চিন্ময় ঘোষ, কেশবপুর থেকে ॥ কেশবপুর থানা পুলিশের ওসি জহির হাসান, উপজেলা পরিষদের সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান মফিজ ও মাছের ঘের ব্যবসায়ী সেলিমুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে বুধবার যশোরে আদালতে মামলা হয়েছে।
জানা গেছে, লিজ নেওয়া জমি ছেড়ে দিতে চাপ সৃষ্টি, চাঁদা দাবি ও গুলি করে হত্যার হুমকির অভিযোগে মামলাটি করেছেন জাহাঙ্গীর আলম নামে একজন মৎস্যচাষি। তিনি কেশবপুর উপজেলার মধ্যকুল গ্রামের নুর মোহাম্মদ সরদারের ছেলে। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সালমান আহমেদ শুভ অভিযোগটি ইনসপেক্টর পদ পর্যাদার কোনো কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ সুপারকে আদেশ দিয়েছেন।
মৎস্যচাষি জাহাঙ্গীর আলম মামলায় উল্লেখ করেছেন, তিনি মূলগ্রাম, আবাসপোল ও মধ্যকুল মৌজার সাড়ে ৪শ বিঘা জমি সংশ্লিষ্ট মালিকদের কাছ থেকে গত ২১ জানুয়ারি ১ কোটি ৮০ লাখ টাকায় লিজ নিয়ে ঘের তৈরি এবং প্রয়োজনীয় পানি ও খাদ্য সরবরাহ করে মৎস্য চাষ করে আসছেন। তাদের সাথে তার ৫ বছরের চুক্তি হয়েছে। এরই মধ্যে মূলগ্রাম, আবাসপোল, মধ্যকুল ও হাসাডাঙ্গা মৌজার প্রায় ১শ কৃষক ঘের করার জন্য আসামি মফিজুর রহমান মফিজের কাছে লিজ দিয়েছেন। মফিজুর রহমান মফিজের লিজ নেওয়া জমি জাহাঙ্গীর আলমের ঘের সংলগ্ন। এ কারণে গত ফেব্রুয়ারি হতে জাহাঙ্গীর আলমকে তার লিজ নেওয়া জমি মফিজুর রহমান এবং ঘের ব্যবসায়ী আলতাপোল গ্রামের বাসিন্দা সেলিমুজ্জামান আসাদের কাছে হস্তান্তর করার জন্য হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে। মফিজুর রহমান মফিজ এই হুমকি ধামকি দিচ্ছেন।
এ ঘটনায় মফিজুর রহমান মফিজ ও সেলিমুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীর আলম কয়েক দফায় জিডি ও অভিযোগ করতে গেলে কেশবপুর থানা পুলিশ অজ্ঞাত কারণে গ্রহণ করেননি।
গত ১ মে রাত ৯টার দিকে কেশবপুর থানা পুলিশের কর্মকর্তা তারিকুল ও আবুল হোসেন জোর করে জাহাঙ্গীর আলমকে বাড়ি থেকে তুলে এনে থানায় ওসির রুমে নিয়ে যান। ওসির রুমে আসামি মফিজুর রহমান মফিজ ও সেলিমুজ্জামান আসাদ বসেছিলেন। জাহাঙ্গীর আলমকে দেখামাত্রই ওসি জহির হাসান তাকে বলেন যে, তোর নামে কৃষকেরা যেসব জমি ঘের হিসেবে লিজ দিয়েছে তা তুই মফিজুর ও আসাদকে দিয়ে দে। এ সময় জাহাঙ্গীর আলম প্রতিবাদ করলে ওসি জহির হাসান হুমকি দিয়ে বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে মফিজুর ও আসাদকে জমি দিয়ে দিবি। নতুবা আমাকে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দিবি। অন্যথায় তোকে বিলের মধ্যে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে ক্রসফায়ারের নামে চালিয়ে দেব। এরপর ওসি জহির হাসান ধাক্কা মেরে তাকে রুম থেকে বের করে দেন। ওই ঘটনার পর মফিজুর রহমান মফিজ ও সেলিমুজ্জামান আসাদের দ্বারা ঘের দখলের আশঙ্কায় গত ১৩ মে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন জাহাঙ্গীর আলম।
এদিকে বুধবার যোগাযোগ করা হলে কেশবপুর থানা পুলিশের ওসি জহির হাসান জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.