সনতচক্রবর্ত্তী ফরিদপুর : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে আধ্যাত্মিক সাধক দেওয়ান শাগের শাহে্র (রহ) বার্ষিক উরশ উপলক্ষে থেকে শুরু হয়েছে কাটাগড়ের মেলা।
বাংলা সনের ১২ চৈত্র শাগের শাহে্র মৃত্যু বার্ষিকী ওরসের পাশাপাশি বসে এই মেলা। মেলায় মাজারের ভক্ত নারী পুরুষ ছাড়াও আশপাশের এলাকা থেকে কয়েক লাখ লোকের সমাগম হয়।
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও তার ব্যতীক্রম ঘটেনি।লাখ লাখ লোকের আনাগোনায় মেলা তার পরিপূর্ণতা লাভ করে।
জানা যায় প্রায় চারশ বছরের ঐতিহ্যবাহী কাটাগড়ের দেওয়ান শাগির শাহ্ মেলা আজ ১২ই চৈত্র মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে।
শুরু হওয়া তিনদিনের এই আয়োজন ১৪ চৈত্র শেষ হলেও এর রেশ থাকবে ১৫ দিনব্যাপি।
জানা গেছে, প্রায় ৪০০ বছর আগে ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার কাটাগড় নামক এলাকায় আসেন দেওয়ান শাগের শাহ। তিনি ছিলেন একজন সাধক। আধ্যাত্মিক সাধক শাগের দেওয়ান এর শাহ মাজারে ওরসকে ঘিরে প্রতি বছর বাংলা ১২ চৈত্র থেকে তিনদিন এ মেলার আয়োজন করা হয়। খেলনা, বাতাসা, মুড়ি-মুড়কি, প্রসাধনী, কাঠের আসবাবপত্র, হাড়ি-পাতিল থেকে শুরু করে সব কিছুই মিলবে এ মেলায়।
মেলা উপলক্ষে মাজারের পাশে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ একর এলাকায় কয়েক হাজার দোকান বসে থাকে। বিনোদনের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ব্যবস্থা। এছাড়া ফার্নিচার, মিষ্টির দোকান, খেলনার দোকান রয়েছে। পাওয়া যায় সাঁজ বাতাসা, তালের পাখা, মাটি, লোহা ও বাঁশের তৈরি নানাপদের গৃহস্থালি সামগ্রী, থাকে চুড়ি-ফিতা, শরবত, খেলনা, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী থেকে শুরু করে লাখ টাকা দামের খাট। তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানিক মেলা হলেও মেলা শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকেই চালু হয়ে মেলা চলে প্রায় মাসব্যাপী।
এ সময় কাটাগড় গ্রামসহ আশপাশের কলিমাঝি, সূর্যোগ, সহস্রাইল, ভুলবাড়িয়া, শেখর, ভাটপাড়া, মাইটকুমরা, গঙ্গানন্দপুর, ছত্রকান্দা, বন্ডপাশা, বয়রা, বামনগাতি গ্রামগুলোতে ঈদের আমেজ বিরাজ করে। বিশেষ করে আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত দেওয়ার রীতি চালু হয়েছে আদিকাল থেকেই, অন্য সময় না এলেও এই এলাকার বিবাহিত মেয়েদের মেলা উপলক্ষে বাপের বাড়ি বেড়ানোর রেওয়াজ রয়েছে প্রতিটি পরিবারে। আর এ এলাকার চাকরিজীবী ও পেশাজীবীরা যারা বাইরে থাকে তারা সারাবছর অপেক্ষায় থাকেন মেলা উপলক্ষে গ্রামের বাড়িতে আসার।
বোয়ালমারী উপজেলার ছোলনা গ্রামের সুমন রাফি বলেন, কাটাগড়ের মেলা আমাদের এলাকার ঐতিহ্য। এ মেলাকে ঘিরেই এলাকায় বইছে উৎসবের আমেজ। গ্রামের অনেক মানুষ যারা জীবিকার সন্ধানে এলাকার বাইরে থাকেন ঈদ বা পূজাতে তারা বাড়িতে না এলেও মেলাকে সামনে রেখে বাড়িতে আসেন।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শহিদুল ইসলাম বলেন , এটি পুরাতন মেলা। আমরা পুলিশ প্রশাসন থেকে মেলার শৃংঙ্খলা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সর্বদা তৎপর আছি।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.