আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা। দেশটির দ্রব্য পণ্যের দাম ইতিমধ্যেই লাগাম ছাড়িয়েছে। ভয়াবহ মন্দা থেকে বাঁচতে দেশ ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে পাড়ি জমাচ্ছে মানুষজন। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে পৌঁছানোয় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ আমদানিতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটির সরকার।
দেশটির ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কায় বর্তমানে এক কেজি চাল কিনতে গুনতে হচ্ছে ১১০৬ শ্রীলঙ্কান রুপি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩৩০ টাকা। চিনির কেজির দামও একই। ৪০০ গ্রামের এক প্যাকেট গুঁড়া দুধের দাম ৩ হাজার শ্রীলঙ্কান রুপি বা প্রায় ৯০০ টাকা। দুধ ও চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় এক কাপ চা ৩৮০ রুপি বা প্রায় ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে রেস্তোরাঁয়।
ছাপা কাগজের সংকটের কারণে শ্রীলঙ্কার স্কুলে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন স্কুলে ২১ মার্চ টার্ম পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে এর দুদিন আগে কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানায়। শ্রীলঙ্কায় কাগজ মূলত আমদানি করা হয়। আমদানি করা হয় কালিও। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, পরীক্ষা নিতে কাগজের জোগান দেয়ার মতো ক্ষমতা নেই শ্রীলঙ্কার শিক্ষা দপ্তরের। এমনকি কাগজের আমদানি করতেও পারছে না তারা।
করোনা মহামারি শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিকে ধসিয়ে দিয়েছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসেকে দুষছেন অনেকে। কারণ প্রতিবেশী ভারত এবং বাংলাদেশ এই পরিস্থিতি দারুণ দক্ষতায় মোকাবিলা করেছে। মহামারি শুরুর পর শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির অন্যতম উৎস রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমে যায়। আরেক গুরুত্বপূর্ণ খাত পর্যটনশিল্প ভেঙে পড়ে। এই দুই খাত থেকে বিপুল ডলার আয় করে সরকার।
বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির কারণে ২০২০ সালের মার্চে আমদানিতে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয় রাজাপাকসে সরকার। এরপরও বিপদ এড়ানো যায়নি। গত মাসে খাদ্যের দাম পাঁচ ধাপে ২৫ শতাংশ বেড়েছে; সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতি ১৭.৫ শতাংশ। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার বর্তমান সরকারের সম্পর্ক উষ্ণ। উদ্ভুত পরিস্থিতে শ্রীলঙ্কা সফরে যাচ্ছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেখানে সংকট নিরসনে আলোচনার পাশাপাশি দেশ দুটির মধ্যে কিছু চুক্তি হতে পারে। শ্রীলঙ্কা চলতি মাসের শুরুতে ঘোষণা দেয়, তারা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বেলআউট চাইবে। এ ব্যাপারে ওয়াশিংটনে আলোচনা হতে পারে এপ্রিলে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.