ফিচার ও স্বাস্থ্য ডেস্ক : গ্রীষ্মে ফলের বাজারে গেলে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু কী নেই! এসব ফল রসিয়ে খেতে বাঙালির কোনো জুড়ি নেই। তাই একবাক্যে বাঙালিকে ‘ফল প্রেমী’ হিসাবে দাগিয়ে দেওয়াই যায়।

তবে ‘ফল প্রেমী’ বাঙালি কি এই খবর রাখে যে, ফলের পাশাপাশি কিছু ফলের বীজও সমানভাবে উপকারী? তাদের মধ্যে অন্যতম জামের বীজ। এর রয়েছে একাধিক পুষ্টিগুণ। এতে এমন কিছু উপাদান উপস্থিত রয়েছে যা বিভিন্ন ছোট-বড় রোগ নিয়ন্ত্রণ করে।

তাই এখন থেকে আর জাম খেয়ে বীজ ফেলে দেওয়া ভুল করবেন না। বরং এর একাধিক উপকার সম্পর্কে জেনে এই বীজ খাওয়া চালু করতেই পারেন। আশা করছি ফল পাবেন হাতেনাতে। চলুন তবে জেনে আসি কী কী রোগের দাওয়াই জামের বীজ।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সিদ্ধহস্ত​

ডায়াবেটিসের মতো অসুখকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে নিয়মিত জামের বীজ খেতেই পারেন। এক্ষেত্রে প্রথমে এই ফলের বীজ গুঁড়া করে নিন। তারপর প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস পানিতে ছোট এক চামচ জামের বীজের গুঁড়া মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর সেই পানি চুমুক দেয়ার পালা।

এই নিয়ম মেনে কয়েকদিন জামের বীজ ভেজানো পানীয় খেতে পারলেই দেখবেন সুগার লেভেল কমেছে। আসলে এই পানীয় খেলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বেড়ে যায়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটাই নিম্নমুখী হয়। এমনকি সুস্থ থাকে শরীরের অন্যান্য অঙ্গও।

ব্লাডপ্রেশার থাকে সুরক্ষিত গণ্ডিতে​

হাই ব্লাডপ্রেশারকে বলা হয় নীরব ঘাতক। এই অসুখকে ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে কিডনি, হার্ট, চোখসহ দেহের একাধিক অঙ্গের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই যেভাবেই হোক হাই ব্লাড প্রেশার কমাতে হবে।

এই কাজটিতে আপনার বন্ধু হতে পারে জামের বীজ। এই বীজের গুঁড়া মিশ্রিত পানীয় নিয়মিত খেলে উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এমনকি সুরক্ষিত থাকে হৃৎপিণ্ড। হার্ট অ্যাটাক এবং হার্ট ফেলিওরের মতো সমস্যা থেকে নিরাপদ দূরত্বেও থাকা যায়।

এই বীজের গুণেই কমে ওজন​

ওজন বেশি থাকাটা কোনো কাজের কথা নয়। এক্ষেত্রে ওবেসিটির কারণে ডায়াবেটিস, হাই প্রেশার, কোলেস্টেরলসহ একাধিক জটিল অসুখ পিছু নিতে পারে। তাই সাবধান হয়ে ওজন কমাতে হবে। এক্ষেত্রে নিয়মিত জামের বীজ খেলেই মেদ ঝরে যায়। তাই ওজন বেশি থাকলে জামের বীজের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে নেয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

পেটের জন্য উপকারী​

বাঙালি আর পেটের সমস্যা যেন সমার্থক হয়ে উঠেছে। বদহজম, গ্যাস ও অ্যাসিডিটির মতো জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে একের পর এক অ্যান্টাসিড গিলে ফেলতে আমাদের কোনো জুড়ি নেই।

তবে এই ধরনের ওষুধ নিয়মিত খেলে কিডনি, লিভারে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ঘরোয়া টোটকার সাহায্যেই এই সমস্যার সমাধান খুঁজে নেয়া দরকার। এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে জামের বীজ। এই বীজ নিয়মিত খেলে পেটের অসুখ থেকে সহজে নিস্তার পাওয়া যায়।

ইমিউনিটি চাঙ্গা থাকে​

রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ঠিকমতো কাজ করলে ভয়ংকর সংক্রামক অসুখ থেকে মুক্তি মেলা সম্ভব। এক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ফাঙ্গাসের মতো জীবাণু দেহে দাঁত ফোঁটাতে পারে না।

তাই যেভাবেই হোক ইমিউনিটি বাড়াতেই হবে। আর আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের কথায়, নিয়মিত জামের বীজ খেলেই ইমিউনিটি বাড়ানো সম্ভব। তাই প্রতিদিন সকালে জামের বীজের গুঁড়া মেশানো পানিপান করতে ভুলবেন না যেন!