খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা বন বিহারে অনুষ্ঠিত হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব—২৬তম দানোত্তম কঠিন চীবর দান উচীবরৎসব।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে পঞ্চশীল গ্রহণ ও বিশ্বশান্তি কামনায় প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর শুরু হয় সংঘ দান, অষ্ট পরিষ্কার দান, কল্পতরু দানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা। নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী ও শিশু-বৃদ্ধ সকল বয়সের ভক্তবৃন্দ অংশ নেন এই মহতী উৎসবে।
উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিল কঠিন চীবর দান—যেখানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা, সুতা থেকে কাপড়, আর কাপড় থেকে চীবর তৈরি করে ভিক্ষু সংঘের নিকট দান করেন। এই অনন্য দানের মধ্য দিয়েই প্রকাশ পায় তাদের ধর্মীয় নিষ্ঠা ও সমর্পণের চেতনা।

অনুষ্ঠানে ধর্মদেশনা দেন পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্রীমৎ নন্দশ্রী স্থবির। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা, দীঘিনালা বন বিহারের উপাধ্যক্ষ শ্রীমৎ শুভ বর্ধন মহাস্থবির, ধুতাঙ্গটিলা বন বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ দেবধাম্মা মহাস্থবিরসহ বিভিন্ন বিহারের অধ্যক্ষবৃন্দ ও বিশিষ্ট ভক্তরা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা বলেন,“জেলা পরিষদের কারো নাম ভাঙিয়ে কেউ ফায়দা লুটতে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে জানাবেন। আগের জেলা পরিষদ আর বর্তমান পরিষদের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। আমরা দুর্নীতি ও অনিয়ম থেকে জেলা পরিষদকে সম্পূর্ণ মুক্ত রাখতে চাই। যেকোনো নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে স্বচ্ছ ও মেধাভিত্তিক—দুর্নীতির বিন্দুমাত্র সুযোগও থাকবে না।”
তিনি আরও বলেন, “কাজ করতে গেলে প্রতিবন্ধকতা আসবেই, কিন্তু আমরা চাই পরিষ্কার, কলঙ্কমুক্ত প্রশাসন। কেউ যেন ভবিষ্যতে বলতে না পারে—জেলা পরিষদ দুর্নীতিতে জর্জরিত।”
উৎসব শেষে প্রার্থনার মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি ও মানবকল্যাণ কামনা করা হয়। ধর্মীয় অনুশাসনের পাশাপাশি আনন্দ-উৎসব ও ভক্তদের মিলনমেলায় মুখর হয়ে ওঠে দীঘিনালা বন বিহার প্রাঙ্গণ।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ , ই-মেইল: ই-মেইল নং : gsongbad440@gmail.com , মোবাইল-০১৭১১-৩৫৯৬৩১
Copyright © 2025 gramersongbad.com. All rights reserved.