মাগুরা প্রতিনিধিঃ দৈনিক শিক্ষা সহ বিভিন্ন পত্রিকায় ২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে মনোহরপুর পুকুরিয়া দাখিল মাদরাসার ৪০ জন ওশেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ২০ জন ছাত্রছাত্রী হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) বা জরায়ু মুখ ক্যানসারের টিকা নেওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর ও ভবিষ্যতে অনান্য সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে এমন ধারণায় মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলা অনেক ছাত্রী ও অভিভাবকরা টিকা নিতে অনীহা প্রকাশ করছেন বলে শিক্ষকরা জানান।
উল্লেখ সারা দেশের ন্যায় ইতিমধ্যে টিকাদান শুরু হয়েছে। তবে কিছু এলাকায় কিছু অভিভাবক এ ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে শিক্ষকদের সাথে কথা বললে তারা বলেন আমরা টিকার ভালো দিক নিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছি। আশা করি আরও অনেকে টিকা গ্রহণ করবে। এ ব্যাপারে সকল শ্রেণির মানুষের সহযোগিতা কাম্য। দৈনিক শিক্ষার সুত্র মতে সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে কালিগন্জের মনোহরপুর পুকুরিয়া দাখিল মাদরাসার মেয়েদের এ টিকার দেয়া কার্যক্রম শুরু হয়। দুই ঘণ্টায় শতাধিক মেয়েকে টিকা দেয়া হয়। দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ একজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে প্রাথমিকভাবে মাদরাসায় সেবা দেওয়ার পর সুস্থ হন। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ করেই বিভিন্ন শ্রেণির মেয়েরা অসুস্থ হতে শুরু করেন। একে একে প্রায় ৪০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন।
টিকাদান টিমের সহকারীরা হাসপাতালে খবর দিলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাদরাসায় এসে তাদের হাসপাতালে নেন।
অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন সুবর্ণা (১৪), মিম খাতুন (১১), রিমি খাতুন (১২), যুথী খাতুন (১৫, মুন্নি খাতুন (১৫), তারিন সুলতানা (১৫), ফারিয়া খাতুন (১৪), লামিয়া (১২), শিমু খাতুন (১৪), তুলি (১৪), সোনালী (১৪), সীমা (১৪), রুমি (১৪) ও জিনিয়া (১৩)। বাকিদের হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
মাদরাসার সুপার মাওলানা ইউনুছ আলী আলী জানান, সকালে হাসপাতাল থেকে চারজনের একটি টিম মাদরাসার মেয়েদের ভ্যাক্সিন দেওয়ার কাজ শুরু করেন। ভ্যাক্সিন দেওয়ার প্রায় শেষ পর্যায়ে ষষ্ঠ শ্রেণির এক মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিছুক্ষণ পর একে একে প্রায় ৪০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদের মধ্যে ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, এটাকে ম্যাস হিস্টেরিয়া বা দেখাদেখি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া বলে। আমি সেখানে উপস্থিত হয়ে দেখি যে কক্ষে টিকা দেওয়া হচ্ছে সেটা বদ্ধ এবং একটি ফ্যান নষ্ট। পরে সবাইকে আলাদা আলাদা কক্ষে বসাই। তারপরও যারা অসুস্থ হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই সকালে না খাওয়া ছিলেন। পরে আমি না খাওয়াদের টিকা দিতে নিষেধ করি।তিনি আরো বলেন, অসুস্থ মেয়েদের আমার গাড়ি ও হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এটা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। সবাই এখন ভালো আছেন।
অপরদিকে রোববার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে ঝিনাইগাতী উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের হাসলিবাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্কুল অভিভাবক ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রোববার সকাল ১১টার দিকে ছাত্রীদের এইচপিভি টিকা দেয়া হয়।
স্কুল ছুটির পর ওই ছাত্রীরা বাড়িতে গেলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তাদেরকে ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। ২০ ছাত্রীর মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেরপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এ খবর মূহুর্তের মধ্যে ঝিনাইগাতীসহ আশপাশের উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে (এইচপিভি) টিকা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.