যশোর প্রতিনিধি : যশোরের নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাসুদ আলম বিপিএম (বার) পিপিএম। প্রথম কর্ম দিবস শুরু করেন তিনি ছদ্মবেশে। তার অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মরতদের আচরণবিধি ও কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত হতে মঙ্গলবার ফজরের নামাজের পর থেকেই মোটরসাইকেল চালিয়ে বিভিন্ন দপ্তর পরিদর্শন করেন।
এ সময় তিনি কোন কোন দপ্তরে কর্মকর্তাদের কার্যক্রমের সন্তুষ্ট হয়েছেন। আবার কোন দপ্তরে কর্মকর্তা না পেয়ে ও সেখানকার কার্যক্রমে অসন্তুষ্ট হয়েছে। তবে যাই হোক যশোরের পুলিশ সুপারের এমন কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জেলার সাধারণ মানুষ।
বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যমতে জানা গেছে, মঙ্গলবার ছিল নতূন জেলা পুলিশ সুপারের প্রথম কার্যদিবস। এই দিন তিনি ফজরের নামাজের পর সিভিল ড্রেসে বাইসাইকেল যোগে পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর পরিদর্শন করেন। প্রথমে নবাগত পুলিশ সুপার যান যশোর জেলা প্রশাসকের বাংলাতে। সেখানে কর্মরত কনস্টেবল গার্ড পুলিশ সুপারকে চিনতে না পারাই গেটের দাঁড় করিয়ে দেন। এ সময় কনস্টেবল পরিচয় ও কি কারনে দেখা করবেন জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, ডিসি সাহেবের সঙ্গে দেখা করবেন" কিন্তু গার্ড তাকে ডিসি সাহেবের পারমিশন ছাড়া ঢুকতে দেননি।
পরে তিনি সেখান থেকে চলে আসেন জেল রোড ট্রাফিক অফিসে। এখানে তিনি কাউকে না পেয়ে চলে যান। সরাসরি চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়িতে, সেখানে পুলিশ ফাঁড়ির গেট দীর্ঘক্ষন দাঁড়িয়ে বাড়ির প্রধান গেট ঝাকাঝাকি করেন।কিন্তু কেউ না থাকায় গেট খুলে খুলতে কেউ আসেননি। এক কথায় সেখানে সিকিউরিটি গার্ড ছিলেন না। সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। এরপর তিনি জান জেলা কোতয়ালি মডেল থানায়।সেখানে তিনি পরিচয় গোপন রেখে কোতোয়ালি মডেল থানায় ডিউটি অফিস রুমে ঢুকেন।মোবাইল হারিয়ে গেছে জানিয়ে ডিউটি অফিসারের কাছে জিডি করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু ডিউটি অফিসার এ সময় নবাগত পুলিশ সুপারকে জানান এত সকালে থানায় জিডি নেওয়া হয় না বলে সাব জানিয়ে দেয়া হয়। এক পর্যায়ে অনেক অনুরোধ করলে ওই ডিউটি অফিসার আমার সামনে ওপর একজনকে দেখিয়ে দেন।তার কাছে পুলিশ সুপার জিডি করতে গেলে। ওই পুলিশ কর্মকর্তা জিডি বাবদ ৫শ টাকা দাবি করেন। তখন ছদ্দবেশী পুলিশ সুপার বলেন,' আমার কাছে ৫শ টাকা নাই। আছে মাত্র ২শ টাকা। তখন কর্মরত পুলিশ জিডি লিখবেন না মর্মে জানান। একপর্যায়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা ২শ টাকা পুলিশ সুপারকে ফেরত দিয়ে বলেন যান ৫শ টাকা নিয়ে আসেন তারপর জিডি লিখেন এন্টি করব। "কি আর করা জিডি করতে না পেরে ছদ্দবেশী পুলিশ সুপার থানা থেকে বেরিয়ে
মোটরসাইকেল চলে যান পুলিশ লাইনে পুলিশ লাইনে। গেটে কর্মরত কনস্টেবল তাকে দাঁড় করান এবং ব্রাকে কার সাথে দেখা করবেন তা জানতে চান। তখন ছদ্দবেশী পুলিশ সুপার ওই কনস্টেবলকে বলেন, "ব্যারাকে কামাল নামে এক বন্ধু আছে। তার সাথে দেখা করতে চাই। তখন কনস্টেবল গার্ড তাকে ভিতরে যাওয়ার পারমিশন দেয়"। অনুমতি পেয়ে কনস্টেবলদের ব্যারাকে তিনতলায় যান।সেখানে দেখতে পান ডাইনিং একেউ খিচুড়ি কেউ রুটি খাচ্ছেন। এক পর্যায়ে তিনিও সেখানে একটু খিচুড়ি খান এবং অনেকের সাথে আলাপ করে। এভাবে তিনি পুলিশ প্রশাসনের সকল দপ্তর পরিদর্শন করেন। ইউনিয়ন পর্যায়ের পুলিশ ফাঁড়ি পর্যন্ত যেতে বাদ দেননি তিনি। এভাবেই ছদ্মবেশে নবাগত পুলিশ সুপার মোঃ মাসুদ আলম বিপিএম (বার) পিপিএম তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানের ও কর্মকর্তাদের সার্বিক অবস্থা জানার চেষ্টা করেন।
এ ব্যাপারে নবাগত পুলিশ সুপার মোঃ মাসুদ আলম বিপিএম (বার) পিপিএম জানান, এই জেলায় তিনি নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তার অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জেলা সাধারণ মানুষের সাথে কোন প্রকৃতির আচরণ ও সহযোগিতা প্রদান করেন তার জানার প্রয়াস নিয়েই ছদ্মবেশে সকল প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। তিনি জেলার মানুষকে সরকারি সকল প্রকার আইনি সুবিধা জেলা পুলিশের মাধ্যমে প্রদান করতে বাধ্য থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.