পাখি। শীত শেষ হলে আবার ফিরে যায় তারা। এবছরও ব্যতিক্রম ঘটেনি। অন্যান্য বছরের মতো এবারও মাছে বিষটপ, জাল ও বড়শি দেওয়ার পাশাপাশি প্রযুক্তির ফাঁদ পেতে অভিনব কৌশলে পাখি শিকার করছে তারা।
এ বছর শীতের আগেভাগেই নড়াইলের চাঁচুড়ী বিল, পাটেশ্বরী বিল, ইছামতি বিল, কাড়ার বিল, নলামারা বিল, কুমড়ি-তালবাড়িয়া বিল, পাঁচুড়িয়া বিল, গোপালপুর-বগুড়ার বিল, জলাশয় ও হাজার হাজার চিংড়ি ঘের এলাকায় অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠছে। মূলত এসব জলাশয়ে শীত মৌসুমে অল্প পানিতে মাছ শিকারের জন্য অসংখ্য পাখি আসে। বিদেশি পাখিদের সঙ্গে থাকে-বালি হাঁস, কালকোচ, কায়েম, ডুঙ্কর, পানকৌড়ি, পাতাড়ি হাঁস, হাঁস ডিঙ্গি, কাদা খোঁচা, খয়রা, চেগা, কাচিচোরা, মদনটাক, শামুখখোলা ও বকসহ নানা প্রজাতির পাখি।
বিকাল থেকেই বিভিন্ন প্রজাতির এসব পাখি দল বেঁধে বিল এলাকায় গিয়ে খাদ্য সংগ্রহে নেমে পড়ে। আর সেখানে আগে থেকেই ওৎ পেতে থাকে শিকারি চক্র। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যেখানে পাখিদের আনাগোনা বেশি সেসব বিল ও জলাশয়ের বৃহৎ এলাকাজুড়ে জালের ফাঁদ পাতে শিকারি চক্র। এরপর অতিথি পাখিদের ডাউনলোড করা ডাক পোর্টেবল সাউন্ড-বক্সে ঢুকিয়ে বাজানো শুরু করে। আর ওই ডাক শুনে সতীর্থদের নিরাপদ অবস্থান মনে করে শিকারির পাতা ফাঁদে নামতে শুরু করে অতিথি পাখিরা। আর এভাবে অভিনব কায়দার ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি আটকা পড়ছে শিকারির ফাঁদে।
কয়েকজন পাখি বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ী বাজার ও রঘুনাথপুর বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে অতিথি পাখি। পাশাপাশি অগ্রিম অর্ডারের মাধ্যমে যথারীতি এসব পাখি বিক্রেতাদের বাড়িতে বাড়িতে পোঁছে দেয়া হচ্ছে। প্রতি জোড়া ডুঙ্কর ও কাঁদা খোচা পাখি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কালকোচ ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, কাইয়ুম পাখি ৭০০ থেকে ৮০০ ও বালিহাঁস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া আকার ভেদে পাখি সর্বনিম্ন ৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.