ডা: ওবায়দুল কাদির : শরীর সুস্থ রাখতে সব চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো পুষ্টিকর খাবার। পরিমিত পুষ্টিকর খাবারই সুস্থ রাখে শরীর। বিশেষ করে দিনের শুরুতে সঠিক খাবার গ্রহণ না করলে নানা বিপত্তি ঘটতে পারে। কারণ রাত থেকে ভোর, এই লম্বা বিরতির পর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার শরীরকে দিনভর সতেজ রাখে।
অনেককেই দেখা যায়, সকালে ঘুম থেকে উঠে চা বিস্কুট দিয়ে দিন শুরু করেন। এরপর বেলা একটু বাড়লে হাতের কাছে যা পান তাই খান। এতে দেখা দিতে পারে অম্বল-গ্যাস, হজম না হওয়ার মতো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। এ জন্য সকালের সঠিক খাবার সারাদিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটাই শরীর সুস্থ রাখার মূল চাবিকাঠি।
তাহলে জেনে নেয়া যাক সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন কি খেয়ে দিন শুরু করবেন-
ভেজানো কাঠ বাদাম: প্রতিদিন সকালে পরিমাণ মতো খালি পেটে ভেজানো কাঠ বাদাম খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। বাদামে ট্যানিন রয়েছে, যা আপনার দেহে পুষ্টির শোষণকে বাধা দেয়। এছাড়া বাদাম প্রোটিন, ভিটামিন ই, ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, ওমেগা ৬, ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। বাদাম আপনাকে পুষ্টির সঠিক ডোজ দেবে, যা আপনার শরীর, মন, স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করবে।
চিনা বাদাম: সকালে নাস্তার আগে চিনা বাদাম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। এটি অন্ত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। হজমের উন্নতির পাশাপাশি আপনার পেটের পিএইচ স্তরকেও স্বাভাবিক করে তোলে। আপনি আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে বাদাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। তবে পরিমাণ মতো খেতে হবে। অতিরিক্ত খেলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
পেঁপে: খালি পেটে পেঁপে খাওয়া খুব জরুরি, অন্ত্রগতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এর বিকল্প নেই। খালি পেটে পেঁপে একটি সুপারফুড। পেঁপেতে আছে ভিটামিন সি, এ, কে, প্রোটিন ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম। রয়েছে অনেক বেশি ফাইবারও। তবে ক্যালোরির পরিমাণ অল্প রয়েছে। স্বাদে মিষ্টি, যে কারণে ডায়াবেটিসের রোগীদের প্রতিদিন পাকা পেঁপে খেতে বলা হয়। যাদের হজমের সমস্যা হয় তাদেরকে প্রতিদিন পাকা পেঁপে খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
তরমুজ: সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে তরমুজ খেতে পারেন। তরমুজ ৯০% পানি নিয়ে গঠিত, শরীরকে হাইড্রেশনের একটি বিশাল অংশ সরবরাহ করে। শরীরে পানির অভাব পূরণে ফলের মধ্যে তরমুজই হলো আদর্শ। তরমুজ ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ এবং এতে উচ্চ পরিমাণে যৌগিক লাইকোপিন রয়েছে, যা হার্ট এবং চোখের জন্য উপকারী। তরমুজে আছে পর্যাপ্ত ভিটামিন এ, সি, পটাশিয়াম ও আঁশ। মৌসুমি এই ফলটির রয়েছে নানা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এটি কেবল মিষ্টি খাওয়ার আকাঙ্খা হ্রাস করে। এতে অতিরিক্ত ক্যালোরি নেই।
মধু: সকালে হালকা গরম পানিতে মধু মিশিয়ে পান করলে পাকস্থলির কার্যক্ষমতা বাড়ে। ফলে গ্যাস, বদ-হজমের সুযোগ থাকে না। মধুতে প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান থাকে। ফুলের পরাগের মধুতে থাকে ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ, ৩৪ থেকে ৪৩ শতাংশ ফ্রুক্টোজ, ০.৫ থেকে ৩.০ শতাংশ সুক্রোজ এবং ৫ থেকে ১২ শতাংশ মন্টোজ। আরও থাকে ২২ শতাংশ অ্যামাইনো অ্যাসিড, ২৮ শতাংশ খনিজ লবণ এবং ১১ শতাংশ এনকাইম। এতে চর্বি ও প্রোটিন নেই। মধুতে থাকা একাধিক পুষ্টিকর উপাদান অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পোরিজ: খালি পেটে পোরিজ শরীর থেকে টনিক্স বের করে দেয় এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যও সুস্থ রাখে। আপনি যদি কম-ক্যালোরি এবং উচ্চ পুষ্টিকর নাস্তা খেতে চান তবে পোরিজ একটি দুর্দান্ত খাবার। বিশেষত ওটমিল থেকে তৈরি পোরিজ ব্রেকফাস্টের জন্য সুপারফুড। এটি স্বাদে আশ্চর্যজনক, শরীরের জন্যও স্বাস্থ্যকর। আপনি অতিরিক্ত খাবারও এড়াতে পারেন, ওটমিল আপনার দীর্ঘ সময় ক্ষুধা নিবারণ করে শক্তি ধরে রাখে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.