এস এম মহিদার রহমান, সাতক্ষীরা ঃ বিদ্যুতের ভয়াবহ লোড শেডিংয়ে নাকাল হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরা বাসী।
সকাল হতে না হতেই সূর্যের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সময় গড়িয়ে দুপুর আসতে না আসতেই সেই তাপদাহ রীতিমত অসহনীয় হয়ে উঠছে। তার উপর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে সাতক্ষীরাবাসীর। গত তিনদিন যাবত রাতে ঘুমাতে পারছে না সাতক্ষীরার মানুষ। একই সাথে বিপাকে পড়েছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। প্রচন্ড গরমে ঠিকমত বিদ্যুৎ না থাকায় পড়াশোনায় মন বসাতে পারছে না তারা। ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদনও। তবে, সাতক্ষীরার বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বলা হচ্ছে, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবারাহ না পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।
শহরের কলেজ রোড এলাকার ভ্যান চালক সিদ্দিকুর রহমান জানান, গরমে ঠিকমত ভ্যান চালাতে পারছিনা তার উপর বিদ্যাতের এই লোড শেডিং আর সহ্য করা যাচ্ছেনা। গরমের মধ্যে শরবত খেয়ে তৃষ্ণা নিবারনের চেষ্টা করছি।
শহরের রাজার বাগানের আব্দুল কাদের জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১০টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত আট বার বিদ্যুৎ গেছে। প্রতিবারই ৩০ মিনিট থেকে ৪৫ মিনিট পরে বিদ্যুৎ এসেছে। গরমে সারারাত কেউ ঘুমাতে পারিনি। বিদ্যুৎ না থাকায় গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
শহরের পলাশপোল এলাকার বাসিন্দা এড. নুরুল আমিন জানান, তীব্র তাপদাহের মধ্যে ঘন্টায় ঘন্টায় লোড শেডিং এ নাকাল হয়ে পড়ছে সাধারন মানুষ। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্করা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তিনি আরো জানান, আগামী ৩০ জুন থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। আর এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ভয়াবহ লোডশেডিং। যার ফলে শিক্ষার্থীরা ঠিকমত পড়াশুনা করতে করতে পারছেনা। এতে তাদের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে।
অন্যদিকে, লোডশেডিংয়ের কারণে সাতক্ষীরা বিসিক শিল্পনগরীতে উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সাতক্ষীরা বিসিক শিল্পনগরীর উপ-ব্যবস্থাপক গৌরব দাশ বলেন, বিসিকে উৎপাদনশীল ৪২টি কারখানা রয়েছে। গত তিন দিন যাবত ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে এসব শিল্প কারখানাগুলোতে মারাত্মকভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তিনি দ্রুত বিদ্যুৎ স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।
সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুত সমিতির এজিএম মঞ্জরুল আকতার জানান, জেলায় তাদের ৬ লাখ ২৪ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১১০ মেগাওয়াট। সেখানে তারা পাচ্ছেন মাত্র ৬৮ মেগওয়াট। ঘাটতি থাকছে ৪২ মেগাওয়াট। ফলে গ্রাহকের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
সাতক্ষীরা ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুনুর রহমান জানান, তার অধীনে সাতক্ষীরাতে ৫৫ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুত চাহিদা রয়েছে ১৯ মেগাওয়াট। সেখানে তিনি পাচ্ছেন মাত্র ১৫ মেগওয়াট। এতে করে ঘাটটি রয়েছে তার ৪ মেগাওয়াট। তিনি আরো জানান, সাতক্ষীরা শহরের ১১টি ফিডার রয়েছে। যা থেকে পর্যায়ক্রমে লোডশেডিং ওঠানামা করা হয়। তবে কবে নাগাত বিদ্যুত স্বাভাবিক হবে তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.