আলহাজ্ব হাফেজ মোঃ গোলাম রহমান : বিদায় জিলহজ। আজ সোমবার পয়লা মহরম। শুরু হলো হিজরি নববর্ষ, ১৪৪৬। বাংলাদেশের আকাশে গতকাল সন্ধ্যায় মহরম মাসের চাঁদ দেখা গেছে।

আগামী ১৭ জুলাই সারা দেশে পবিত্র আশুরা উদ্যাপিত হবে। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজরতের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই হিজরি সনের শুভ সূচনা হয়েছিল। তাই মুসলমান ও আরব বিশ্বে হিজরি নববর্ষ অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে দাপ্তরিক কাজকর্ম হয় আরবি ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে। যেমন খ্রিষ্টানদের ১৩তম পোপ গ্রেগোরির নামানুসারে ১ জানুয়ারি ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে দিনলিপি।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ত্যাগ ও কুরবানির ঐতিহাসিক স্মৃতি স্মারক হিজরি (আরবি) সন।

ইসলামের প্রচার, প্রসার এবং বিজয় কেতন উড্ডীনে হিজরি সনের গুরুত্ব ও তাত্পর্য অত্যধিক। ইসলামের শত্রুরা বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও ইসলামকে পৃথিবী থেকে চিরতরে সরিয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল। আল্লাহর নির্দেশে বিশ্বনবী দীন প্রচারে প্রিয় মাতৃভূমি মক্কা ত্যাগ করে ইয়াসরিবে (মাদিনা মুনাওয়ারায়) হিজরত করেন। যাকে কেন্দ্র করেই আজকের হিজরি সন।

হিজরি বছরের প্রথম মাস মহরম ও শেষ মাস জিলহজ অনেক ফজিলত ও মর্যাদার মাস। শরিয়তের দৃষ্টিতে মহরম মাসটি যেমন অনেক তাৎপর্যপূর্ণ, তেমনি এই মাসে সংঘটিত ঐতিহাসিক ঘটনার বিবরণও অনেক দীর্ঘ। ইতিহাসের এক জ্বলন্ত সাক্ষী এই মহরম মাস। ইসলামের অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সূত্রপাত হয় এ মাসে।

অনেকেই আশুরার ঐতিহ্য বলতে রসুলুল্লাহ (স.)-এর প্রিয়তম দৌহিত্র হজরত হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাত ও নবি পরিবারের কয়েক জন সম্মানিত সদস্যের রক্তে রঞ্জিত কারবালার ইতিহাসকেই বুঝে থাকে। বাস্তবতা হলো—হজরত হুসাইন (রা.)-এর মর্মান্তিক শাহাদতের ঘটনার অনেক আগে থেকেই আশুরা অনেক তাৎপর্যপূর্ণ ও রহস্যঘেরা দিন। কারণ কারবালার যুদ্ধ সংঘটিত হয় ৬১ হিজরির ১০ মহরম। তারও বহু আগে ১০ মহররম হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ও তার সাথিদের ফেরাউন ও তার সৈন্যদের থেকে মুক্তি পাওয়ার ঘটনা; যেখানে দরিয়ায় রাস্তা বানিয়ে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে নিরাপদে পৌঁছে দিয়েছেন। এই রাস্তা দিয়ে অতিক্রম করার সময় ফেরাউন ও তার সৈন্যদেরকে দরিয়ায় ডুবিয়ে ধ্বংস করার ঘটনা ঘটে ১০ মহরম। হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ফেরাউনের হাত থেকে আশুরার দিন মুক্তি পান।